‘নায্যমূল্যে’ উদ্যোগ যেন কারো মরণ ব্যাধির কারণ না হয়

    0
    300
    সাদিক আহমেদ,নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রাণঘাতী মহামারী করোনা ভাইরাস প্রকোপ বাড়তে থাকায় এক প্রকার পুরোপুরি লকডাউনে রয়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কিন্তু সামাজিক দূরত্ব যেন আমাদের কাছে গলার কাঁটা।
    এতদিন শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফার্মেসী এবং মুদি দোকান ব্যতীত অন্যান্য সকল প্রকার দোকান পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে।যদিও মুদি দোকান রাত ৮ টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল।
    তবে আজ থেকে ফার্মেসি ব্যতীত সকল প্রকার কাঁচামাল ও মুদি দোকান সকাল ছয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
    এতে করে বেশ কিছুদিন যাবৎ ই বেশ বিড়ম্বনায় পড়েছে শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রত্যেকটি জনগণ। সবচেয়ে বেশি দুর্বিষহ অবস্থার জীবন কাটাচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত পরিবার।
    এদিকে এই অবস্থায় বিড়ম্বনা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে সরকার ত্রান বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকার পাশাপাশি এগিয়ে এসেছেন প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে।
    সরকারের পক্ষ থেকে নায্যমূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় চাল,ডাল,তেল,চিনিসহ অন্যান্য দ্রব্য জনগণের কাছে পৌছে দিতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই বসছে গাড়ি দিয়ে ভ্রাম্যমাণ বাজার।
    আজ (সোমবার) বিকেল ৪ টায় উপজেলার মৌলভীবাজার রোডস্থ সন্ধানী আবাসিক এলাকার সামনে ভ্রাম্যমাণ বাজার পরিচালনা করা হয়।যেখানে নায্যমূল্যে নিজেদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনার জন্য উপচে পড়া ভীড় জমান সকল স্তরের জনগণ।
    সরজমিনে দেখা যায় এই ভ্রাম্যমাণ বাজার থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ করতে আসা বেশীর ভাগ মানুষেরই ছিলোনা কোনো মাস্ক,গ্লাভ।এমনকি ক্রেতারা কেউই নিজেদের মধ্যে ১ মিটার(৩ ফিট) স্থান ফাঁক রেখে দাড়ায়নি।অভাব এবং প্রয়োজনের তাগিদে সবাই ভুলেই গেছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা।নিজেদের প্রয়োজনীয় দ্রব্য সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রায় জটলা পাকিয়ে ফেলেছিলো ক্রেতারা।
    প্রসাশনের পক্ষ থেকে বারবার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের কথা বলা হলেও প্রায়ই এমন ভ্রাম্যমান বাজারের কারণে যত্রতত্র অমান্য করা হচ্ছে প্রসাশনের নির্দেশ।
    এমন অবহেলা ও খামখেয়ালিপনার জন্য করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও বিস্তার বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।প্রত্যেককেই সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও মেনে চলার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
    আমার সিলেটের সঙ্গে ফোনালাপে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন,”স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বারবার বলা হচ্ছে সবাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।অন্ততপক্ষে ৩ ফিট দূরত্ব বজায় রাখলে ভাইরাসটি কারো দেহে থাকলেও সেটি অন্য কারো দেহে ছড়াতে পারবে না।আমাদের সকলেরই এইভাবে নিরাপত্তার সাথে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনেই এসব প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দেয়া কিংবা নেয়া উচিৎ।এভাবে যদি গেদারিং কিংবা জটলা করা হয় তবে সেটা যেকোনো জায়গাই হোক সেটা অত্যন্ত রিস্কি।তাই অন্তত ৩ ফিট দূরত্ব বজায় রেখে সবকিছু করতে হবে”।
    মৌলভীবাজার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বিনেন্দু ভৌমিক বলেন,”এখানে যারা এসব দ্রব্য বিতরণের সাথে জড়িত হয়তো অনেকেই নিরাপদ দূরত্ব মানছে না এবং যাদের দেয়া হচ্ছে তারাও এই নিরাপদ দূরত্ব মানছেন না।অনেক সময় সরবরাহকারী সামাজিক দূরত্ব মানলেও যারা নিতে আসছেন তাদের মানানো যাচ্ছে না।এটা আসলেই অত্যন্ত ভয়ংকর।যদি এখানে একজন ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত থাকেন তবে তা খুব দ্রুত গতিতে অন্যদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়বে।এভাবে ভাইরাসটির বিস্তার হু হু করে বাড়তে থাকবে।
    তিনি সকলকে শৃঙ্খলা মেনে চলার পরামর্শ দেন।অন্তত ৩ ফিট দূরত্বে থাকার জন্য নির্দেশনা দেন।প্রত্যেককে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন থাকার জন্য অনুরোধ করেন এই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।