নওগাঁ-৬ উপ-নির্বাচন চায়ের কাপে ভোটের ঝড়! কে হচ্ছেন সাংসদ

    0
    347

    নাজমুল হক নাহিদ,আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি: আগামী ১৭অক্টোবর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের উপ-নির্বাচন। জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনের জনপদ। এই প্রথম উত্তরবঙ্গে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) আগামী ১৭অক্টোবর নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই উপ-নির্বাচনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শেষ হচ্ছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণার সকল কর্মকান্ড। নতুন পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন নিয়ে ভোটারদের মাঝে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদ নামে পরিচিত এই আসনে দীর্ঘদিন থেকে নেই কোন হানাহানি। তবে যে প্রার্থী বিজয়ী হোক না কেন শান্তিতে থাকতে চান এমন প্রত্যাশা এলাকাবাসীর। সুন্দর, শান্তিপূর্ন ও সহিংতাবিহীন একটি ভোট দেওয়ার পরিবেশ দাবী দুই উপজেলার ভোটারদের।

    ছোটখাটো দু’একটি সহিংসতা ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা ৩জন প্রার্থীই তাদের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনার কাজ চালিয়েছেন। তবে সাধারন মানুষদের মাঝে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করা যায়নি। ভোট নিয়ে গ্রামের প্রত্যন্ত অ লের মানুষদের মাঝে তেমন ভাবে উৎসাহ কিংবা আগ্রহ নেই বললেই চলে। তবে এবার ইভিএমের প্রতি মানুষদের একটু আগ্রহ দেখা গেছে। বিশেষ করে নতুন ভোটারদের মাঝে ইভিএমে ভোট দেওয়ার আগ্রহ অনেক বেশি। অপরদিকে প্রার্থীরা সাধারন মানুষদের মাঝে যার যার মতো করে প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস দিয়েছেন। তবে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলের প্রার্থীকে বিজয়ী না করলে ওই এলাকার চলমান উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডগুলো স্থবির হয়ে পড়বে বলে মত প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। জনগন ভোট দিয়ে কোন প্রার্থীকে বিজয়ী করে তা শুধু এখন দেখার অপেক্ষা।

    আওয়ামীলীগের মনোনিত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, আমি দুই উপজেলার মানুষের কাছে অতি পরিচিত একটি মানুষ। আওয়ামীলীগের দু:সময়ে আমার পরিবার ছিলো বাতিঘর। আওয়ামীলীগ করতে গিয়ে আমার এক ভাইকে সর্বহারা দিনে-দুপুরে জবাই করে হত্যা করেছে। আমি বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রেখে এলাকার উন্নয়নে মাদক, বাল্যবিবাহ বন্ধসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে এলাকাবাসীর পাশে থাকবো। আশা করছি এলাকার উন্নয়নে যেসব কাজ অসমাপ্ত রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে ও শান্তির সুবাতাস ধরে রাখতে এলাকাবাসী নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।

    বিএনপির মনোনিত প্রার্থী শেখ রেজাউল ইসলাম রেজু বলেন, নির্বাচনী প্রচারনা শুরু থেকে বাধাসহ নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। রাণীনগর উপজেলায় আমার কোন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন টাঙ্গাতে দেওয়া হয়নি। এমন কি রাণীনগর উপজেলাতে আমাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নির্বাচনী প্রচারনা কিংবা সভা করতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু আমার জন্মস্থান আত্রাই উপজেলাতে পাশাপাশি রয়েছে নৌকা ও ধানের শীষের পোস্টার ও ব্যানার। আমার প্রচারনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যদি নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হয় এবং ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন তাহলে আমি পাহাড় সমান ব্যবধানে বিজয়ী হবো।

    অপরদিকে ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির মনোনীত প্রার্থী ইন্তেখাব আলম রুবেল বলেন, আমি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোটারদের ভোট প্রদানে উৎসাহিত করার যুদ্ধে নেমেছি। কারণ বর্তমানে ভোটের প্রতি সাধারন মানুষদের ঘৃণা আর অবহেলার সৃষ্টি হয়েছে। আগে ভোটের মাঝে আনন্দ আর উৎসবের ভাব ছিলো। বর্তমানে ভোট কেন্দ্রে না গেলেও ভোট হয়ে যায় এমন ধারনা সাধারন মানুষদের মাঝে জন্ম নিয়েছে। সাধারন মানুষরা যদি আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আসে তবেই আমি নিজেকে জয়ী মনে করবো। সাধারন মানুষদের ভোট দেওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমার প্রধান লক্ষ্য।