আমারসিলেট24ডটকম,০৫মার্চঃ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিরাজনগর গ্রামের ডাক্তার বাড়ির প্রবাসী নুরুল ইসলামের তৃতীয় সন্তান আশরাফুল ইসলাম(১২) কে একই গ্রামের মাহবুবুর রহমানের ছেলে মাহফুজুর রাহমান নোমান(২৬) নামের এক যুবক অপহরণ করে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে যা পুলিশের কাছে তার স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়।নিহত আশরাফুল শ্রীমঙ্গলের দি বাডস রেসিডেনসিয়্যাল স্কুল এন্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিল।মাহফুজুর রাহমান নোমান আশরাফুল ইসলামের এক সময়ের গৃহশিক্ষক এবং প্রতিবেশী।
আজ বুধবার দি বাডস রেসিডেনসিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র/ছাত্রী,শিক্ষকদের উদ্যোগে নিহত স্কুল ছাত্র আশরাফুলের রুহের শান্তি কামনায় ও অপহরন করে নির্মম ভাবে হত্যা কারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ফাসির দাবিতে মানব বন্ধন করা হয়।এতে ছাত্র/ছাত্রী,শিক্ষক বৃন্দ,অভিবাবক বৃন্দসহ সর্বসাধারন অংশ গ্রহন করেছে।সবচেয়ে হৃদয় বিদারক যা সকলের নজর কেড়েছে এবং সবাইকে লজ্জা দিয়েছে আমরা যারা তাদের মত নিষ্পাপ ফুলের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ।আর তা হল চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র “তারিফ” পিতা মোঃ রফিক সে তার সহপাঠীর হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে তার বুকে এক টুকরো সাদা কাগজ লাগিয়েছে। আর তাতে লিখেছে “আশরাফুল ভাইয়ের অপহরণ কারী ও হত্যা কারীর ফাঁসি চাই।” তার সাথে কথা বলতে গেলে কাঁদতে শুরু করে এবং হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করে, সাথে ছিল “তারিফের” দাদি সেও কাঁদতে কাঁদতে বলে আশরাফ এত ভাল এবং মেধাবী ছিল যে যখনই সে আমাকে দেখত সালাম দিয়ে বলতো অ্যান্টি কেমন আছেন? তিনি জাতির কাছে প্রশ্ন রাখেন সে কি অন্যায় করেছিল? এ বলে মহিলার মুখ থেকে যেন আর কথা বের হয়নি।
উল্লেখ্য;অপহরণের পর হত্যা করার অভিযোগে পুলিশ মূল অপহরণকারী গৃহশিক্ষক নোমান কে আটক করেছে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়,গত শনিবার আছরের পর গৃহশিক্ষক মাহফুজুর রাহমান নোমান(২৬) গ্রামীণ ফোনের কনসার্ট দেখার কথা বলে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আশরাফুল ইসলামকে মৌলভীবাজারে নিয়ে যায়। পরদিন রবিবার সকালে একটি নাম্বার থেকে আশরাফুলের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসাবে ১৩ লাখ টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে গৃহশিক্ষক তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে বলে ২-৩ লাখ টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনা সম্ভব। অপর দিকে আশরাফুলের দাদা ডাঃ মুজিবুর রহমান লামুয়া এলাকার মেম্বার হারুনুর রসিদ কে ঘটনাটি জানানোর জন্য ফোন দিলে নোমান এতে খুবই ক্ষিপ্ত হন এবং বলেন হারুন কে না বলে মৌলভীবাজারের সন্ত্রাসী তাজ কে বললে সহজে তাকে পাওয়া যাবে।তার এ বক্তব্যে সন্দেহ দেখা দিলে পুলিশ কে বিষয়টি জানানো হয়।পরে গত কালই বিকালে থানায় এসে ঘুরাঘুরি করার সময় পুলিশের সন্দেহ হলে এস আই ওমর ফারুক তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে অপহরণের কথা স্বীকার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গতকালই রবিবার রাত ১০টার দিকে আশরাফুলের লাশ রাজনগর উপজেলার মনুনদীর বালুচড় এলাকা থেকে পুলিশ উদ্ধার করে।
উল্লেক্ষ্য,অপহরন কারী নোমানের নানার বাড়ি ও রাজনগর কোনা গাঁও গ্রামে বলে এলাকা বাসির সুত্রে জানা যায়।আরও জানা যায় গত শনিবার রাতে নোমানের মোবাইল ফোনে বারবার কল আসলে তার সাথে থাকা ডাঃ তাহমিদ হাসান চৌধুরী (নবীগঞ্জ) তাকে প্রশ্ন করে এত কল কেন আসছে ? তুমি কল ধরছনা কেন ? নোমান জানায় আমার মামাতো ভাই কল দিচ্ছে, ধরলেই টাকা চাইবে তাই ধরছিনা। নিহত আশরাফুলের বাড়ির লোকজনের সাথে সে ও থানায় এবং র্যাব অফিসে যাতায়াত করেছে বলে জানা গেছে। সে বর্তমানে হাজতে আছে।