দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে অপরাধ কমবেঃসুজন

    0
    234

    আমারসিলেট24ডটকম,০৯মেঃ অন্যায় কাজে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করেছে বিধায় নারায়ণগঞ্জের মতোঘটনা ঘটানোর সাহস পাচ্ছেতারা। এখন যেভাবে বেআইনি কাজ করছে তাতে একটা সময়এটা মহামারি আকার ধারণ করবে। গুম-খুনে র‌্যাবের সম্পৃক্ততা কোন বিচ্ছিন্নঘটনা না। অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে এইঅপরাধ কমে আসবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সুশাসনের জন্যনাগরিক (সুজন) আয়োজিত গুম ও অপহরণ : নাগরিক উদ্বেগ ও করণীয় শীর্ষক গোলটেবিলবৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
    সেমিনারে সাবেক নির্বাচন কমিশনারব্রিগ্রেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, অস্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমেসরকার গঠন করায় সরকার নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। যার কারণে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ও রাজনীতির ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। নারায়ণগঞ্জের হত্যার সঙ্গেজড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর হত্যার দায় থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যসেনাবাহিনী সংশ্লিষ্ট তিনজনকে চাকরিচ্যুত করেছে।
    তিনি বলেন, জাতিসংঘবাংলাদেশের এস গুম-খুন-অপহরণের পরিসংখ্যান চেয়েছে। এটা আমাদেরকে কি ইঙ্গিতদিচ্ছে? নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, নারায়ণগঞ্জেঅপহরণের পর সাত খুনে র‌্যাবের সম্পৃক্ততার অভিযোগের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্নঘটনা নয়। এই সরকার জনগণ নয়, র‌্যাব-পুলিশের কাঁধে ভর করে ক্ষমতায় এসেছে।তাই তারা সরকারের ঘাড়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। নাগরিক সমাজ এটার বিরুদ্ধেরুখে দাঁড়ালেই কেবল এর সমাধান করা সম্ভব হবে।
    তিনি বলেন, তিনজন র‌্যাবকর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় র‌্যাব এই ঘটনার সঙ্গেজড়িত। একই সঙ্গে সরকার এই হত্যার কারণ জানেন বলে তাদের অব্যাহতি দিয়েছেন।
    তিনিবলেন, অপরাধীরা অপরাধ করে দিব্যি দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিন্তুবিরোধীদলের কোনো নেতা অসুস্থ হলেও তাদেরকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দিচ্ছেনা। মিথ্যা মামলা দিয়ে অহেতুক তাদেরকে জেলে পাঠাচ্ছে।
    সুশাসনের জন্যনাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড.বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সরকারঅন্যায় কাজে ব্যবহার করেছে বলেই তারা আজ এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস পাচ্ছে।র‌্যাব গঠিত হয়েছে বিশেষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য। সর্বক্ষেত্রে সকলকাজে ব্যবহারের জন্য নয়। পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, চেইন অব কমান্ডসহবিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে কার্যকর করতে হবে। সেই সঙ্গের‌্যাবের ব্যবহার কমিয়ে আনারও পরামর্শ দেন তিনি।
    গবেষক ও কলামিষ্ট সৈয়দআবুল মকসুদ বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদেরদৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করলে এই অপরাধ কমে আসবে। এর জন্য সরকারেরসদিচ্ছা থাকতে হবে। তবেই এটা করা সম্ভব হবে।
    তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরসাবেক উপদেষ্টা এএসএম শাজাহান বলেন, যে সমাজে আইনের শাসন নেই, সেই সমাজেসমস্যারও সমাধান নেই। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী যেভাবে বেআইনি কাজ করছেতাতে এক সময় এটা মহামারী আকার ধারণ করবে। যা জাতির ধ্বংস বয়ে আনবে।
    তিনিবলেন, রাজনীতিতে ক্ষমতা ও কালো টাকা ব্যবহারের যে অপসাংস্কৃতি চালু হয়েছেতা থেকে বেরিয়ে এসে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না করলে এই সমস্যার সমাধান হবেনা।
    বিচারপতি কাজী ইবাদুল হক প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, খুন-গুম-অপহরণ হবে। কিন্তু সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে বিচারকরা কোনো বিচারকরতে পারবে না। তা হলে বিচার বিভাগ রাখার প্রয়োজন কি? বিচারকদের প্রতিঅনাস্থা থাকলে তো আপনি নিজেই বিচার করতে পারেন!
    তিনি বলেন, অপরাধীরা সবসময়ই অপরাধের আলামত রেখে যায়। এটাকে যতই ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হোক নাকেন, সেটা প্রকাশিত হবেই। অভিজ্ঞ লোক দিয়ে তদন্ত করলে হত্যাকা-ের সঠিক তথ্যবের হয়ে আসবে। সুজনের সভাপতি এম হাফিজের সভাপতিত্বে বৈঠকে মূল প্রবন্ধ পাঠকরেন সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব ও সুজনের নির্বাহী সদস্য আলী ইমাম মজুমদার।এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, সুজনের সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীরপ্রমুখ।