নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন,মনোনয়ন প্রত্যাশীদের চলছে লবিং

    0
    257

    নূরুজ্জামান ফারুকী  নবীগঞ্জঃ  শুরু হয়ে গেছে ভার্চুয়াল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা। আগামী ডিসেম্বরে পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) ওই সময়ে ভোট করার প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে। নবীগঞ্জ পৌরসভাসহ প্রায় আড়াইশ’র মতো পৌরসভায় ভোট হতে পারে। এই লক্ষ্যে ইসি সচিবালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। এ ঘোষনার পর থেকেই নবীগঞ্জ পৌরসভায় আগাম মাঠে সরব মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। কেউ কেউ৮ নীরবে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকেই ভার্চুয়াল প্রচারণায় সরব। প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা তাদের নেতার বিভিন্ন ছবিসহ উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পোস্ট দিতে সক্রিয় রয়েছেন। এবারের নির্বাচনে সরকারী দল আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নে প্রত্যাশী। এতে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি।
    নবীগঞ্জ পৌরসভায় সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর। সে হিসেব অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। মিডিয়াতে এমন এ খবর শুনেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখনই মাঠে নেমে পড়েছেন। তবে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে অনেকেই দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা জেলা-কেন্দ্রে নানা লবিং তদবির করছেন বলেও জানা গেছে।
    স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এবার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন- সাবেক মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ মিলু, নবীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ এটিএম সালাম, নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল। গেল নির্বাচনেও তারা নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। অবেশেষে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী।
    আসন্ন নির্বাচনে এবার নতুন চমক সাইফুল জাহান চৌধুরী। তিনি এবার প্রার্থী হবেন বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাইফুল জাহান চৌধুরী ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু এখন নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী এমনকি দল তাকে মূল্যায়ন করবে বলেও আশাবাদী।
    গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল বর্তমান সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপির জামাতা। তার সমর্থকরা দাবী করছেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাহেল চৌধুরী যুব সমাজের আইকন, একজন সৎ ও কিন ইমেইজের বঙ্গবন্ধুর আর্দশের সৈনিক। এবার দলীয় মনোনয়নে তিনি চমক দেখাতে পারেন বলেও মনে করেন তারা।
    তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা বলছেন- একটানা ৩ বারের নির্বাচিত মেয়র তিনি, হেবিওয়েট প্রার্থী হিসেবে ও সিনিয়র এবং সৎ, সহজ সরল, সাদামাটা ব্যক্তি হিসেবে তাকেই দল মূল্যায়ন করবে।
    অপরদিকে মোস্তাক আহমেদ মিলুর সমর্থকরা বলছেন- তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সক্রিয় নেতা। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে এখন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়ীত্বে আছেন। এ হিসেবে দল তাকেই মনোনয়ন দেবে।
    হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা তাতীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মালিক, বর্তমান পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১, জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবিলীগের ১ম যুগ্ম সাধারন সম্পাদক তিন বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর এটিএম সালাম এর নামও শুনা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে।
    অপরদিকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি। এখন পর্যন্ত বিএনপি থেকে আলোচনায় আছেন- বর্তমান মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ছাবির আহমদ চৌধুরী। তার সমর্থকরা মনে করছেন, বিএনপির হেবিওয়েট প্রার্থী ছাবির আহমদ চৌধুরী নবীগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছেন, সেজন্য দল তাকে মনোনয়ন দেবে।
    নির্বাচনী হাওয়া পুরোদমে শুরু না হলেও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে চলছে প্রচারনা। অপরদিকে বসে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। স্ব স্ব ওয়ার্ডে চলছে গণসংযোগ। পুরাতন প্রার্থীর পাশাপাশি নতুন মুখও আসছে ৯টি ওয়ার্ডে।
    উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় নবীগঞ্জ পৌরসভা। প্রতিষ্ঠার পর থেকে টানা তিন বার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী। গেল নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। দলীয় কোন্দলের কারণে নৌকার প্রার্থীর পরাজয় বলেও অনেকেই মনে করেন। ওই নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে দায়ীত্ব পালন করছেন ছাবির আহমেদ চৌধুরী।