পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে টেন্ডার ছাড়াই কোটি টাকার কাজ

    0
    282

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৭জুলাই,গীতিগমন চন্দ্র রায় পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ চলছে ঠিকাদার ছাড়াই।

    জানা যায় প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে কাজ চলছে তিন তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন। একক ক্ষমতাধর প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হক নিয়মনীতিমালা তোয়াক্কা না করে তিন তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ করছেন। বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে নীতিমালাকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ধামাপাচা দিয়ে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে দেদারসে কাজ চালিয়ে আসছেন তিনি। অনিয়ম ও অভিযোগ ভ্রুক্ষেপ করছেন না, বরং অভিযোগ উঠলেই তিনি বেপোড়োয়া হয়ে উঠেন। এ নিয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন।

    এদিকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির তথ্য প্রকাশ পেলেই খরগ নেমে আসে কলম সৈনিকের উপর। তথ্য ও বিবরণীতে জানা যায় ১১০ বছর পূর্ব থেকে এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে আসছে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষক আর হাতেগোনা কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে ১৯০৭ সালে শুরু হয়েছিল এ বিদ্যালয়ের যাত্রা। বর্তমানে প্রভাতি ও দিবা শাখাসহ সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রমও চালু রয়েছে।

    সূত্র জানায়, তৎকালীন মানদাতা আমলে জমিদার টিএন রায় চৌধুরী (টংক নাথ রায় চৌধুরী) ১৯০৭ সালে শহরের প্রাণকেন্দ্রে বাঁশ-কি বেড়ার ঘর দিয়ে বিদ্যালয় স্থাপন করে প্রতিষ্ঠানটি দায়িত্ব প্রাপ্তদের নিরলস প্রচেষ্টায় ক্রমেই এগুতে থাকে। সময়ের বিবর্তনে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়টির অবকাঠামোর উন্নতি সাধিত হয়। শিক্ষার মান ভাল হওয়ায় সুনাম ও খ্যতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

    কিন্তু বর্তমান প্রধান শিক্ষক মফিজুল হক বিগত ২০১১ইং সালে বিদ্যালয়টিতে যোগদান করার পর থেকে সর্বক্ষেত্রেই ধরাকে স্বরা জ্ঞান মনে করেই চলছেন। এমনকি অনিয়ম দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে তিনি খ্যাতি লাভ করেছেন বলে জানা যায়। তিনি রাজনৈতিক দলের অন্তরালে প্রভাব খাটিয়ে খেয়াল খুশি ভাবে একক ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে আসছে বলে বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ উঠছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায় বিদ্যালয়ের উত্তর পার্শ্বে মানদাতা আমলের তৈরীকৃত কয়েক কক্ষ বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াই ভেঙ্গে ফেলে। ঐ বিল্ডিংয়ের টিন, রড ও ইট কি হলো তার কোন হদিস নেই। অথচ ঐ বিল্ডিংয়ে এসএসসি পরীক্ষার সময় পরীক্ষার ব্যবস্থাপত্রকরণ করা হচ্ছিল। ঐ বিল্ডিং ঠিকাদার ছাড়াই ভেঙ্গে ফেলে, সেখানেই বিদ্যালয়ের নিজস্ব ফান্ড থেকে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে ২৭শ বর্গফুটের তিন তলা ফাউন্ডেশন একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রয়েছে।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভবন নির্মাণ কাজ চলছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। তাছাড়া বিদ্যালয় সংলগ্ন ভুসিয়া দিঘী থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে সেই বালু ভবন নির্মাণের কাজ ও বাইরে সরবরাহ করছেন ঐ প্রধান শিক্ষক। প্রশ্ন উঠেছে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে বিল্ডিং নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যয় করতে পারবেন। কিন্তু ঐ প্রধান শিক্ষক মোঃ মফিজুল হক প্রায় এক কোটি টাকার একাডেমিক ভবন নির্মাণের কাজ করছেন ঠিকাদার নিয়োগ বা টেন্ডার ছাড়াই। তথ্য ও বিবরণীতে উঠে আসে অদৃশ্য শক্তির জোরে প্রধান শিক্ষকের নানা ভয়ঙ্করি কাহিনী।

    উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান স্থানীয় জনৈক ভিআইপি এক নেতার আর্শিবাদ পুষ্টে খেয়াল খুশিভাবে বিদ্যালয়টি চালিয়ে আসছেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ গোলাম রব্বানী ক্ষোভের সহিত জানায় বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক ঐ প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার পর থেকে শিক্ষার মান কমে এসেছে। এমনকি ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট ইচ্ছে মাফিক ভাবে বিভিন্ন ফি আদায় করছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন ভাবে অর্থ লোপাট করে আখের গুছিয়ে চলছেন বলে জানা যায়। সচেতন অভিভাবক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বাদশা জানায় কোন কিছুই তোয়াক্কা করছেন না ঐ প্রধান শিক্ষক।

    এছাড়া অন্যান্য সচেতন অভিভাবক মহল ও ক্ষুদ্ধ। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল হকের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনাকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। পথিমধ্যে দেখা হলে তিনি জানায় উপজেলা শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আমি সভাপতি পদপ্রার্থী তাই ভোটের জন্য মাঠে ঘুরছি, সময় হলে বিদ্যালয়ে পাওয়া যাবে।

    এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকারের নিকট উক্ত বিদ্যালয়ের তিন তলা বিশিষ্ট একাডেমিক ভবন নির্মাণে প্রায় এক কোটি টাকার কাজ হচ্ছে মন্তব্য চাইলে তিনি জানায় মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখবো। বিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান প্রধান উন্নয়নের কাজে ব্যয় করতে পারবেন, কিন্তু প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয় করতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে তিনার জানা নেই। তবে নীতিমালা অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।