তাহিরপুর পর্যটন স্পটে হাজারো পর্যটক নিরাপত্তাহীন

    0
    321

    জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া,তাহিরপুর,সুনামগঞ্জ: পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা। এ উপজেলায় বিভিন্ন পর্যটন স্পট গুলো পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আগতরা। শুধু নিরাপত্তাই নয় নেই দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড,ঝড়-বৃষ্টির দিনে নিরাপদ অবস্থানের স্থান,থাকা ও খাওয়ায় ভাল মানের হোটেল রেস্তুরা নেই। ফলে বেড়াতে আসা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

    বিপুল সংখ্যক পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য টুরিষ্ট পুলিশের জন্য দাবী জানিয়ে আসলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এদিকে তাহিরপুর থানায় প্রয়োজনীয় জনবলের বেশী না থাকায় পর্যটকগনের নিরাপত্তা দিতে হিমসিম খাছেন কর্মরত অফিসারগন।

    জানাযায়,উপজেলার টাংগুয়ার হাওর,বারেকটিলা,যাদুকাটা নদী,সীমান্ত ছড়া,শহীদ সিরাজ লেক,শিমুল বাগানসহ একাধিক পর্যটন স্পটে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। এসব দর্শনীয় স্থানকে কেন্দ্র করে গত দুই যুগেরও বেশী সময়ের ব্যবধানে পর্যটকের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি কোন ধরনের সুযোগ সুবিধা। এই পর্যটন স্পট গুলো দেখার জন্য প্রতিদিনেই দেশর বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই নয় দেশের বাহিরের বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে নানান বয়সী দর্শনার্থী ও পর্যটকগন। বর্ষার সময় এসেই তারা ভাড়ায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে ছুটে যান টাংগুয়ার হাওরসহ অন্যান্য স্থানে।

    এসব নৌকা নিয়ে পর্যটকরা কখনও টাংগুয়ার হাওরেই রাত যাপন করে আবার কেউ কেউ যাদুকাটা নদীতে রাতে কোন ধরনের নিরাপত্তা বেষ্টিত অবস্থান তৈরী না করে এছাড়াও দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড,ঝড়-বৃষ্টির দিনে নিরাপদ অবস্থানের স্থান,থাকা ও খাওয়ায় ভাল মানের হোটেল রেস্তুরা না থাকায় দিনে ও রাতে অবস্থান নিয়ে চরম দূভোর্গের শিকার হচ্ছেন। এতে করে বড় ধরনের দূঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

    ঢাকা টুরিস্ট প্রধান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,হাওর দেখতে আমাদের মাধ্যমে অনেক টুরিষ্ট আসেন কিন্তু ঝড় বৃষ্টির দিনে অবস্থান,স্থায়ী ভাবে হোটেল,পাবলিক টয়লেট না থাকায় টুরিষ্টদের অনেক সমস্যা হয়। এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য টুরিষ্ট পুলিশ থাকলে অনেক ভাল হত। না হলে অনেক পর্যটক ও দর্শনার্থী মুখ ফিরিয়ে নিবেন।

    শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় শিমুল বাগানে আসেন পর্যটক রুবেল আহমেদ তিনি জানান,এখানে নেই রৌদ বৃষ্টির দিনে নিজের বাচাঁতে বসার স্থান। নেই আশপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে নিরাপদ অবস্থান। ফলে আজ বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে আমার মত আগত হাজার হাজার পর্যটককে। এখানে ঝড় বৃষ্টি যাই হউক নিরাপদে অবস।থান করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ নেওয়ায় খুবেই প্রয়োজন।

    তাহিরপুরে সাদেক আলীসহ টাংগুয়ার হাওরের পাড়ের স্থানীয় বাসীন্দারা বলেন,টাংগুয়ার হাওরসহ উপজেলার প্রতিটি পর্যটন স্পটে প্রতিদিনেই হাজার হাজার পর্যটক আসে কিন্তু নিরাপত্তার বিষয়ে আমরাও থাকি দুশ্চিন্তায়। কারন কখন কি ঘটে বলা যায় না। ফলে টুরিষ্ট পুলিশের ব্যবস্থা করা হলে ভাল হত নিরাপত্তা থাকত নানান বিরাম্ভনার শিকার থেকে নিরাপদে চলাচল করতে পারত আগত পর্যটকগন।
    সমাজ সেবক মাসুক মিয়াসহ সচেতন মহল বলেন,যে পরিমান পর্যটক ও দর্শনার্থী বিভিন্ন পর্যটন স্পর্টে আসে তাদের নিরাপত্তা ও ঝড় বৃষ্টির দিনে নিরাপদ অবস্থান,স্যানিটেশনের প্রর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় বেড়াতে আসা বেশীর ভাগ মহিলা ও শিশুরাই বেশী দূর্ভোগ পোহাতে হয়। আর পর্যটন স্পট গুলোর কোনটি কোন দিক দিয়ে যাওয়া যায় আর দুরত্ব কত এর দিক নির্দেশনা সাইনবোর্ড না দিলে যে বারেকটিলায় যেতে চায় সে দেখা যায় টেকেরঘাট চলে গেছে।

    তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)আতিকুর রহমান জানান,পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে এই এলাকার আসা প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটকগনকে আমাদের জনবল কম থাকার পরও সাধ্যমত সর্বোচ্ছ নিরাপত্তা দেবার চেষ্টা করছি।

    তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্দু চৌধুরী বাবুল বলেন,এ উপজেলার পর্যটন স্পর্ট গুলোতে আগত দেশ-বিদেশী হাজার হাজার পর্যটক ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য টুরিষ্ট পুলিশ ও দিক নির্দেশক সাইনবোর্ড স্থাপনের ব্যবস্থা করা খুবেই প্রয়োজন।

    সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,ট্যুরিস্ট পুলিশের কোন ক্যাম্প না থাকায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আমরা নিরাপত্তা দিয়ে থাকি। এখন ট্যুরিস্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষ যদি কোন ক্যাম্প করে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে সুবিধা হয়।

    সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুল আহাদ বলেন,এবিষয়ে পর্যটক ও দশর্র্র্র্র্র্র্র্নাথীদের সুবিধার জন্য সড়কের মোড়ে মোড়ে পর্যটন স্পটগুলোর রাস্তার নির্দেশনা দিয়ে এবং স্পটগুলোর বিভিন্ন বিষয়াদি উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট স্পটের সাইনবোর্ড টানানোর ব্যবস্থা করা হবে।