দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত-৩৩,এক পরিবারেই-৭ জন

    0
    205

    আইইডিসিআর-এর ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যে ৩৩ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত বলে চিহ্নিত হয়েছেন, তাদের সাতজনই একই  পরিবারের। তারা মাদারীপুরের শিবচরের এক ইতালিফেরত প্রবাসীর পরিবারের সদস্য ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই পরিবারটির সংক্রমণ চিহ্নিত হওয়ার পরই সরকারিভাবে শিবচরকে লকডাউন করার সিদ্ধান্ত হয়।

    বিদেশফেরত ব্যক্তিদের জন্য জারি করা স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ লঙ্ঘণ করে অসতর্ক চলাফেরা ও আচরণের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিটি এতগুলো মানুষকে সংক্রমিত করেছেন বলে একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।

    শিবচরে এই সংক্রমণের শুরু হয় ইতালিফেরত দুই প্রবাসীর মাধ্যমে। তারা দু’জন বন্ধু। প্রথমেই তাদের কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরে তাদের আত্মীয়স্বজনকে পরীক্ষা করে দেখা যায়, একজনের বাবা, স্ত্রী, দুই সন্তান, শ্বাশুড়ি এবং শ্যালকের স্ত্রীও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। ওই শ্বাশুড়ি, শ্যালকের স্ত্রী ও ইতালিফেরত একজন এখন মাদারিপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর বাকি পাঁচজন অর্থাৎ ওই বাবা, স্ত্রী, দুই সন্তান ও ইতালিফেরত অন্য প্রবাসীকে নিয়ে আসা হয়েছে ঢাকায়।

    শুরু থেকেই সরকারিভাবে বলা হচ্ছে, যারা বিদেশ থেকে আসছেন তাদের স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে। কিন্তু এই নির্দেশ কার্যকর করাটাই সবচেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। শিবচরে চলতি মাসেই প্রায় সাতশ প্রবাসী ফিরেছেন।

    শিবচরের এই সংক্রমণের তথ্য দেওয়া ওই কর্মকর্তা জানান, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানুষজনকে ঘরে আটকে রাখাটাই তাদের জন্য সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এক বাড়িতে গিয়েছি, সে বাড়ির সবাই হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে। সবার ঘরের ভেতরে থাকার কথা। কিন্তু ঢুকে দেখি সেখান থেকে একজন ফেরিঅলা বের হচ্ছেন। বাড়ির সবাই এই ফেরিঅলার কাছ থেকে কেনাকাটা করছেন।

    ছয়জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো প্রবাসীর বিষয়ে তথ্য দেওয়া ওই কর্মকর্তা জানান, তিনি গত ৭ মার্চ বাংলাদেশে ফেরেন। এর একদিন পরেই বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়ার খবর প্রকাশ হয়। এরপর সারা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যেই একধরণের উদ্বেগ দেখা দেয়।

    কিন্তু ইতালিফেরত ওই ব্যক্তি তার বাড়ির ও শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের সঙ্গে মেলামেশা অব্যহত রাখেন। ১১ মার্চ ওই ব্যক্তিটির শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর তিনি মাদারীপুরের চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকায় আসেন। ঢাকাতে পরীক্ষায় তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত বলে ধরা পড়েন। সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকা থেকে প্রতিনিধিদল শিবচরে যায় ও তার পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টাইনে নেয়। ধীরে ধীরে পরিবারের বাকি সদস্যদের মধ্যেও উপসর্গ দেখা দেয় ও তারা একে একে আক্রান্ত বলে পরীক্ষায় জানা যায়।