নন্দরানী চা বাগানে হত্যাকান্ডের দুইবছরঃনিরপরাধ অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছে

    0
    210

    আমারসিলেট24ডটকম,১০ফেব্রুয়ারী,শাব্বির এলাহীমৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বহুল আলোচিত নন্দরানী চা বাগানে দখল হামলায় এক কর্মকর্তাসহ দুই ব্যক্তিকে হত্যা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঘটনার দুই বছর পুর্তি আজ সোমবার। দুই বছরেও মামলার কোন কিনারা করতে পারেনি আইন শৃংখলা বাহিনী। ফলে মামলার অনেক নিরপরাধ আসামী গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মামলার অধিকাংশ আসামী আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় মামলাটি রাজনৈতিক বিবেচনায় বাতিলের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিহতদের পরিবার বিচারের আশায় দিন কাটাচ্ছেন।

    কমলগঞ্জ উপজেলার  মাধবপুর ইউনিয়নের নন্দনরানী চা বাগানের মালিকানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২০১২ সালের  ১০ ফেব্র“য়ারি মৌলভীবাজারের সরকার দলীয় এক ব্যবসায়ী কমলগঞ্জের আওয়ামীলীগের কিছু সংখ্যক নেতা ও পুলিশকে ম্যানেজ করে নন্দররানী চা বাগানটি দখল নিতে চাইলে উভয় পক্ষে ব্যাপক গুলাগুলি, হামলা, লুট পাটের ঘটনা ঘটে। এতে নন্দরানী বাগানের দায়িত্বরত সাউথ এশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল লিঃ-এর ঢাকা অফিসের সচিব বয়োবৃদ্ধ কাজী ফখরুল ইসলাম ও হামলায় অংশ নেওয়া জাহেদ নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। হত্যাকান্ডের পর উভয় পক্ষ কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা ও লুটপাটের মামলা করে। নন্দরানী চা বাগানের মালিক শাহীরুল ইসলাম চৌধুরী কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দেক আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান, মাধবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আসিদ আলীসহ প্রায় ১৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে আর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করা হয়।

     

    ঘটনার এক দিন পূর্বে থানায় নিরাপত্তামূলক জিডি করার পরও পুলিশি উপস্থিতিতে এত বড় দূর্ঘটনা ঘটায় দায়িত্বে অবহেলার দায়ে তৎকালীন কমলগঞ্জ থানার ওসি অমূল্য কুমার চৌধুরীকে তাৎক্ষনিক বদলী করে বরিশাল পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু মামলাটি গত দুই বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি। রাজনীতিক প্রভাবে তদন্তে পুলিশি ধীর গতির কারণে প্রাথমিকভাবে মামলাটি ডিবি পুলিশ হয়ে সর্বশেষ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় সিআইডি পুলিশের হাতে। দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও সিআইডি এ মামলার চার্জ গঠন করেনি। এতে করে মামলার আসামী হিসাবে নাম থাকায় অনেক নিরপরাধ লোক গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। শুধু তাই নয় নিহতের পরিবার বিচার কার্যক্রম শুরুর দিন গুনছেন। নিহত পরিবার দুই বছরেও কোন মামলাটি কুল কিনারা করতে না পারায় হতাশায় দিন কাটাছেন। বর্তমানে মামলার তদন্তকারী সিআইডির এসআই দিপঙ্কর রায় জানান, মামলার তদন্ত চলছে।  মামলার বাদী শাহীরুল ইসলাম চৌধুরী ও হামলায় নিহত চা বাগান কোম্পানীর কর্মকর্তা কাজী ফখরুল ইসলামের ছেলে কাজী রেদওয়ানুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে অভিযোগ করে বলেন, হত্যা মামলার আসামীরা জামিন না নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৌলভীবাজার আদালতের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় ,মৌলভীবাজারের জিপি এডভোকেট এ এস এম আজাদুর রহমান আজাদ এ মামলা (জিআর ১৬/২০১২) প্রত্যাহারে কোন সুপারিশ না করলেও পিপি এডভোকেট ভূবনেশ্বর পুরকায়স্থ রাজনৈতিক বিবেচনায় এ মামলাটি প্রত্যাহারের সুপারিশ করে তা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য ৩০/০৪/২০১৩ স্মারক ২২/১ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রেরণ করেছেন।