দাস-শ্রমিক হিসেবে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে বাংলাদেশী !

    0
    219

    আমারসিলেট24ডটকম,১৮অক্টোবরঃ দক্ষিণ থাইল্যান্ডে একটি চক্রের হাত থেকে গত ১ সপ্তাহে ১৩০ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত শনিবার দক্ষিণ থাইল্যান্ডের একটি রাবার বাগান থেকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে যাওয়া ৫৩ জনকে উদ্ধার করে থাই পুলিশ। ওই সময় মানব পাচারের অভিযোগে ২ থাই নাগরিককেও গ্রেপ্তার করা হয়। রাবার বাগানে আকস্মিকভাবে আবিষ্কৃত হওয়ার পর তাদের উদ্ধার করা হয়। তারও আগে থাইল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের একটি প্রত্যন্ত দ্বীপ থেকে আরও ৭৯ জনের একটি দলকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
    এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশিদের বিভিন্ন খামারে বা মাছধরার ব্যবসায় ক্রীতদাসের মতো কাজ করাচ্ছে বলে সংবাদ পায় বিবিসি। পরে বিবিসির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংবাদদাতা জোনাথন হেড থাইল্যান্ডে এমন একটি জায়গা ঘুরে দেখেন, যেখানে কমপক্ষে ১৩০ জন বাংলাদেশী পুরুষকে উন্নত চাকরির লোভ দেখিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা সবাই মানব পাচারের শিকার।
    এ বিষয়ে আজ শনিবার বিবিসি জানিয়েছে, ভালো বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে এসব বাংলাদেশিকে প্রলুব্ধ করা হয়েছিল, পরে তাদের আটক করে অপহরণ করা হয়। বাংলাদেশ ছাড়ার পর তাদেরকে ওষুধ খাইয়ে, হাত-পা বেঁধে নৌকায় করে থাইল্যোন্ড নিয়ে যাওয়া হয়। ওই নৌকায় প্রায় ৩০০ বন্দি ছিল। এর পর তাদেরকে থাইল্যান্ডের উপকূলে জঙ্গলের মধ্যে লুকানো কিছু ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং দাস-শ্রমিক হিসেবে বিক্রি করে দেয়া হয়।
    এদিকে মানবপাচারের ব্যাপারে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বছরই মানবপাচারকারীদের নিয়ন্ত্রণে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল থাই সরকার। কিন্তু পাচার হওয়া বাংলাদেশি উদ্ধারের ঘটনার পর ধারণা করা হচ্ছে যে, দেশটিতে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্র সক্রিয় রয়েছে।
    উদ্ধার পাবার পর আবদুর রহিম নামের একজন বাংলাদেশি বলছিলেন, তাদের জঙ্গলে নিয়ে রাখা হয়েছিল, কোনো খাবার দেওয়া হয়নি। ১০ দিন তারা শুধু পাতা খেয়ে বেঁচে ছিলেন। তিনি বলেন, থাই দালালরা তাকে এমন মারধর করেছে যে এখনো তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটেন। পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েকজন সম্ভবত তাদের ক্ষেত-খামারে বা মাছধরার নৌকায় কাজ দাস শ্রমিক হিসেবে করানো হয়। ৩ সপ্তাহ বন্দি থাকার পর একজন স্থানীয় জেলা প্রশাসন কর্মকর্তা- যিনি মানবপাচার রোধের জন্য কাজ করছেন তাদের উদ্ধার করেন। তবে অন্য আরো ৬০ জন এখন নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়েছে বলে করা হচ্ছে। থাইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ধরেই মানবপাচার একটি বড় সমস্যা। মাছ ধরার নৌকাগুলোতে দাস শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর অভিযোগ ওঠায় ইউরোপে সি-ফুড জাতীয় খাদ্যের বাজার হারাচ্ছে থাইল্যান্ড।