নড়াইলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগঃবিচার দাবিতে মানববন্ধন

    0
    225

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২২সেপ্টেম্বর,নড়াইল প্রতিনিধিঃ  নড়াইলের কালিয়া উপজেলার হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক কলেজের অধ্যক্ষ ও সভাপতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্প ও খাতের প্রায় ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দোষীদের বিচার ও দূনীর্তির টাকা কলেজ ফান্ডে  ফেরতের  দাবিতে বৃহস্পতিবার কলেজের সামনের সড়কে  সচেতন নাগরীক সমাজের আয়োজনে  মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

    এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে জানা যায়, কালিয়া উপজেলার পেড়লী বাজার এলাকায় অবস্থিত এলাকায় হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক কলেজের অধ্যক্ষ আবু রেজা মোল্যা ও সভাপতি শেখ নজরুল ইসলামের যোগসাজসে বিভিন্ন প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রতিষ্ঠানের মালামাল বিক্রিসহ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক ফি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব দুর্নীতির মধ্যে গত জুনে কলেজ মাঠ ভরাট কল্পে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে ৪৫ মেট্রিক চাল বরাদ্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ব্যাপারে বালু ব্যবসায়ী কালিয়ার বিষ্ণুপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম জানান, কলেজ মাঠ ভরাট বাবদ তাকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

    কলেজের সাবেক অভিভাবক সদস্য মোল্যা টিপু সুলতান বলেন, কলেজ মাঠ ভরাটের কাজে ১৫ লাখ টাকার বেশি বরাদ্দ হলেও নাম মাত্র টাকার বালি ভরাট করে বাকি টাকা অধ্যক্ষ ও সভাপতি আত্মসাত করেছেন। এ কাজে কালিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম জড়িত ছিলেন। এছাড়া খড়ড়িয়ার ইমাম হোসেন তুষারের ৫০ হাজার টাকার অনুদানও অধ্যক্ষ ও সভাপতি আত্মসাত করেন। কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি মোস্তফা কামাল এবং জিন্নাত শেখ জানান, কলেজের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য দুই কক্ষের পাকা ল্যাট্রিন, টিনশেডের দু’টি শ্রেণিকক্ষ এবং শহীদ মিনার ভাঙ্গতে হয়। এখানে দুই লক্ষাধিক টাকার ইট, খোয়া, রড ও টিন বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাত করেন কলেজ অধ্যক্ষসহ সভাপতি।

    কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক আলমগীর হোসেন জানান, ১৯৯৯ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ব্যবহারিক পরীক্ষার টাকা নেয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায়ও ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা উঠানো হয়েছে। কলেজ বাস্তবায়ন কমিটির আরেক সদস্য শেখ আজিজুল হক আক্ষেপ বলেন, আমি সঠিক ভাবে কাজ করতে চাই বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এখন আর আমাকে মূল্যায়ন করে না। পেড়লী গ্রামের মুজিবুর শেখ, আলতাফ শেখ, আসলাম মোল্যা ও মোস্তফা মুন্সী জানান, আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত এনে কলেজের উন্নয়ন এবং শিক্ষার সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশ চান তারা।

    এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে অধ্যক্ষ আবু রেজা মোল্যা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। তিনি কলেজ মাঠে বালি ভরাটের বিষয়টি সভাপতি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলতে পারেন। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ও প্রশংসাপত্র বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন । কলেজ সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, মাঠ ঠিকমত ভরাট করা হয়েছে। প্রতিপক্ষের লোকজন বিরোধিতার খাতিরে আমার সঙ্গে বিরোধিতা করছেন। কালিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম বলেন, কলেজ মাঠে বালি ভরাটের ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়নি। যাচাই-বাচাই করে বিল দেয়া হয়েছে। এদিকে, অধ্যক্ষ আবু রেজা মোল্যা ও সভাপতি শেখ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।