নবীগঞ্জ বেলাল হত্যাঃ ৩৩দিন অতিবাহিত

    0
    226

    মামলার প্রধান আসামীরা এখনও পুলিশের ধরাছোয়ার বাহিরে!

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৩১মেঃ মতিউর রহমান মুন্না: নবীগঞ্জের সাবেক পত্রিকা হকার ফারুক মিয়ার ছেলে এবং নবীগঞ্জের একমাত্র  পত্রিকার এজেন্ট মোশাহিদ আলী ও মিয়াধন মিয়ার ভাতিজা সিএনজি শ্রমিক বেলাল মিয়া হত্যাকান্ড মামলা দায়েরের আজ  ৩১ দিন এবং ঘটনার ৩৩ দিন অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু আত্মগোপনে থাকায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও মামলার প্রধান আসামীদের এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

    পুলিশের দাবী আসামীদের গ্রেফতারে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ পর্যন্ত পুলিশের হাতে ২ জন গ্রেফতার হল। এছাড়া ৭ জন বিজ্ঞ আদালতে আত্মসর্মপন করলে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। রির্পোট লেখা পর্যন্ত মামলার ২৮ জন আসামীর মধ্যে ৯ জন কারাগারে রয়েছেন। বাকীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে রয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

    নবীগঞ্জ শহরের বিভিন্ন দেয়ালে লক্ষ করা গেছে খুনিদের ফাসিঁর দাবী জানিয়ে সাটানো হয়েছে পোষ্টার।

    এদিকে এক  সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, বেলাল মিয়া হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার এবং ফাসিঁর দাবীতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনগাঁও সড়ক সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন।

    অপরদিকে সন্ত্রাসীদের হাতে ছোট ছেলে বেলাল খুন, অপর বড় ছেলে হেলাল মিয়ার চোখঁ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পিতা ফারুক মিয়া চরম হতাশায় জীবন যাপন করছেন। পাশাপাশি বেলাল হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন তিনি।

    উল্লেখ্য,  উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল বিকালে শহরের শেরপুর রোডস্থ মা-হোটেল ও মাইওয়ান ব্যবসা প্রতিষ্টানের সামনে দাড়ানো অবস্থায় প্রতিপক্ষ ছাত্রদল নেতা রায়েছ চৌধুরী ও সামছু মিয়া’র নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সিএনজি শ্রমিক বেলাল মিয়াকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। মূমুর্ষ অবস্থায় তাকে প্রথমে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রচুর রক্তকরণ হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দ্রুত সিলেট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

    পরে স্বজনরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বেলাল মিয়ার মৃত্যু ঘটে। নিহত বেলাল মিয়া পৌর শহরের নোয়াপাড়া গ্রামের সাবেক পত্রিকা হকার ও সিএনজি ম্যানাজার ফারুক মিয়ার ছেলে এবং পত্রিকার এজেন্ট মোশাহিদ আলী ও মিয়াধন মিয়ার ভাতিজা। ঘাতকদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে সিএনজি শ্রমিক ইউনিয়ন কফিন নিয়ে শহরে মৌন মিছিল ও শোক র‌্যালী বের করে।

    এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফারুক মিয়া ২৮ এপ্রিল রাতে ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামী করে নবীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা নং ৪১ তাং ২৮/০৪/২০১৫ইং দায়ের করেন। ঘটনার পর পর আসামীরা পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে। বিগত ১লা মে ভোর রাত ৪ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৌলভী বাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের সহযোগিতায় তদন্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ শ্রীমঙ্গল সদরের রূপসীপুর এলাকাস্থ বোনের বাসায় অভিযান চালিয়ে আফছর উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে ১৭ মে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭ আসামী যথাক্রমে আব্দুর রউপ, আব্দুল ওয়াহিদ, নাজিম উদ্দিন, আব্দুল মালিক, ইলিয়াছ আলী বাবু, আব্দুল মাহিদ ও আব্দুল লতিফ আত্মসর্মপন করলে বিচারক তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

    সর্বশেষ গত বুধবার ২৭ মে ভোর রাত পৌনে ৩টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ বাহুবল থানা পুলিশের সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাহুবল উপজেলার ডুবাঐ গ্রামের শ্বশুর সঞ্জব উল্লার বাড়ি থেকে রুহেল মিয়াকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। এদিকে নিহত বেলালের শোকার্ত পরিবারে শোকের মাতম অব্যাহত রয়েছে। হাতের মেহেদীর রঙ মুছে যাওয়ার আগেই স্বামী বেলালকে হারিয়ে পাগল প্রায় নববধূ। স্বামীকে হারানোর বেদনায় নববধু ও সদ্য বিধবা স্ত্রী’র বিলাপ এবং কান্নায় এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।