তাহিরপুরে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়ঃগ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ

    1
    326

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৯মার্চ,মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াঃ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আবারোও গণধৌলাইয়ের শিকার হয়েছে ৩টি চাঁদাবাজি মামলার আসামী চোরাচালানী আজাদ মিয়া। তাকে গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে ঘন্টাব্যাপী ঘেরাও করে  রাখে এলাকাবাসী। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও বিজিবি তাকে উদ্ধার করে।

    ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায়। বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়,আদালতে দায়েরকৃত ৩টি চাঁদাবাজি মামলার আসামী উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের চোরাচালানী হাবিব সারোয়ার আজাদ মিয়ার তার ভাই সাজ্জাদ হোসেন শাহকে নিয়ে বিকাল সাড়ে ৩টায় উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বরুঙ্গাছড়া গ্রামের যায়।

    সেখানে গিয়ে পাহাড়ী ছড়ার পানি দিয়ে ভেসে আসা মহিলাদের কুড়ানো বাংলা কয়লা ও লাকড়ির থেকে চাঁদা চায়। তাদের কথা মতো চাঁদা দিয়ে অস্বীকার করায় শ্রমিকদের মালামাল পুলিশ ও বিজিবি দিয়ে আটক করার হুমকি দেয়। এঘটনায় মহিলা ও পুরুষ শ্রমিকরাসহ এলাকাবাসী চাঁদাবাজ আজাদ মিয়াকে ধরে গণধৌলাই দেয়। এসময় তার ছোট ভাই সাজ্জাদ মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায়।

    আর আজাদ মিয়া গণধৌলাই খেয়ে কোন রকম নিজের প্রাণ রক্ষা করে দৌড়ে জয়বাংলা বাজারের অবস্থিত সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজী রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটনের অফিসে আশ্রয় নেয়। এসময় তার গ্রেফতারের দাবী করে উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে প্রায় ঘন্টাখানেক ওই অফিস ঘেরাও করে রাখে।

    পরে খবর পেরে বিজিবি ও পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। এব্যাপারে বড়ছড়া বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার মোহাম্মদ হোসেন বলেন,আমি আজাদকে সাবধান করে দেওয়ার পর সে চাঁদাবাজি করতে যাওয়ায় গণধৌলায়ের শিকার হয়েছে। হাজী রিয়াজ উদ্দিন খন্দাকার লিটন বলেন,উত্তেজিত জনতাকে সড়িয়ে বিজিবি ও পুলিশের সহযোগীতা আজাদকে তার বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। তাহিরপুর থানার ওসি শহিদুল্লাহ এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,বাংলা কয়লা থেকে আজাদ মিয়া চাঁদাবাজি করতে গিয়ে আবারোও গণধৌলাই খেয়েছে বলে জানতে পেরেছি।

    উল্লেখ্য,গত ১৭ই মার্চ মঙ্গলবার রাত ১২টায় শাহ আরোফিনের মেলায় চাঁদা না দেওয়ায় এক ঔষধ ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ১০হাজার টাকা জরিমান করাসহ তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল হোসেন খাঁ ও চাঁরাগাঁও কয়লা আমদানী কারক সমিতি সভাপতি জয়ধর আলীর কাছে ৫লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করার ঘটনায় চেয়ারম্যানের ছেলে পারুল খাঁ বাদী হয়ে গত ২৯শে জানুয়ারী কোট পিটিশন চাঁদাবাজি মামলা নং-১০/২০১৫ইং ও কয়লা সমিতির সভাপতির ছেলে নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ২২শে জানুয়ারী কোর্ট পিটিশন চাঁদাবাজি মামলা নং-০৮/২০১৫ইং আদালতে দায়ের করে চাঁদাবাজ আজাদ ও সাজ্জাদ মিয়ার বিরুদ্ধে।

    বড়ছড়া কয়লা আমদানী কারক সমিতির অর্থ সম্পাদক ব্যবসায়ী কুদ্দুছ মিয়ার কাছে চাঁদা চাওয়ায় আজাদ ও সাজ্জাদের বিরুদ্ধে আদালতে চাঁদাবাজি মামলা নং-১১৫/২০১১ইং দায়ের করেন।

    এসব ছাড়াও ২০০৫সালে ৩ জুলাই সীমান্তের রাজাই এলাকায় চোরাই কয়লা থেকে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে স্থানীয় জানতার হাতে ও ২০০৮সালের ১৪ই নভেম্বর বাদাঘাট বাজারে চাঁদাবাজির ঘটনায় ছাত্রদল নেতারা আজাদ ও সাজ্জাদকে গণধৌলাই দেয়।

    আজাদ মিয়া ও সাজ্জাদ মিয়ার বিরুদ্ধে হেরুইন, ইয়াবা,অস্ত্র ও মদ-গাঁজা পাঁচার করাসহ আদালতে ৩টি চাঁদাবাজি মামলা,থানায় একাধিক মামলা ও জিডি এন্টিসহ ইভটিজিং,শিশু বলৎকার,গৃহবধু ছিনতাইয়ের চেষ্টায়,দালালির ঘটনায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ছাড়াও বিভিন্ন দফতরে একাধিক অভিযোগ থাকার পরও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় দিনদিন তাদের দাপট বেড়েই চলেছে। তাদের অত্যাচারে সাংবাদিক,জনপ্রতিনিধি,ব্যবসায়ী, দিনমজুর,বালি-পাথার শ্রমিক থেকে শুরু সর্বস্তরের জনসাধারণ অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।

    আজাদ ও সাজ্জাদের চাঁদাবাজি ও অত্যাচারের হাত থেকে অসহায় মানুষকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেছেন তাহিরপুর উপজেলাবাসী।