প্রাণভিক্ষার আবেদন না করলে কামারুজ্জামানের ফাঁসি

    2
    272

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৮এপ্রিল: জামায়াত নেতা মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যে রায় দিয়েছেন, তাতে সই করেছেন সংশ্লিষ্ট বিচারপতিরা।

    আজ বুধবার বুধবার দুপুরে ৩৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে ক্রমান্বয়ে স্বাক্ষর করেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা ও প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। চার বিচারপতির সইয়ের পর বিকেল ৩টার দিকে রায়ের অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে এসে পৌঁছায়। পৌঁছানোর পর পরই ওই রায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে কারাগারে পাঠানো হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আসামিপক্ষের আইনজীবী ও ঢাকার জেলা প্রশাসকের কাছেও রায়ের অনুলিপি পাঠানো হবে।

    বিধি অনুযায়ী রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর তা কামারুজ্জামানকে পড়ে শোনানোর পাশাপাশি তিনি প্রেসিডেন্টে কাছে ক্ষমা চাইবেন কিনা তা জানতে চাইবেন জেল কর্তৃপক্ষ।

    প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ তাঁর (কামারুজ্জামান) কাছে জানতে চাইবে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কি না। যদি না চান, তবে সাজা কার্যকর করা যাবে। আবেদন করলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাজা কার্যকর করা যাবে না। তবে এ বিষয়ে সময়সীমা নির্দিষ্ট নেই।

    মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রায়ের খসড়া লিখে শেষ করেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে সেটি প্রধান বিচারপতিসহ অন্য তিন বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়। বিচারপতিরা রায়ের খসড়া অনুমোদনের পর বুধবার সকালে সেটি চূড়ান্ত করা হয়।

    সোমবার (৬ এপ্রিল) রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে কামারুজ্জামানের করা আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করে দেন।

    এর আগে, গত ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল মামলার চূড়ান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনটি দাখিল করেন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা। মোট ৭০৫ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বাতিল ও তার খালাস চেয়েছেন আসামিপক্ষ।

    গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (বর্তমান প্রধান বিচারপতি) এস কে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির একই বেঞ্চ কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেন। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ তিন বিচারপতি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেন। অন্য দুই বিচারপতি হচ্ছেন বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম।

    এরপর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আইজিপি (প্রিজন) এর বরাবরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠান। পরে কারাগারে কামারুজ্জামানকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।

    একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কামারুজ্জামানকে ২০১৩ সালের ৯ মে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এরপর গত বছরের ৩ নভেম্বর কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।

    উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে প্রথম ফাঁসি কার্যকর হয়েছিল জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয় কাদের মোল্লার। ওই দিন রাত ১০টা ১ মিনিটে তাঁর ফাঁসি কার্যকর হয়।ইরনা