নড়াইলে এইচএসসিতে হত দরিদ্র প্রিয়াংকার জিপিএ-৫ লাভ

    0
    231

    নড়াইল প্রতিনিধিঃ ইচ্ছা এবং চেষ্টা থাকলেই যে ভালো ফলাফল করা যায় প্রিয়াংকা তার প্রমান। নড়াইলের হত দরিদ্র কাঠ মিন্ত্রির সন্তান অদম্য ও সাহসি প্রিয়াংকা অনেক বাঁধাকে উপেক্ষা করে এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে প্রতিদিন তিন কিলোমিটার বাই সাইকেল চালিয়ে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে এসে ক্লাস করেছে।
    নড়াইল সদরের পৌর এলাকার দূর্গাপুর গ্রামের কাঠ মিস্ত্রি ও ঘরামি তাপস গাঙ্গুলির কন্যা প্রিয়াংকা। বসতভিটার ৭ শতাংশ জমি ছাড়া তাদের চাষের আর কোনো জমি নেই। চার জনের সংসারে তাপস গাঙ্গুলি অন্যের ছন বা টিনের ঘর তৈরি করে যা পান তাই দিয়ে সংসার চলে। নিজে ঘরামি হলেও বসবাসের মাত্র একটি ঘর রয়েছে। বাড়িতে নিজস্ব বিদ্যুৎ লাইন নেই। অন্য বাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ এনে লেখাপড়ার কাজ চলে। প্রিয়াংকার মা কা ন গাঙ্গুলি বাড়ির উঠানে শাক-সবজি, হাঁস-মুরগির চাষ করে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করেন। অভারে সংসারে প্রতিদিন সে তিন কিলোমিটার বাই সাইকেল চালিয়ে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে এসে ক্লাস করেছে।

    প্রিয়াংকার বাবা তাপস গাঙ্গুলি ও তার মা কা ন গাঙ্গুলি জানান, আমরা ভাবতে পারিনি প্রিয়াংকা এতো ভালো ফলাফল করবে। যেভাবে হোক অনেক কষ্ট করে সে এইচএসসি পাশ করেছে। স্কুল ও কলেজে আমরা তার লেখাপড়ার খরচ ঠিকমতো বহন করতে পারিনি। এখন তার উচ্চ শিক্ষার খরচ কিভাবে বহন করবো !

    প্রিয়াংকার শিক্ষক প্রভাষক প্রশান্ত সরকার জানান, প্রিয়াংকা অনেক কষ্ট স্বীকার করে বাই-সাইকেল চালিয়ে কলেজে ক্লাস এবং লেখাপড়া করেছে। দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে তার উচ্চ শিক্ষার ব্যয়ভার বহন করা অসম্ভব। এজন্য তিনি সমাজের বিত্তবান এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

    প্রিয়াংকা জানান, সাইকেল চালিয়ে কলেজে আসায় এলাকার অনেকে এবং বন্ধু-বান্ধবিরা আমাকে ভালো চোখে দেখতো না। বাবা-মা লেখাপড়ার খরচ চালানো না পাড়ায় আমাকে কখনও কখনও টিউশনি করতে হয়েছে। ইচ্ছা এবং চেষ্টার কারনেই আজ ভালো ফলাফল করতে পেরেছি। আমার শিক্ষকরা সব সময় আমাকে সহোযোগিতা করেছেন। লেখাপড়ার সুযোগ পেলে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়।