নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ

    0
    225

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৬জানুয়ারীঃ ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির  বিএনপি আমলের সাবেক মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর আপিলে মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ।

    চূড়ান্ত রায়ে যে ৪টি অভিযোগে তার মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে আদালত। এ ছাড়া ১, ৩ ও ৪ নং অভিযোগে খালাস দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত।

    বুধবার সকাল ৯টার দিকে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে নিজামীর আপিল মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

    রায় ঘোষণার সময় আদালতে নিজামীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এডভোকেট এস এম শাহজাহান, শিশির মনির, নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ।

    মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিল বিভাগের ৬ষ্ঠ রায় এটি। এর আগে আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর জামায়াতের দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

    রায় ঘোষণার পর আদালতের এজলাস থেকে বেরিয়ে গণজাগরণ মঞ্চের কয়েকজন কর্মী উল্লাস প্রকাশ করে ‘জয় বাংলা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা ফাঁসি বহাল রাখায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

    এর আগে এ রায়কে কেন্দ্র ভোর থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয় সুপ্রিমকোর্ট এলাকায়। সুপ্রিম কোর্ট মূল গেট, মাজার গেট, বার কাউন্সিল গেট, আইনজীবী সমিতি ভবন, আপিল বিভাগের সামনে-পেছনেসহ বেশ কয়েকটি জায়গা আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের ভেতরে বিচারপ্রার্থীসহ সাধারণ মানুষ ঢোকার ক্ষেত্রে তাদের দেহ তল্লাশি করা হয়।

    বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় পাবনায় হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে নিজামী আপিল করলে ৮ ডিসেম্বর দু’পক্ষের শুনানি শেষ হয়।

    ২০১০ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর আপিলে বিভাগে আসা ষষ্ঠ মামলা এটি। আজ এর চূড়ান্ত রায় হতে যাচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল থেকে আপিল বিভাগে আসা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলোর মধ্যে এর আগে ৫ জনের মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে।
    ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসির দণ্ড দেন। ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হলেও তাকে ওই দণ্ড দেয়া হয় চারটি অভিযোগে। ২, ৪, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করার অপরাধে নেতৃত্ব দেয়ায় অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেয়া হয়েছিল।
    ৭২ বছর বয়সী নিজামী বিগত ৪-দলীয় জোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন। তার আগে ২০০১-০৩ সময়ে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী।