দেশের উত্তরের জেলাগুলোতে আগাম বন্যাঃপরিস্থিতি অবনতি

    1
    237

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,৪জুনগত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও সীমান্তের ওপারে উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে উত্তরের জেলাগুলোতে আগাম বন্যা দেখা দিয়েছে।

    রোববার সকালে থেকে তিস্তা এবং দুপুর থেকে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করায় কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, জামালপুর ও বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। এর পাশাপাশি ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।

    এদিকে,  তিস্তার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সলেডি স্প্যার-২ হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া গাইবান্ধা ফুলছড়ির সিংড়িয়া-রতনপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ দুই অংশে ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে।

    অব্যাহতভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গাইবান্ধা জেলা সদরসহ সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চর ও নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এরইমধ্যে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, আবাদী জমি ও রাস্তাঘাট।

    লালমনিরহাটে সকাল থেকে তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। ফলে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

    পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তিস্তায় পানি বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। উজানের ঢল নেমে আসা অব্যাহত থাকায় ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি বলেও তার দাবি।

    এরমধ্যেই তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বেশকিছু পরিবার। তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধিতে নীলফামারী জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

    কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমরসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। জেলার সদর, উলিপুর, চিলমারী, রাজিবপুর, রৌমারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার ২৩ ইউনিয়নের নদ-নদীর তীরবর্তী দেড় শতাধিক গ্রাম ও চরাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবনযাপন করছেন।

    এ অবস্থায় গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। গ্রামীণ কাঁচা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বানভাসী মানুষের এখন একমাত্র ভরসা নৌকা ও কলাগাছের ভেলা। বসতভিটায় পানি ঢুকে পড়ায় উঁচু স্থান ও উঁচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে অনেক পরিবার।

    বন্যাকবলিত জেলা কুড়িগ্রামের সাংবাদিক জনাব ইউনুস আলী সেখানকার পরিস্থিতি জানিয়ে রেডিও তেহরানকে বলেন, বর্ষাকালের  শুরুতেই এ আগাম বন্যা দেখে দুর্গত মানুষেরা আশংকা করছেন এ বছর তাদেরকে আরো কয়েক দফা বন্যা  মোকাবেলা করতে হবে।

    কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক এবিএম আজাদ জানান, বন্যাকবলিত এলাকার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহীদের কাছ থেকে বন্যা কবলিতদের তালিকা চাওয়া হয়েছে। তালিকা পেলে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে।

    সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম জানান, বন্যাকবলিতদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। আজই জেলা প্রশাসনে জমা দেয়া হবে।