পরকীয়া ও সুদের পাওনা টাকার বিরোধের জের ধরেই ৫ খুন

    0
    216

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৮জানুয়ারীঃ নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল এলাকায় একই পরিবারের ৫জনকে গলা কেটে হত্যা মামলার তদন্ত গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

    নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার খন্দকার মহিতউদ্দিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

    মামলা তদন্তে অগ্রগতি কী ধরনের হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনই বিষয়টি বললে তদন্তকাজে বাধাগ্রস্ত হবে। তবে শিগগিরই মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে এবং আসামিরা ধরা পড়বে।

    পুলিশ সুপার জানান, পুলিশের কাছ থেকে মামলার তদন্ত গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা মামলাটি তদন্ত করছে।

    এদিকে পরকীয়া সম্পর্ক ও সুদের পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে, এমন সন্দেহ করছেন নিহতদের স্বজন ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। খুনিরা নিহতদের পরিচিত ছিল বলেও মনে করছেন পুলিশ ও র‍্যাব কর্মকর্তারা।

    অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিহত গৃহবধূ তাসলিমা ও তাঁর ছোট ভাই মোর্শেদুল ওরফে মোশারফ দেনার দায় এবং একটি পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

    ৩ মাস আগে তাঁরা বাবুরাইলের ওই ভাড়া বাসায় ওঠেন। এর আগে রাজধানীতে থাকা অবস্থায় তাসলিমার জা লামিয়ার (নিহত) সঙ্গে তাঁর স্বামীর ভাগ্নে মাহফুজের পরকীয়া সম্পর্ক ধরা পড়ে।

    এই সম্পর্কের কারণে তাঁরা ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জে চলে আসেন। এখানে আসার পরও মোর্শেদুলের কারখানায় কাজের সুযোগে আবার মামি লামিয়ার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলেন ভাগ্নে মাহফুজ। হত্যাকাণ্ডের দুই সপ্তাহ আগে বিষয়টি টের পান তাসলিমা ও মোর্শেদুল।

    মামিকে যৌন হয়রানির অভিযোগে পারিবারিক বিচারে মাহফুজকে শাস্তি দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ‘দেখে নেওয়া’র হুমকি দিয়েছিলেন  মাহফুজ।

    এদিকে গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল এবং ঢাকার বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে সুদে মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়েছিলেন তাসলিমা ও তাঁর ভাই মোর্শেদুল। কিন্তু ঠিকমতো সুদ ও ঋণ পরিশোধ না করায় ঋণদাতাদের মধ্যে চারজন তাঁদের হত্যারও হুমকি দিয়েছিলেন।

    উল্লেখ্য, শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর বাবুরাইল এলাকার ১৩২/১১ নম্বর বাড়ির নিচতলার বাসার তালা ভেঙে তাসলিমা বেগম (৪০), তাঁর ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), ভাই মোরশেদুল (২৫) ও জা লামিয়ার (২৫) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

    শিশু দুটি ছাড়া অন্যদের গলায় কাপড় বা ওড়না প্যাঁচানো ছিল। প্রত্যেকের গলায়, মাথায় ও কপালে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়না তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাদের গলা কেটে নয়, তিনজনের শ্বাসরোধে ও দুইজনের এলোপাতাড়ি আঘাতে মৃত্যু হয়েছে।

    ওই ঘটনায় গত কাল রোববার নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় মামলা হয়েছে। হত্যার শিকার গৃহবধূ তাসলিমার স্বামী সফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।