নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখে মির্জা ফখরুলের ক্ষোভ প্রকাশ

    0
    136

    আমারসিলেট24ডটকম,২৭এপ্রিলদলীয় ব্যানারের বাইরে যেসব ‘ভুঁইফোঁড়’ সংগঠন বিএনপির নেতাদের নিয়ে সভা-সমাবেশের আয়োজন করে থাকে, সেগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথা ছিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় নির্ধারিত সময়ে উপস্থিতও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে পূর্বনির্ধারিত নেতাদের বাইরে অনাহূত নেতাকর্মীর বহুল উপস্থিতি দেখে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে চলে যান। এতে পণ্ড হয়ে যায় মতবিনিময় সভা।এ ধরনের ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে ওই সব সংগঠনের নেতাদের মধ্যে। কেউ কেউ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও ব্যক্ত করেছেন।

    বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা নিয়মিত যেসব সংগঠনের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এমন ৩৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে ‘বিএনপির সহযোগী ঐক্য পরিষদ’ নামে সংগঠনের যাত্রা শুরু হয় গত বছর। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন হৃদয়ে বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোঃ হানিফ।
    জানা গেছে, প্রতিটি সংগঠন থেকে সর্বাধিক দুজন করে প্রতিনিধি এই মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনুষ্ঠানস্থলে অতিরিক্ত নেতাকর্মী দেখে ঐক্য পরিষদের ওপর ক্ষুব্ধ হন মির্জা ফখরুল। এ সময় তিনি নেতাদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চান এবং অতিরিক্ত লোক বের করে দেয়ার জন্য বলেন।পরে আয়োজকরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্যদের বের করে দেয়া শুরু করলেও রাগ করে চলে যান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত এই মহাসচিব।

    অপরদিকে ঐক্য পরিষদ সূত্রে জানা যায়, পূর্বনির্ধারিত এই মতবিনিময় সভার পরিস্থিতি দেখে মির্জা ফখরুল অপমান বোধ করেন এবং ক্ষুব্ধ হন। কারণ, এই সংগঠনটির ব্যানারে  অনেক নেতা আছেন, যাদের বেশির ভাগই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক করার পর্যাায়ে পড়েন না। এ ছাড়া  তাকে না জানিয়ে গণমাধ্যমকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

    মেজর (অব.) হানিফ বলেন, “লোকসংখ্যা বেশি হওয়ায় মহাসচিব ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে তিনি অতিরিক্ত লোক বের করে দেয়ার জন্য বললে আমরা সরিয়ে দেয়া শুরু করি। কিন্তু পরে মহসচিব চলে গেছেন। আশা করি, আবার আলোচনার মাধ্যমে সময় বের করে মতবিনিমিয় সভাটি করতে পারব।”

    মেজর হানিফ জানান, “গত বছর আমাদের সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। আমরা নিয়মিত বিএনপির কর্মসূচিতে অংশ নিই। এ ছাড়া নানা ইস্যুতে আমরা বিএনপির নেতাদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করে থাকি। বিএনপির আন্দোলন আরো বেগবান করতে আমাদের এই উদ্যোগ।”

    বিএনপির সহযোগী ঐক্য পরিষদের ৩৮টি সংগঠন হলোঃ জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল, জাতীয়তাবাদী মানবাধিকার ফোরাম,  জাতীয়তাবাদী সেবাদল, জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দল, জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম দল, জাতীয়তাবাদী মঞ্চ, জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী কল্যাণ পরিষদ, জাতীয়তাবাদী তৃণমূল দল, জাতীয়তাবাদী ভূমিহীন দল, জাতীয়তাবাদী নতুন বাংলাদেশ, হৃদয়ে বাংলাদেশ, জিয়া নাগরিক ফোরাম, জাতীয় নাগরিক সংঘ, জাতীয় মানবাধিকার পরিষদ, ঘুরে দাঁড়াও বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক দল, স্বদেশ জাগরণ পরিষদ, জিয়া সেনা, সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম, বাংলাদেশ কৃষক পরিষদ, জিয়া বিগ্রেড, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী বন্ধুদল, দেশ প্রেমিক নাগরিক পার্টি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন পরিষদ, ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট, প্রজন্ম একাডেমী, রিপাবলিকান ফোরাম, দেশ নেত্রী পরিষদ, তারেক জিয়া ফোরাম, তারেক পরিষদ, স্বাধীনতা ফোরাম,  সচেতন ছাত্র ফোরাম, উন্মোক্ত গণতান্ত্রিক পরিষদ, বিপন্ন মানবকল্যাণ ফোরাম, জনতার ধ্বনি, বিএনসিইউপি ও বিএনপি শ্যাডো এন্ড প্রো-পলিটিক্যাল অর্গানাইজেশন।

    এর আগে বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে এই ধরনের সংগঠনকে ‘ভুঁইফোঁড়’ দাবি করে বিবৃতি দেন দলের যুগ্ম মহাসচিব (দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) রুহুল কবির রিজভী।এ ধরনের সংগঠন দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে।পরে সংগঠনগুলোর নেতারা রিজভী আহমেদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা বিবৃতিও দিয়েছেন।

    এদিকে মতবিনিময় সভা থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুলের চলে যাওয়া নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে ঐক্য পরিষদের নেতাদের মধ্যে।

    নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকটি সংগঠনের সভাপতি বলেন, যখন বিএনপির কোনো কর্মসূচি থাকে না, তখন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা বিভিন্ন ইস্যুতে এ ধরনের সংগঠনের অনুষ্ঠানে কথা বলেন। অথচ আজকে ‘খোঁড়া’ অজুহাতে মতবিনিময়ের সভাটি পণ্ড করে দেয়া হলো বলে তাদের ধারনা।