পেঁপে চাষ করে সাবলম্বি ঝিকরগাছার মহসিন

    0
    261

    “আমি অন্ধ, কিছু দেখতে পারিনা কিন্তু সন্তানের সাফল্য-উন্নতি বলে দিচ্ছে আমি একজন সৌভাগ্যবান পিতা”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১জুন,এম ওসমান: কৃষি কাজে-সবজি চাষে দূরদান্ত বিপ্লব ঘটিয়ে চলেছে ঝিকরগাছা থানার বেড়ারুপানি গ্রামের মহসিন আলম। এক চোখের জন্মান্ধ পিতার দুটি চোখের দৃষ্টি হারায় দশ বছর আগে। তখন মহসিন আলমের বয়স ছিল মাত্র ১৪ বছর। ছাত্র জীবন আর বাল্যকাল থেকে বাবার চাষের জমিতে ঝাল, আলু, পিঁযাজ, পেঁপে, কলা ইত্যাদি সবজি চাষ করতে থাকে নিজে।

    লেখাপড়া করার পাশাপাশি আজ অবদি চাষ কাজে সফলতা দেখিয়ে চলেছে মহসিন। বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষের মধ্যে অন্যতম চাষ হিসাবে পেঁপেকে প্রধান্য দেয় মহসিন। পেছনের সেই দশ বছর ধরে পেঁপে চাষকে ধারাবাহিক ভাবে ধরে রেখেছে সে। চাষ যোগ্য মোট জমির পরিমান থেকে সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে টানা দশ বছর ধরে পেঁপে চাষ করে সফলতার সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছে ক্রমান্নয়ে। দৃষ্টিহীন পিতার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে দশটি বছর। বাবা মায়ের আদরের সন্তান মহসিন অলম এখন যশোর উপশহর কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র।

    মেধা আর শ্রমকে একনিষ্ঠ ভাবে কাজে লাগিয়ে মহসিন আজ সমাজের একজন হয়েছে। দশ বছরে বিভিন্ন সবজি চাষের পাশাপাশি পেঁপে চাষে ব্যাপক সফলতার দৃষ্টান্ত দেখে সরেজমিনে মহসিন আলমের পেঁপে চাষের জমিতে পরিদর্শনকালে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো পেঁপের বাম্পার ফলন। মহসিন আলম তার পেঁপে বাগানে ক্যামেরাবন্দী হওয়ার পরে জানায়, বিগত দশ বছর ধরে ধারাবাহিক পেঁপে চাষ করে আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা আয় করেছে।

    মহসিনের পিতার নাম ছিদ্দিক হোসেন। পেশায় একজন কৃষক। ভাগ্যের নির্মমতায় দু চোখ হারিয়ে আজ একটি লাঠি তার চলার সঙ্গী। মুখে বাক শক্তি থাকলেও না দেখার কারণে সারাদিন তাকে বোবাবনে থাকতে হয়। আজ সন্তানের ব্যাপক সফলতা চোখে না দেখলেও অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অন্ধ, কিছু দেখতে পারিনা কিন্তু সন্তানের সাফল্য-উন্নতি বলে দিচ্ছে আমি একজন সৌভাগ্যবান পিতা।

    সমাজের সব যুবক যেন কৃষি ও চাষ কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে ব্যাপক সফলতা দেখাতে পারে এমনটিই কাম্য। মহসিন আলম দৃষ্টিপাতকে জানায়, পরিশ্রমই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি, তাই উন্নতি চাইলে পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই।