নবীগঞ্জে ভুয়া টিপসইয়ে সরকারী চাল আত্মসাতের অভিযোগ

    0
    225

    নূরুজ্জামান ফারুকী নবীগঞ্জ থেকেঃ নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারের বিরুদ্ধে ১০ টাকা কেজি দরের চাল কার্ডধারী গ্রহীতাদের নামে ভুয়া টিপসই দিয়ে ১ মাসের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি এর কারণ জানতে চাইলে কার্ড ছিড়ে ফেলে কার্ডধারীদের লাঞ্ছিত করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় ১৫ জন কাhর্ডধারী সুবিধাভোগীরা ডিলার লিটন চন্দ্র দেবের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
    অভিযোগের বিবরণে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির জন্য ১২শ জনের তালিকা তৈরি করেন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। ওই ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১ থেকে ৪নং ওয়ার্ড ও ৫নং ওয়ার্ডের কয়েকজনের নামসহ তালিকায় ৩৫০ জন সুবিধাভোগীর নামে কার্ড রয়েছে। এদের মাঝে চাল বিক্রির দায়িত্ব পান ডিলার লিটন চন্দ্র দেব। বাকি ৮৫০ জন সুবিধাভোগী ইউপি চেয়ারম্যানের নিজ গ্রামসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের লোকজন। চলতি মে মাসের চাল এখনো বিতরণ করা হয়নি। গত এপ্রিল মাসের শেষের দিকে চাল আনতে গেলে টিপ সই রেখে এপ্রিল মাসের চাল দেয়া হয় সুবিধাভোগী গ্রহীতাদের। তখন সময় পূর্বের মার্চ মাসের চাল না দিয়েই চাল প্রাপ্তি গ্রহীতাদের টিপসই দেয়ার স্থানে ডিলার নিজে মার্চ মাসের টিপ সই দিয়ে মার্চ মাসের চাল আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এর প্রতিবাদ করায় অনেকেই হয়েছেন লাঞ্ছিত।
    অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত ২৬ এপ্রিল চাল বিক্রি হচ্ছে এমন খবরে ওই ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের এক কার্ডধারী দিনমজুর ব্যক্তির কার্ড নিয়ে তার স্ত্রী চালের জন্য গিয়েছিলেন। স্বামী না গিয়ে সে কেন গেল এ কারণে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তার কার্ডটি ছিড়ে ফেলা হয়। এমনকি তাকে আর কোন দিন চাল দেয়া হবে বলে বিদায় করে দেয়া হয়। একই দিন আরেক ব্যক্তির টিপসই রেখে চাল না দিয়েই বিদায় করে দেয়া হয়। এমন অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ওই এলাকার জনসাধারণের। লোকজনের ভিতরে নানা ক্ষোভ বিরাজ করলেও প্রকাশ্যে তা বলতে পারেননা অদৃশ্য কারনে।
    এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে- জননী ভান্ডার নামক প্রতিষ্ঠানের প্রোপ্রাইটর ডিলার লিটন চন্দ্র দেব বলেন- ‘ওই মহিলা চেয়ারম্যানের সাথে বেয়াদবি করছে।’ তিনি ভূয়া টিপ সই দিয়ে চাল আত্মসাতের অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবী করেন। ডিলার বলেন- তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ্য থাকায় কিছু লোকজনের চাল রয়ে গেছে।
    এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে বেকার মানুষের ঘরে খাবার নেই। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা মঙ্গলবার দুপুরে গণস্বাক্ষর দিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
    এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন- ‘অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করা হচ্ছে, যদি চাল আত্মসাৎ বা আত্মসাতের চেষ্টাও করছে এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে এই ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
    গজনাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হত দরিদ্রদের ভাষ্য, করোনা পরিস্থিতিতে সরকার দফায় দফায় বিভিন্ন বরাদ্দ দিলেও তারা কিছুই পাচ্ছেন না। ফলে না খেয়েই দিন কাটছে অনেকের। এই ইউনিয়নে প্রশাসনের নজড়দারী বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।