দুর্নীতির আখড়া নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

    0
    215

     নানা সমস্যায় জর্জড়িতঃঅভিযোগের পাহাড়

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৫জানুয়ারী,মতিউর রহমান মুন্নাঃ প্রয়োজনীয় লোকবল ও অব্যবস্থাপনার কারণে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বি ত হচ্ছে নবীগঞ্জবাসী। উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে।

    নানা সমস্যার মধ্যে হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে ভর্তিকৃত রোগীদের দূর্ভোগের সীমা নেই। বিছানাপত্র, ঔষধ ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট বিরাজ করছে। যে সব বিছানা চাদর, বালিশ ও মশারী রয়েছে তাও ময়লা যুক্ত। ডায়েরীয়াসহ বিভিন্ন রোগের পর্যাপ্ত ঔষধ পত্রের রয়েছে তীব্র সংকট। এছাড়া ময়লা আর্বজনা ও দূর্গদ্ধে ভরপুর অত্র হাসপাতাল। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব প্রকট। নি¤œ মানের খাবার পরিবেশন করারও অভিযোগ রয়েছে।

    এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে জেনারেটর নষ্ট থাকার ফলে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে ভুতুরে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে একটি অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন স্থাপিত হলেও দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ বিকল অবস্থায় রয়েছে।

    হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারের পদ শুণ্য থাকায় রোগীর চাপ সামলাতে না পেরে মেডিক্যাল এসিষ্ট্যান্ট দিয়ে জরুরী বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিশেষ করে হাসপাতালে কর্মরর্ত ডাক্তাররা রয়েছেন তাদের প্রাইভেট চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। হাসপাতালের ডিউটি চলাকলীন সময়ে তারা রোগী দেখেন প্রাইভেট চেম্বারে।

    অভিযোগ পাওয়া গেছে, জরুরী বিভাগ ও ডিসপেনসারীতে ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যের। টাকা ব্যতিত কোন কাজই হয় না। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সার্টিফিকেট বাণিজ্য। হাসপাতালের প্রায় সব ক’টি বৈদ্যুতিক পাকা অকেজো। এছাড়া হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে ময়লা আবর্জনা ও দূর্গন্ধের জন্য ভর্তিকৃত রোগীরা সুস্থ্য হওয়ার বদলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এখানে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যার যার মতো করে ডিউটি করছেন। ফলে আগত রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

    ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়োগপ্রাপ্ত বেশীর ভাগ ডাক্তারগণ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করায় জন দূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়ভাবে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বি ত হয়ে অনেকেই উপজেলা সদরে এসে ভিড় করেন। কিন্তু এখানেও পর্যাপ্ত পরিমানে চিকিৎসক না থাকায় যথাযথ ভাবে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিতকরণের কাজ চলছে প্রায় দুই বছর ধরে। ওই কাজে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। নবীগঞ্জবাসী অনতিবিলম্বে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শুন্য পদে ডাক্তার, জেনারেটর মেরামতসহ এক্স-রে মেশিন সচল এবং প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও ঔষধ সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।

    এদিকে, হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ইফতেখার হোসেন চৌধুরী বলেন- “আমাদের এখানে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে বলে আমরা টিক মত রোগীদের সেবা করতে হিমসিম খাচ্ছি, তবে যারা আছি আমরা সকালে একবার ও সন্ধায় একবার রাউন্ড দিয়ে থাকি। পর্যাপ্ত পরিমানের আয়া না থাকায় টিক মতো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে পারছেনা। তবে এই শূন্য পদ গুলো পূরন হলেই আমরা টিক রোগীদের সেবা করতে পারবো।

    কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রথীন্দ্র চন্দ্র দেব বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন- “আমাদের এখানে ডাক্তারের কোন শূণ্যতা নেই, পর্যাপ্ত পরিমানের ডাক্তার আছে। সব অভিযোগ মিথ্যা। আমরা রোগীদের টিক মতো সেবা দিচ্ছি।” তবে ঔষধ বিক্রি ও সার্টিফিকেট বাণিজ্যের কথাও তিনি অস্বিকার করে এটি সম্পূর্ন মিথ্যা অভিযোগ।