তেঁতুলের আচার খেতে খেতে বাড়ি ফিরতাম : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

    0
    242

    আমারসিলেটটোয়েন্টিফোর,০৭ সেপ্টেম্বর  : সাবেক জোট সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির দুই গুণ, দুর্নীতি আর মানুষ খুন। আজ বিকেলে রাজধানীর লালবাগ-কোতয়ালী এলাকায় বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে আজিমপুর গার্লস স্কুল প্রাঙ্গণে এক জনসভায় দেয়া প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজকে সরকারি করার কথা ঘোষণা করেন। তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের বেশিরভাগ অংশ জুড়েই ছিল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ।

    তিনি বলেন, সরকার খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে দেশকে উন্নত করেছে। লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ আজিজ, সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।

    জনসভার আগে ইডেন মহিলা কলেজে এক হাজার আসনবিশিষ্ট ১০ তলা একটি নতুন মহিলা হোস্টেলের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে আজিমপুর স্কুল এন্ড কলেজকে সরকারিকরণের ঘোষণা দেন তিনি। মিটফোর্ড জিআইএস বিদ্যুৎ (৩১) উপকেন্দ্র উদ্বোধন করেন। লালবাগ এলাকায় ৩টি উন্নয়ন প্রকল্পেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও প্রসন্ন পোদ্দার লেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধনসহ বহুতল শহীদ নগর মাতৃসদন, ইসলামবাগ কমিউনিটি সেন্টার কাম মার্কেট, বহুতল মাতৃসদনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমার আনন্দের দিন। আমার স্কুল আজিমপুর গার্লস স্কুল এখন থেকে সরকারি স্কুল। বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। উপস্থিত জনগণকে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে বঞ্চিত হননি। আওয়ামী লীগ নৌকা নিয়ে আসে। আর গোলায় ধান দেয়। কিন্তু বিএনপি ধানের শীষ নিয়ে আসে। দেশে খাদ্যঘাটতি তৈরি করে। এ সময় তিনি হাত তুলে এলাকাবাসীর প্রতিশ্র“তি চেয়ে জিজ্ঞেস করেন, আপনারা কি দেবেন ভোট? তখন ছাত্রীরাও হাত তুলে ‘হ্যাঁ’ জানায়। এ সময় তিনি বলেন, তাদের অনেকেই ভোটার হননি।আগামীতে ভোটার হলে ভোট দেবে।
    শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই যেখানে কেউ অশিক্ষিত থাকবে না। প্রত্যেকে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হবে। এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, তোমরা দেশকে ভালোবাসবে। লেখাপড়া শিখবে। তোমাদের মধ্যে থেকে একদিন দেশে কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে। তিনি স্কুলের শিক্ষক- শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এখন সরকারি চাকরি পাবেন। মেয়েদের ঠিকভাবে শিক্ষা দেবেন। সেটাই চাই। তিনি বলেন,  এটা যেন ঢাকার এক নম্বর স্কুল হয়।
    যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ স্কুলের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি। আমার রাজনীতির হাতেখড়ি এ স্কুল থেকে। ১৯৬২ সালে ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল। তখন শিক্ষকদের চোখ এড়িয়ে আমরা স্কুল থেকে বেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় মিটিং শুনতে যেতাম। স্কুলের ওই দোলনায় অনেক দোল খেয়েছি। এ মাঠে হাডুডু খেলেছি। স্কুলজীবন সবচেয়ে সুন্দর জীবন। মনে পড়ে একবার যেমন খুশি তেমন সাজোতে আমি প্রথম হয়েছিলাম। তিনি বলেন, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় কেবল, তেঁতুলের আচার খেতে খেতে বাড়ি ফিরতাম। তার মজা অন্যরকম ছিল। কিন্তু এখন আর সেদিন আসবে না। পুরোনো দিনের কথা মনে করে বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন।
    শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধীদল হেফাজতকে জড়িয়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু তাদের এসব অপপ্রচারে কোনো ফল হবে না। সব অপপ্রচার ভেদ করেই ২০২১ সালে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে গড়ে তুলবো। তিনি বলেন, আমরা এমন বাংলাদেশ গড়ব যেখানে কেউ অশিক্ষিত ও চিকিৎসাহীন থাকবে না। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।