নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আটক!

    0
    240

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৪ফেব্রুয়ারীঃ নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে আটক করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। মঙ্গলবার ভোররাতে রাজধানীর বনানীর ই-ব্লকের একটি বাসা থেকে মান্নাকে আটক করা হয় বলে তার স্ত্রী মেহের নিগার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। ভোর ৫টায় গুলশান-২ এর নিজ বাসায় মেহের নিগার সাংবাদিকদের জানান, মান্না বনানী ই-ব্লকের ১২ নম্বর বাসায় ছিলেন। বাসাটি মান্নার ভাতিজি শাহনামা শারমিনের। ওই বাসা থেকে রাত ৩টার দিকে ডিবি পুলিশ তার স্বামীকে আটক করে নিয়ে যায়। শাহনামা শারমিন রাত সোয়া ৩টার দিকে ফোন করে তাকে এ কথা জানান।

     মেহের নিগার সাংবাদিকদের জানান, আটক হওয়ার আগে সোমবার রাত ১২টার দিকে তার স্বামী মান্নার সঙ্গে কথা হয়।

    এ বিষয়ে বনানী থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর জানান, ডিবি পরিচয়ে মাহমুদুর রহমানকে ধরে নিয়ে গেছে বলে তার স্ত্রী মেহের নিগার বনানী থানাকে জানিয়েছেন। তবে ডিবি থেকে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো কিছু জানানো হয়নি।
    মাহমুদুর রহমান মান্নার ভাতিজি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সোমবার দিনগত তিনটার দিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাদের ঘরের দরজায় নক করে। তারা জানান, মাহমুদুর রহমানকে তারা নিয়ে যেতে এসেছেন। এ সময় তার চাচা মান্না ঘুমিয়েছিলেন। তিনি রাত ১১টার দিকে তাদের বাসায় আসেন। পরে ডিবি পুলিশ আসার খবর জানালে মাহমুদুর রহমান মান্না পোশাক পরার সময় চান। পোশাক পরা শেষে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ডিবি পুলিশ তাকে নিয়ে চলে যায়। তবে তার চাচাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি শাহনামা শারমিন।

    এ বিষয়ে  ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫১ মিনিটে মোবাইল ফোনে পাঠানো এক খুদেবার্তায় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালকে জানান, মান্নাকে ডিএমপি আটক করেনি।

    বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা এবং অপর একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সঙ্গে মান্নার কথোপকথনের অডিও প্রকাশ নিয়ে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা হয়।  এ কথোপকথনকে গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যায়িত করে মন্ত্রিসভার সদস্যদের অনেকেই মান্নাকে গ্রেফতারের দাবি জানান।  আবার কেউ কেউ মান্নাকে বিএনপির ‘পেইড এজেন্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

    সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেউ কেউ মান্নার আগের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েও কথা বলেন। তারা বলেন, মান্না একেক সময় একেক দল করেছেন। কখনও জাসদ, কখনও বাসদ, এরপর আওয়ামী লীগ- এভাবে দল বদল করেছেন। তার নিজের রাজনৈতিক কোনো চরিত্র নেই।

    রোববার ইউটিউব ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে ভাইবারে মাহমুদুর রহমান মান্নার কথোপকথনের রেকর্ড ফাঁস হয়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে মান্না আন্দোলন বেগবান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নাশকতা ঘটানো ও লাশ ফেলার বিষয়ে খোকাকে পরামর্শ দেন বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

    তবে নিজের ফেসবুক পেজে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় মান্না  বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছন,  দেশের এই যুগসন্ধিক্ষণে কারও চরিত্র হননের কাজ এই সঙ্কটকে আরও ঘনীভুত করবে।  তিনি বলেন, সামগ্রিক ঘটনায় আমি বিস্মিত, দুঃখিত, মর্মাহত।

    ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না আশির দশকে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিতি পান তিনি। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর পদ হারান মান্না। এরপর নাগরিক ঐক্য নামে একটি দল গঠন করেন তিনি।ইরনা