নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে হবে এিমুখী লড়াই

    0
    282

    নূরুজ্জামান ফারুকী নবীগঞ্জ:  নবীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল আলম সুমন হাই কোর্টে রীটের মাধ্যমে প্রার্থীতা ফিরে পাওয়ার কারণে এই ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা।পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল, বিএনপির বর্তমান মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল আলম সুমন।১৯৯৭ সালের পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

    ওই সময়ে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে টানা ৩ বার মেয়র হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী, পরে ২০১৬ সালে হাত ছাড়া হয়ে যায় ক্ষমতাসীন দলের আসনটি। বর্তমান মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন সাবেক তিন বারের মেয়র তোফাজ্জল ইসলাম চৌধুরী।

    এই বার তিনি মনোয়ন চেয়ে না পাওয়ায় নির্বাচনে অংশ নেননি।এবার মনোনয়ন পান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল। বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান পৌর বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী আর এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোন বিদ্রেহী প্রার্থী না থাকলেও স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটের মাঠে লড়ছেন নবীগঞ্জ মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম চৌধুরী সুমন। নিদিষ্ট একটি ভোট ব্যাংক থাকায় আওয়ামী লীগ বা বিএনপি, দুই প্রার্থীর সাথে সমান তালে লড়ে যাবেন বলে মনে করছেন অনেক ভোটার।এ বিষয়ে ওসমানী রোডের অভয়নগর এলাকার ভোটার মো. শামিম মিয়া বলেন, তিনজনই হেভিওয়েট প্রার্থী। এবার দলীয় প্রতীক থাকায় ত্রিমুখী লড়াই জমবে। শান্তিপূর্ণ ভোটের আশা করছি। এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি, কাকে ভোট দেব।আওয়ামী লীগ প্রার্থী, গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। যে কারণে দলীয় নেতৃবৃন্দ সবাই আমার পক্ষে কাজ করছেন।

    ইতোমধ্যে নৌকার পক্ষে মানুষের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ অনেকটা ভাল। তবে আমার প্রতিপক্ষ নির্বাচনে ব্যাপক কালো টাকার ছড়াচ্ছেন। তবে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।বিএনপির দলিয় প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি বিগত ৫ বছরে পৌরসভায় যে উন্নয়ন করেছি পূর্বে তা হয়নি। যে কারণে আমার কাজ দেখেই জনগণ আমাকে মূল্যায়ন করবে। নৌকার কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন সময় প্রচার-প্রচারণায় বাধা হয়ে দাড়াচ্ছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, বিএনপি সেটা প্রত্যাশা করে।’এ ব্যাপারে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল আলম সুমন বলেন, ‘প্রথমবারের মতো মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছেন।তিনি আরো বলেন, লোকাল নির্বাচনে দলিয় প্রার্থী তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। এখানে জনগণ প্রার্থী দেখেই ভোট দেয়। এছাড়া দলিয় প্রার্থী জনগণের সকল কথা শুনতে পারে না। সেক্ষেত্রে আমি যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী আমাকেই ভোট দেবে জনগণ। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি।’

    নবীগঞ্জ উপজেলা সদরে পৌরসভাটি অবস্থিত।সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে স্থাপিত নবীগঞ্জ পৌরসভা ২০০৫ সালে ‘গ’ থেকে ‘খ’ শ্রেণীতে ও ২০১৩ সালে খ থেকে ক (প্রথম) শ্রেনীতে উন্নিত হয়। ১ম শ্রেণীর খেতাব প্রাপ্ত এ পৌরসভার আয়তন ৯ দশমিক ৭ কিলোমিটার। পৌর এলাকায় রয়েছে ৩টি হাটবাজার, ১টি কসাইখানা, ৪২ কিলোমিটার পাকা রাস্তা, ইট সলিং রাস্তা ৮.১ কিলোমিটার, কাঁচারাস্তা ৩.৯ কিলোমিটার। এ ছাড়াও পাঁকা ড্রেন রয়েছে ৬ কিলোমিটার, কাঁচা ড্রেন ৪.১ কিলোমিটার, সড়কবাতি ৫’শটি।সার্বিক বিষয়ে সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার দেবশ্রী দাশ পার্লি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ১৬ই জানুয়ারি তারিখে ১০টি কেন্দ্র  ও ৪৮টি বুথের মাধ্যমে ব্যালটে ভোট গ্রহন করা হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৮৬৩ জন ও নারী ভোটার ৯ হাজার ২৩৭ জন।