নাশকতা ঠেকাতে সরকার হার্ডলাইনে

    0
    250

    আমার সিলেট  24 ডটকম,১০নভেম্বরঃ আজ থেকে ১৮দলীয় জুটের হরতাল চলছে ।আর এই  হরতালে নাশকতা ঠেকাতে সরকার হার্ডলাইনে। সরকার বিরোধী দলের আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের কাউকে ছাড় দিতে রাজি নয়। অভিযোগ থাকলে বিরোধীদলীয় জোটের শীর্ষ থেকে নৃতমূল নেতাদের কাউকেই রেহাই দেয়া হবে না। সরকারের  সংশ্লিষ্ট একাধিক মন্ত্রী ও দলীয় নেতা এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
    প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেফতারের পর পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন সরকার দলীয় নীতিনির্ধারকরা। পরিস্থিতি বেসামাল হলে সহিংসতায় জড়িত জেলা পর্যায়ের বিরোধীদলীয় নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ বিএনপির শীর্ষস্থানীয় ৫ নেতাকে আকস্মিকভাবে গ্রেফতারের পর রাজনৈতিক অঙ্গন এক নতুন মাত্রা পেয়েছে। মানুষের মুখে ছড়িয়ে পড়ছে নানা গুজব-গুঞ্জন। সরকারের পক্ষ থেকে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতারের কথা বলা হলেও কমবেশি সবাই আসল কারণ চাইছেন।দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বিগ্ন মানুষ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও সরকারের কঠোর অবস্থানকে নানাভাবে খতিয়ে দেখছেন। কারো মতে, হরতাল পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য গ্রেফতার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। তবে অনেকেই তা মানতে নারাজ। তাদের মতে, গ্রেপ্তারকৃতরা  সাধারণত হরতালে সক্রিয় থাকেন না। তাদের গ্রেপ্তার করে সরকারের কোন লাভ নেই। এর পাল্টা যুক্তি দেখানো হচ্ছে, গ্রেপ্তারের ঘটনায় অন্যরা হরতালে সক্রিয় হবে না। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা গ্রেফতার এড়াতে হরতাল ও নৈরাজ্যমূলক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের দূরে রাখবেন।
    অন্যদিকে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সরকার ও বিরোধী উভয় দলই নিজ অবস্থানে অনড়। ক্ষমতাসীন দল যাচ্ছে সর্বদলীয় সরকারের অধীনে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে। কিন্তু তাতে কোনোভাবেই রাজি নয় বিরোধীদলীয় জোট। এমন পরিস্থিতিতে বিরোধীদলীয় নেতাদের গ্রেপ্তার রাজনীতির সার্বিক পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। জনমনেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। এ অবস্থায় সরকার ও বিরোধীদলীয় জোটের মধ্যে সংলাপ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকেই যাচ্ছে বলে অনেকের মত। তাদের মতে, গত ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার ফোনালাপের পর সংলাপ প্রক্রিয়া মুখথুবড়ে পড়লেও কিছুটা সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিএনপি শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের পর সংলাপের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে গেছে। গ্রেপ্তারের মধ্যে দিয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আবারো কঠোর মুখোমুখে অবস্থান নিয়েছে। ফলে সরকারের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিরোধী দলও হরতালের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে। যদিও বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের গ্রেপ্তার বিষয়টি ক্ষমতাসীন দলের অনেক শীর্ষ নেতাই জানতেন না। গ্রেফতারের পর টেলিভিশনের মাধ্যমে তারা তা জানতে পারেন বলে জানা যায়।
    হঠাৎ করে বিরোধীদলীয় শীর্ষনেতাদের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া শুরু করা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এড. শামসুল হক টুকু জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপির নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর এ গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত থাকবে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকবে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
    আওয়ামী লীগের একজন নীতিনির্ধারক বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের জন্যই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে টেলিফোন করেছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। বরং উল্টো হরতালের নামে সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালান। এ অবস্থায় উস্কানি দেয়ার কারণে বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা ছাড়া সরকারের বিকল্প ছিল না। সংলাপে না এসে বিএনপি নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছে। মূলত যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতেই জামায়াতে ইসলামীর ইচ্ছানুযায়ী বিএনপি দেশজুড়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের জানমাল ও সম্পদ রক্ষায় ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব সরকারের। সরকার অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।
    তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলেন, হরতালের আগে অগ্নিসংযোগ ও অন্তর্ঘাতমূলক যেসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে তা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শামিল। আর হরতাল ঘিরে বিরোধী দলের নাশকতার প্রেক্ষাপটে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ থেকে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সরকার গ্রেপ্তারের মতো পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।আবার কোন কোন সুত্র থেকে জানা যায়,বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কারণে তাদের আটক করা হয়েছে ।