দেশে হরতাল-অবরোধ ওভাঙচুরে কঠোর ব্যবস্থার দাবিতে

    0
    281

    আমারসিলেট 24ডটকম,২৯সেপ্টেম্বরঃ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর শাখার বিশাল কর্মী সম্মেলন গতকাল শনিবার বিকেলে নগরীর মুসলিম হলে মহানগর ছাত্রসেনা সভাপতি ছাত্রনেতা মুহাম্মদ শাহাদৎ হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
    সম্মেলন উদ্বোধন  করেন  মাইজভান্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন হযরত মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী (ম.জি.আ)। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জমাআতের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা এম এ মতিন। প্রধান বক্তা ছিলেন ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাত্রনেতা আবু নাছের মুহাম্মদ মুছা।

    শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য-হানাহানি বন্ধ করা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয়করণ-দুর্নীতি রোধ করা, পাবলিক পরীক্ষাগুলোতে ফল বিপর্যয়ের অবসান, মাদ্রাসা শিক্ষার স্বকীয়তা রক্ষা, শিক্ষার সকল স্তরে নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, গণিত ও সৃজনশীল বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, নাস্তিক্যবাদ ও জঙ্গিবাদ রুখতে সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং হরতাল-অবরোধ-ভাঙচুরসহ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী তৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ছাত্রসেনার এ কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

    সম্মেলনে উদ্বোধক হযরত সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী বলেন, ছাত্র সমাজ নানাভাবে অবক্ষয় ও বিপথগামিতার শিকার। মাদক ও নেশা জাতীয় দ্রব্যের অবাধ কেনাবেচার কারণে ছাত্র ও যুব সমাজের নৈতিক চরিত্রে ভয়াবহ ধস নেমেছে। দেশের আগামী দিনের কর্ণধার সম্ভাবনাময়ী যুব ও ছাত্র সমাজকে অবক্ষয়ের পথ থেকে ফিরিয়ে রাখতে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নিতে হবে। তারা যাতে আদর্শনিষ্ঠ, সচ্চরিত্রবান, দেশপ্রেমিক ও সৎ হিসেবে এবং নৈতিক চেতনায় বেড়ে উঠতে পারে সেভাবে তাদের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। কুরআন-সুন্নাহর শাশ্বত শিক্ষার আলোকে ও আউলিয়ায়ে কেরামের জীবন দর্শনের ভিত্তিতে তাদের জীবন পরিচালনার সুযোগ সৃষ্টি করার ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

    প্রধান অতিথি ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন বলেন, দেশবাসী আজ বড় দুই জোটের স্বেচ্ছাচারিতা ও জবরদস্তির রাজনীতির কাছে জিম্মি। পাঁচ বছর পর পর ক্ষমতার পালাবদল হলেও জনগণের ভাগ্যবদল হয় না। একেকটি সরকার জনরায় নিয়ে ক্ষমতায় বসে। অথচ দেশ পরিচালনায় জনগণের ইচ্ছা-প্রত্যাশাকে তারা কোনো পাত্তাই দেয় না। তিনি বলেন, বড় দুই জোটের ক্ষমতাকেন্দ্রিক বিদ্বেষমুখী রাজনীতি চলতে থাকলে দেশ আবারো অসাংবিধানিক তৃতীয় শক্তির খপ্পরে চলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। অনির্বাচিত-অগণতান্ত্রিক শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে দুই জোটই দায়ী থাকবে। দুই নেত্রীকে তখন আবারো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।

    এম এ মতিন বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি গার্মেন্টস শিল্পে ভয়াবহ অরাজকতা শুরু হয়েছে। গার্মেন্টস কর্মীদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙে দিচ্ছে।
    সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন সম্মেলন প্রস্ত্ততি কমিটির আহবায়ক জি এম শাহাদাত হোসাইন মানিক। সম্মেলনের প্রস্তাবনা পাঠ করেন নগর ছাত্রসেনার সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুলাহ রায়হান খান।

    এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক বক্তা পীরে তরিকত মাওলানা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী,

    ইসলামী ফ্রন্ট নগর সভাপতি মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম জেহাদী, ছাত্রসেনা সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আখতার হোসেন চৌধুরী।

    বিশেষ বক্তা ছিলেন ইসলামী ফ্রন্ট নগর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জাকের হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ নূর হোসাইন, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মাস্টার আবুল হোসাইন, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন নেজামী, সংগঠক সৈয়দ মুহাম্মদ আবু আজম, মাওলানা সৈয়দ আমান উলাহ আমান সমরকন্দী, মাওলানা ইয়াছিন আনসারী আল মাদানী, এডভোকেট মুহাম্মদ ইকবাল হাছান, ছাত্রসেনা সাবেক নগর সভাপতি মুহাম্মদ এনামুল হক, যুব সেনা নেতা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন, মাওলানা আহমদুলাহ ফোরকান খান, হাবিবুল মোস্তফা ছিদ্দিকী, মাওলানা নুরুচ্ছাফা আলকাদেরী, অধ্যাপক হামিদুলাহ, এইচ.এম. শহিদুলাহ, জামাল উদ্দিন খোকন, আব্দুল করিম সেলিম, এইচ এম ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা আশরাফ হোসেন আলকাদেরী।

    ছাত্রসেনা মহানগর নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাসুম বিলাহ চৌধুরী, বশির আহমদ চৌধুরী, ফরিদুল ইসলাম, দিদারুল ইসলাম, মুহাম্মদ সাইফুল আলম, মুহাম্মদ রিয়াজ, মুহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল, এম এ মনসুর, মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, মুহাম্মদ মারুফ রেজা, মুহাম্মদ হুমায়ূন কবির প্রমুখ।

    প্রধান বক্তা ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় সভাপতি আবু নাছের মুহাম্মদ মুছা বলেন, ছাত্র রাজনীতির নামে আজ পেশীশক্তি, টেন্ডারবাজি ও ক্যাম্পাস দখলের রাজনীতি চলছে। ছাত্রসেনা ছাত্র রাজনীতিতে গুণগত ও নীতিগত পরিবর্তন আনতে সক্রিয় রয়েছে। ছাত্রসেনার ছাত্রবান্ধব গঠনমূলক ছাত্র আন্দোলনকে চূড়ান্ত সফলতায় নিয়ে যেতে তিনি ছাত্র সমাজের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।

    সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রনেতা শাহাদাত হোসাইন বলেন, চলমান অবক্ষয়গ্রস্ত ক্ষমতাকেন্দ্রিক ছাত্র রাজনীতির বিপরীতে ছাত্রসেনার আন্দোলন। আমরা কাউকে অস্ত্র বা টাকা দিতে পারবো না। কিন্তু একজন ছাত্রের মেধা-মনন-চিন্তাধারার বিকাশে ও নৈতিকতার উন্নয়নের দীক্ষাই দিয়ে যাবে আমরা চিরকাল।