নড়াইলে ভাগ্য বদলাতে পাম চাষ করে বিপাকে কৃষক সাইদুর

    0
    293

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২০জুন,সুজয় কুমার বকসী: ভাগ্য বদলাতে পাম চাষ করলেও এখন সেই পাম গাছ গলার ফাঁস হয়ে দাড়িয়েছে নড়াইলের কৃষক সাইদুর রহমানের । পাম গাছে ফল ধরতে শুরু করলেও কিভাবে পাম বিক্রি ও তেল তৈরি করবেন তার কোনো দিক নির্দেশনা পাচ্ছেন না তিনি। ফলে হতাশ হয়ে গাছ কেটে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ইতোমধ্যে কয়েকটি গাছ কেটেও ফেলেছেন এবং পাম গাছের পরিচর্যা ছেড়ে দিয়েছেন।

    নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের আগদিয়া গ্রামের সাইদুর রহমান ২০০৮ সালে গ্রীন এগ্রো কোম্পানি নামে একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদের উৎসাহে এবং তাদের কাছ থেকে চড়া মূল্যে ৮৫টি পাম গাছের চারা ক্রয় করে ৫৭ শতাংশ জমির উপর রোপন করেন। প্রতি পিচ চারা ক্রয় করেন ৩শ২০ টাকায়। এ পর্যন্ত লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে ঐ চারাগুলির পরিচর্যা,সার,কীটনাশক ও পানি দিয়ে চারাগুলিকে বড় করেছেন । গ্রীন এগ্রো কোম্পানি সাইদুরকে বলেছিলেন তারাই(গ্রীন এগ্রো) এসব ফল ভালো মূল্যে ক্রয় করবেন। কিন্তু তারা এখন লাপাত্তা। গত দুই বছর পূর্ব থেকে  গাছে ফলন ধরেতে শুরু করলেও কিভাবে এ ফল বিক্রি করবেন অথবা তেল তৈরি করবেন  তা কারোর কাছ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন না। এক মাস পূর্বে এই ফল শুকিয়ে স্থানীয় তেল ভাঙ্গা মেশিনে তেল তৈরি করলেও তা খেতে খুব একটা ভালো লাগছে না। কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কয়েক কর্মকর্তার সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বললে তারা পাম গাছ কেটে ফেলতে বলেছেন। কারো কাছ থেকে ভালো কোন পরামর্শ না পাওয়ায় কৃষক সাইদুর রহমান হতাশ হয়ে পড়েছেন ।  তিনি তার গাছের ফলগুলি দিয়ে কি করবেন তা বুঝতে না পেরে ফলের পরিচর্যা ছেড়ে দিয়েছেন এবং তিনি তার বাগানের সকল গাছগুলি কেটে ফেলবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে সাইদুরের পরামর্শ মত প্রতিবেশী হাবিবুর রহমানও ১০টি পাম গাছ লাগিয়েছেন। সেগুলো আগামী বছর ফল ধরা শুরু হবে। তিনিও হতাশা প্রকাশ করেছেন।

    সাইদুর রহমান বলেছেন, গ্রীন এগ্রো নামে একটি কোম্পানি আমাকে বুঝিয়েছিল,মালয়েশিয়ায় পাম চাষ করে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে। এখানে পাম চাষ করেও ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব। বর্তমানে  অর্ধেক গাছে ফল ধরা শুরু করেছে। কিন্তু এ ফল দিয়ে কি করবো ? এ ব্যাপারে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ চাইলে তারা গাছ কেটে ফেলতে বলেছেন। ৭ বছরে অন্য ফলজ বা বনজ গাছ লাগালে অনেক লাভ হতো।

    এ ব্যাপারে নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আমিনুল হক পাম গাছগুলি না কাটার পরামর্শ দিয়ে বলেন, নড়াইলে পাম চাষ হচ্ছে আমাদের জানা নেই। তবে বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পাম গাছ রোপন করা হয়েছিল।  এ চাষ আমাদের দেশে নতুন হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। তবে কৃষি বিভাগ পাম চাষের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আমি নড়াইলের পাম চাষির সাথে যোগাযোগসহ সহযোগাতার চেষ্টা করব।