অবশেষে তাহিরপুরের বির্তকিত এসআই জামালকে ডিবিতে বদলি

    0
    245

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,মার্চ,মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াঃ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর থানা থেকে অবশেষে বির্তকিত এসআই জামালকে ডিবিতে বদলি করেছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এসআই জামাল তার নতুন কর্মস্থল সুনামগঞ্জ সদরে ডিবি অফিসে যোগদান করেছেন বলে তাহিরপুর থানার ওসি শহিদল্লা নিশ্চিত করেছেন।

    বির্তকিত এসআই জামালকে থানা থেকে সরিয়ে ডিবিতে বদলি করায় জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর-রশিদকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ভূক্তভোগী জনসাধারণ। সম্প্রতি এসআই জামাল ও তার দুই সহযোগীর অবৈধ কর্মকান্ড নিয়ে সম্প্রতি জাতীয় ও বিভাগীয় দৈনিক সহ অনলাইন পত্রিকায় সংবাদের ঝড় উঠে।

    এলাকাবাসী জানায়,আদালতে দায়েরকৃত ৩টি চাঁদাবাজি মামলা আসামী সীমান্তের চিহ্নিত চোরাচালানী চাঁদাবাজ আজাদ মিয়া ও সাজ্জাদ মিয়াকে নিয়ে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্নস্থানে জুয়ারবোর্ড বসিয়ে প্রতিবোর্ড থেকে ৫হাজার টাকা,যাত্রাগানের আসর বসানোর জন্য প্রতিরাতে ১০হাজার,ওই আসরে জুয়া ও মদ বিক্রির জন্য ১০হাজার টাকা,বিভিন্ন সময় এলাকার বিভিন্নস্থানে অবস্থিত মাজারে ওরসে মদ-গাঁজা বিক্রির জন্য প্রতিরাতে সম্মানী ৫হাজার টাকা,যাদুকাটা নদীরপাড় কেটে বালি বিক্রির জন্য প্রতি ইঞ্জিনের নৌকা থেকে ২হাজার টাকা,পাটলাই নদীতে কয়লা পরিবহণের সময় প্রতিনৌকা থেকে ১থেকে ২হাজার টাকা, ওপেন ভারতীয় মদ-গাঁজা বিক্রির জন্য মাসে ১০হাজার টাকা,হেরোইন-ইয়াবা বিক্রির জন্য মাসে জন্য ৫০হাজার টাকা,হাট-বাজারে ওপেন ভারতীয় নাসির উদ্দিন বিড়ি বিক্রির জন্য প্রতিমাসে ২০হাজার টাকা,লাউড়েরগড়,রাজাই,চানপুর,টেকেরঘাট,লাকমা,লালঘাট,বাঁশতলা, জঙ্গলবাড়ি ও বাগলী সীমান্তের চোরাই পথ দিয়ে কয়লা,মদ,গাঁজা,হেরোইন,ইয়াবা পাচাঁরের টেন্ডার দিয়ে প্রতি কয়লার বস্তা থেকে ৩০টাকা হারে চাঁদা উত্তোলন করেছে।

    এছাড়া থানায় মামলা রেকর্ড করতে প্রতি মামলায় ৫হাজার টাকা,সেই মামলা তদন্ত করতে গাড়ি ভাড়া ও খাওয়া খরছসহ আরো ৫হাজার টাকা সম্মানী দিতে হয়েছে। না হলে ওসিকে ছয়নয় বুঝিয়ে মামলা আটকে রাখার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া যাদুকাটা নদীর তীর সংলগ্ন মানিগাঁও,ঘাগটিয়াসহ আরো কয়েকটি এলাকায় আবাদি জমি ও নদী পাড় কেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কোয়ারী তৈরির জন্য প্রতি কোয়ারী থেকে ৫হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে। আর চাঁদাবাজি মামলার আসামী আজাদ মিয়ার মাধ্যমে নিরপরাধ লোকজনকে মিথ্যা দিয়ে আদায় করেছে লক্ষলক্ষ টাকা।

    এছাড়াও হাট-বাজারে মদ-গাঁজা ও নাসিরউদ্দিন বিড়ি বিক্রির টেন্ডার দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতির করে এসআই জামাল রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যায়। রাজধানী শহর ঢাকা,বিভাগীয় শহর সিলেট ও তার গ্রামের বাড়ি জৈন্তায় তৈরি করেছে একাধিক বাড়ি,কিনেছেন দামী গাড়ি,করেছেন একাধিক ব্যাংক একাউন্ট। বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতির কারণে এরআগে এসআই জামালকে তাহিরপুর থেকে ৩বার অন্যত্র বদলী করা হয়েছে। অন্যান্য বার তাকে স্ব-প্রতিষ্ঠানে বদলি করা হলেও এবার করা হয়েছে ডিবিতে।

    এ ব্যাপারে মধুয়ারচর গ্রামের জুয়ারী হাবিব মিয়া,দিলু মিয়া,শিমুলতলা গ্রামের সবুজ আলম, দিলোয়ার হোসেন,আলমগীরসহ আরো একাধিক জুয়ারীরা বলেন,এসআই জামাল স্যার বদলি হলেও সমস্যা নেই,তার বন্ধু আজাদ ভাই সব দেখবেন। রাজাই গ্রামের কয়লা চোরাচালানী জম্মত আলী বলেন,সমস্যা নাই এসআই জামাল স্যার আমাদের কাছেই আছেন। সুনামগঞ্জ থেকে আজাদ ও সাজ্জাদ ভাইকে দিয়ে সব ঢিল করবেন। উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খান বলেন,বির্তকিত এসআই জামালকে থানা থেকে ডিবিতে বদলি করায় সাধারণ মানুষ আনন্দিত কিন্তু তার একান্ত সহযোগী তিন চাঁদাবাজি মামলার আসামী আজাদের চাঁদাবাজির যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছে সর্বস্তরের জনসাধারণ।

    চাঁরাগাঁও কয়লা আমদানী কারক সমিতির সভাপতি জয়ধর আলী বলেন,এসআই জামালকে বদলি করায় তার চাঁদাবাজি ও মামলাবাজির হাত থেকে এলাকার গরীব কয়লা শ্রমিকরা রক্ষা পেলেও তার সহযোগী আজাদ ও সাজ্জাদের অত্যাচার বেড়ে গেছে। সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর-রশিদ এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,দেশ ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত পুলিশ বাহিনীর সম্মান রক্ষার্থে যেকোন প্রকার পদক্ষেপ নিতে আমি প্রস্তুত।

    দুদুক কৃর্তক তদন্তপূর্বক এসআই জামালের যাবতীয় কর্মকান্ড,অবৈধঅর্থ-সম্পত্তি ও বাড়ি-গাড়ির হিসেব-নিকাস নিয়ে তার বিরুদ্ধে জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিস্ট প্রশাসনের কাছে জোরদাবী জানিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলার ভুক্তভোগী জনসাধারণ।