তেহরানে সুন্নি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার কথা ইরানের অস্বীকার

    0
    673

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৬আগস্টঃ ইরানের মসজিদ বিষয়ক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তেহরানে সুন্নি মুসলমানদের কোনো নিজস্ব মসজিদ নেই বলে যে গুজব প্রচার করা হচ্ছে তা চরমপন্থিদের অপপ্রচার মাত্র।

    এই সংস্থাটি জানিয়েছে, সারা ইরানে সুন্নি মুসলমানদের পরিচালিত বা তাদের নিজস্ব ১৫ হাজার মসজিদ রয়েছে যা শিয়া মুসলমানদের মসজিদের সংখ্যার চেয়েও বেশি। বর্তমানে তেহরানে সুন্নি ভাইদের নিয়ন্ত্রিত ৯টি মসজিদ সক্রিয় রয়েছে। (সংস্থাটির ওয়েব সাইটে এ সব মসজিদের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে)

    সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তেহরানের পুনাক নামক এলাকায় কথিত সুন্নি মুসলমানদের যে নামাজ কক্ষটি (মসজিদ নয়) গত বছর আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বন্ধ করে দেয়া হয় তা অনুমোদনপত্র বা লাইসেন্স বিকৃত করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছিল। এ ছাড়াও ওই নামাজ-কক্ষটিকে ইসলামের নামে চরমপন্থি বা সন্ত্রাসী চিন্তাধারা প্রচারের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল এবং সেখানে বিদেশী নাগরিকদের আকৃষ্ট করা হচ্ছিল।কয়েকটি আবাসিক ভবনের ইউনিট ভাড়া নিয়ে এই কেন্দ্র গড়ে তোলে একদল ব্যক্তি। ইরানের পৌরসভার পক্ষ থেকে বার বার সতর্ক করে দেয়ার পর ওই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়ার পদক্ষেপ নেয় সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ। বার বার সতর্ক করে দেয়ার পরও ওই কেন্দ্রটির ব্যক্তিরা তাদের তৎপরতা চালিয়ে যেতে থাকে। অবশেষে আদালতের নির্দেশে কথিত ওই মসজিদ বা নামাজ-কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

    ইসলামী বিধান অনুযায়ী মসজিদ হচ্ছে আল্লাহর ঘর যেখানে সব শ্রেণীর মুসলমানই প্রবেশ করতে ও ইবাদত করতে পারেন। তাই কোনো মসজিদকে সুন্নিদের বা শিয়াদের মসজিদ বলা বিভ্রান্তিকর। কারণ, শিয়া মুসলমানরা সুন্নি-প্রধান এলাকার মসজিদেও নামাজ আদায় ও ইবাদত করে থাকেন। অন্যদিকে সুন্নি মুসলমানরাও শিয়া প্রধান এলাকার মসজিদে নামাজ আদায় ও ইবাদত করে থাকেন।

    ইরানের মসজিদ বিষয়ক নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বলেছে, এমন সব গুজব প্রচারের সহায়ক কিছু করা উচিত হবে না যা মিথ্যা তথ্য ও প্রচারণার ভিত্তিতে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য বানানো বা ছড়ানো হয়েছে।

    সংস্থাটির বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ ধরনের কিছু কেন্দ্রকে মসজিদ হিসেবে উল্লেখ করে অবৈধ তৎপরতা চালানো হচ্ছিল যাতে মসজিদের সুবিধাকে অপব্যবহার করা যায়, ফলে আদালতের নির্দেশে এইসব কেন্দ্র ভেঙ্গে দেয়া হয় বা বন্ধ করে দেয়া হয়। এইসব কেন্দ্রের মধ্যে কোম শহরের একটি হুসাইনিয়ায়ও রয়েছে। (হুসাইনিয়া হচ্ছে শিয়া মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের অন্যতম কেন্দ্র)।’

    সংস্থাটির বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘কোনো রাজনৈতিক কারণে বা বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ওইসব কেন্দ্র বা ভবন ভেঙে দেয়া বা বন্ধ করে দেয়া হয়নি, কারণ অন্যান্য সুন্নি মসজিদগুলো পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। চরমপন্থি তৎপরতার কারণেই কথিত নামাজ-কক্ষটির পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া অনিবার্য হয়ে পড়েছিল। ওই কেন্দ্রটি হতে শত্রুদের জন্য প্রচারণার এমন সব খোরাক যোগানো হচ্ছিল যে যাতে এই মিথ্যা চিত্র বা পরিস্থিতি তুলে ধরা যায় যে ইরান পরিকল্পিতভাবে সুন্নিদের প্রতি বিদ্বেষ দেখাচ্ছে। যাই হোক সুন্নি মুসলমানদেরকে বিদেশী চক্রগুলোর নানা চক্রান্ত সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে যাতে তাদের কেউ এ ধরনের চক্রের ফাঁদে না পড়েন।’

    ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে শিয়া ও সুন্নি মুসলমানদেরকে সমান দৃষ্টিতে দেখা হয়। ফিলিস্তিন ইস্যু ইরানের এই নীতির উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। সেখানে ইসলামী জিহাদ ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সুন্নি মাজহাবের অনুসারী হওয়া সত্ত্বেও ইরান তাদের সর্বাত্মক সহায়তা ও সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে শিয়া মাজহাবের অনুসারী লেবাননের হিজবুল্লাহ ও তার আওতাভুক্ত সবাইকে সহায়তা দিয়ে আসছে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান। সুত্রঃইরনা