নবীগঞ্জে শতক বাজার কমিটি নিয়ে সংঘর্ষের রেশ কাটেনি

    0
    141

    “বেপরোয়া সামছু বাহিনী”!

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৭আগস্ট:মতিউর রহমান মুন্না: নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের শতক বাজারটি ওই এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। ওই বাজারের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’টি পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। উভয় পক্ষের মধ্যেই পাল্টাপাল্টি মামলা চলছে। এখনো পর্যন্ত এর রেশ কাটেনি। আবারো বড় ধরণের সংঘর্ষের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

    সরেজমিনে এলাকাবাসীর সাথে আলাপ হলে তারা এসব ঘটনার জন্য সামছু মিয়া ও তার ছেলে আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে এস্তার অভিযোগ করেন। অনেক নিরীহ মানুষকে লাঞ্ছিত করাসহ সম্প্রতি ঘটে যাওয়া শতক বাজারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনার নায়কও ছিল সামছু মিয়া ও তার ছেলে আব্দুল মতিন। উক্ত সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।

    গুরুতর আহতদের সিলেট ওসামানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছিল। এ ঘটনায় গুরুতর আহত সাবের আহমদ চৌধুরী বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় ৩৬ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন।

    মামলার খবর পেয়ে সামছু মিয়াসহ তার লোকজন বেপরোয়া হয়ে উঠে। পরে নিরাপত্তার জন্য সাবের চৌধুরী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এর জবাবে সামছু মিয়া বিজ্ঞ আদালতে দরখাস্ত মামলা নং-২২০/১৫ইং দায়ের করেন। উক্ত মামলা পাল্টা মামলার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে উপজেলার দিনারপুর পরগনার শতক এলাকার জনপদ।

    এ ব্যাপারে শতক বাজারে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, শতক বাজারের সংঘর্ষের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বয়স্ক আব্দুল জব্বার নামে এক ব্যক্তিকে লাঞ্ছিত করে সামছু মিয়া ও তার লোকজন। ভয়ে কারো কাছে বিচার দেয়ার সাহস পাননি তিনি।

    ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, দীর্ঘদিন ধরে শতক বাজার কমিটি হয়নি। সম্প্রতি ওই এলাকার লন্ডন প্রবাসী মাজহারুল ইসলাম বজলু বাড়িতে আসার পর স্থানীয় লোকদের সাথে আলাপ করে নির্বাচনের উদ্যোগ নেন। বিগত ১৭ জুলাই সোমবার গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্টিত হয়। মোট ভোটার করা হয় ১৩ জন। এরমধ্যে ৭ মৌজার ১২ জন এবং বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ১ জন।

    নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ার স্বার্থে স্থানীয় ওর্য়াড মেম্বার আলফাজ মোহাম্মদ আনফালকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু উক্ত মেম্বার ভোটার না হয়েও নিজের পছন্দের সভাপতি প্রার্থী ভোট প্রদান করায় সভাপতি প্রার্থী সাবের আহমদ চৌধুরী ৬, দিলাওর মিয়া ৬ ও সাইফুল ইসলাম চৌধুরী পান ২ ভোট পান।

    পরে আনফাল মেম্বারসহ নির্বাচনে দায়িত্বরতরা তাদের মনগড়াভাবে দিলাওর মিয়াকে সভাপতি ঘোষনা করলে বিপত্তি ঘটে। তাৎক্ষনিকভাবে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সাবের চৌধুরী লিখিত আবেদন করে ১৪ ভোটের কারণ জানতে চান।

    এ নিয়ে ৩০ জুলাই সালিস বৈঠক বসলে উপস্থিত মুরুব্বীয়ানদের আলোচনার এক পর্যায়ে সামছু মিয়া ও তার ছেলে আব্দুল মতিন তাদের লোক দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ফলে সংঘর্ষের সুত্রপাত ঘটে। স্থানীয় লোকজন বলেন, মেম্বার আনফাল অবৈধ ভোট প্রয়োগ না করলে এবং সামছু মিয়ার পক্ষের লোকজন হট্রগোল সৃষ্টি না করলে এত বড় সংঘর্ষ ঘটতো না।

    সামছু মিয়া ওই এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে ত্রাস হিসেবে পরিচিত। এ ব্যাপারে সামছু মিয়ার সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় এবং বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।