পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান

    0
    282

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০১ডিসেম্বর: পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চেয়ারম্যান কে এম সফিউল্লাহসহ বিশিষ্টজনেরা।

    সোমবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অপরাজেয় বাংলা’র পাদদেশে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্টজনেরা এ আহ্বান জানান। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের ১ তারিখের প্রথম প্রহরে ‘ডিসেম্বর: বিজয়গাঁথা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম। অনুষ্ঠানে কে এম সফিউল্লাহ বলেন, “দেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুতে পাকিস্তান যে ধরনের উদ্বেগ, বিবৃতি ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, এরপর দেশটির সঙ্গে কোনো ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখাই উচিত নয়।”

    সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর পাকিস্তানের বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। তার এক সপ্তাহের মাথায় সোমবার এর প্রতিক্রিয়ায় কে এম শফিউল্লাহ বলেন, পাকিস্তানে আমাদের যে অ্যাম্বেসেডর আছে তাকে ডেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। আমিতো মনে করি যে এই দেশের সাথে কোন সম্পর্ক রাখাই উচিত না।

    তিনি বলেন, “একাত্তর সালে যে পাকিস্তানকে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করেছিলাম, সে পাকিস্তান আজ তাদের সমর্থকদের ফাঁসি দেয়ায় আবারও কথা বলা শুরু করেছে। আমরা সভ্য বলে কিছু বলিনি। আজ বলতে বাধ্য হচ্ছি। পাকিস্তান যেসব কথা বলা শুরু করেছে, এখন তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখার প্রয়োজন নেই।”

    অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের বিবৃতি, প্রতিবাদ একটি স্বাধীন দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ের ওপর হস্তক্ষেপ। এরপর পাকিস্তানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখার আর কোনো সুযোগ নেই।”

    একাত্তরে গণহত্যা এবং এখন মানবতাবিরোধী অপরাধীদের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য জাতিসংঘে পাকিস্তানের সদস্য পদ বাতিলের দাবি তোলার আহ্বানও সরকারকে জানান তিনি। আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “পাকিস্তানের অবস্থান সার্কের চেতনারও পরিপন্থি। পাকিস্তানকে সার্ক থেকেও বহিষ্কার করতে হবে।” একইসঙ্গে পাকিস্তানের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করার প্রস্তাব করেন।

    সেক্টর কমার্ন্ডার্স ফোরামের সহ-সভাপতি লে. জে. (অব.) হারুনুর রশীদ বলেন, আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে সফল হয়েছি। কিন্তু একটি ক্ষেত্রে আমরা বিফল হয়েছি। সেটি হচ্ছে আমরা মুক্তিযুদ্ধকে ধরে রাখতে পারিনি। আমাদের নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে।

    রাত সাড়ে ১০টায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাত ১২টা ১ মিনিটে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের নেতারা তরুণ প্রজন্মের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন। এরপর মশাল প্রজ্জ্বলন করে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে তারা বিজয়ের মাসকে বরণ করে।

    অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্যে রাখেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এ কে এম আলী শিকদার, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স।ইরনা