নবীগঞ্জে অসংখ্য পরিবার পানি বন্দিঃমানবেতর জীবন যাপন

    0
    312

     “কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী এলাকায় অকাল বন্যা”

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২২জুলাই,মতিউর রহমান মুন্নাঃ নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর তীরবর্তী এলাকা উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক গ্রাম, কসবা, চরগাঁও, উমরপুর, গালিমপুর, মাধবপুর, কুমারকাঁদা (একাংশ), আহম্মদপুর, ফাদুল্লা, রাধাপুর, জামারগাঁও, রাধাপুর প্রাইমারী স্কুলসহ বেশ কিছু এলাকা ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। বাড়ি-ঘরে আবার অনেকের বাড়ির আঙ্গিনায় পানি উঠায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

    তলিয়ে গেছে প্রায় কয়েক শত একর জমির হালি চারা। এনিয়ে কৃষকরা রয়েছেন মহা দুঃচিন্তায়। অপর দিকে অনেক লোকদের বেশ ক’য়েকটি মৎস্য খামার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। এছাড়া কুশিয়ারা ডাইকের উপর পানি চৈ চৈ করছে। রাধাপুর নানু মিয়ার বাড়ির নিকটে ডাইকে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহুর্তে ওই ডাইক ভেঙ্গে যেতে পারে বলে ইউপি মেম্বার ফখরু মিয়া এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।

    ওই ডাইক ভেঙ্গে গেলে নবীগঞ্জের কয়েক’টি ইউনিয়নে বন্যায় প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হবে বলে আশংখ্যা করছেন এলাকাবাসী। ডাইকে ফাটল দেখাার কারনে আতংকে রয়েছেন ওই এলাকার লোকজন। এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে কুশিয়ারা নদীর ওই ডাইকের মেরামত করে অকাল বন্যার হাত থেকে নবীগঞ্জ বাসীকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এছাড়া গত ক’দিন ধরে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আসছিল।

    ইতিমধ্যে উল্লেখিত গ্রামের সিংহ ভাগ লোকদের বাড়িঘরে ও আঙ্গিনায় পানি উঠায় বন্দি জীবন যাপন করছেন লোকজন। ঘর থেকে বের হতে হলেই কলাগাছের ভেলা, নৌকা বা বাশেঁর সাকোঁ ব্যবহার করতে হয়। গৃহিনীরা থালাবাসন ধৌত করার কাজ বারান্দায় বসেই সম্পন্ন করতে দেখা যাচ্ছে। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে এ অ লের মানুষের দূর্বিষ জীবন যাপন করতে হয়। নদীর তীরবর্তী গ্রাম ও বাড়িঘর হওয়ার কারনে এ দূর্ভোগের শিকার হন। অনেক পরিবারের লোকজন হাটুঁ পানিতে ভিজে ঘরে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। গতকাল দিন ব্যাপী ওই এলাকায় সরজমিনে গেলে এমন দৃশ্য গুলো চোখেঁ পড়ে। এ সময় এ প্রতিনিধির সাথে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সমাজ সেবক গোলাম হোসেনও ছিলেন।

    এ ব্যাপারে গোলাম হোসেন বলেন, প্রতি বছরই নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে শত শত পরিবার নিঃস্ব হচ্ছে। এরমধ্যে বর্ষা মৌসুমে মানুষের দূর্ভোগের অন্ত নেই। কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে নদীর তীরবর্তী গ্রামের বাড়িঘরে ও আঙ্গিনায় পানি উঠে অকাল বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এশিয়ার র্সববৃহৎ গ্যাস কুপ বিবিয়ানা। এর পার্শ্ববর্তী গ্রাম গুলোর লোকজন পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছে গত ক’দিন ধরে। প্রতিদিনই পানি বাড়ছে এবং নতুন নতুন বাড়িঘর প্লাবিত হচ্ছে। মানুষের দূর্ভোগ ও কষ্টের শেষ নেই। স্কুল কলেজ পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীরা রয়েছে বিপাকে। সমাজ সেবক গোলাম হোসেন দীঘলবাক ইউনিয়নের কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী মানুষদের পাশে দাড়িয়ে সহযোগিতা করার জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জোরদাবী জানিয়েছে।

    এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী বলেন, কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী গ্রাম গুলোর লোকজন পানি বন্দি অবস্থার খবর পেয়েছি। সরজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, রবিবারে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার উপরে ছিল, বর্তমানে বিপদ সীমার নীচে রয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ঘটনাটি অতি গুরুতের সহিত মনিটরিং করা হচ্ছে। অবস্থা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। স্থানীয় লোকজন বলেন, কুশিয়ারা ভাঙ্গন ও অকাল বন্যার কবল থেকে নদীর তীরবর্তী গ্রাম গুলোকে স্থায়ীভাবে রক্ষা করার জন্য সরকারের পক্ষে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এবং চলমান পানি বন্দি পরিবারের প্রতি সহযোগিতার দাবী জানান এলাকাবাসী।