তাহিরপুরে সর্বনাশা মাদকের ভয়াবহ বিস্তার:প্রশাসন নিরব

    0
    221

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৩মার্চ,মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াঃ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুরে সর্বনাশা মাদকের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। মাদক ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে ইয়াবা,হেরুইন ও মদ,গাঁজা খুচরা ও পাইকারী বিক্রি করছে। এতদিন উপজেলার বিভিন্নস্থানে ভারতীয় মদ,গাঁজা ও নাসির উদ্দিন বিড়ি ওপেন বিক্রি হলেও এবার সর্বনাসা ইয়াবা ও হেরোইনের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    আর এসকল মাদকদ্রব্য সিলেট,সুনামগঞ্জ,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ও ময়মনসিংহ,নেত্রকোনা, কমলাকান্দা,মোহনগঞ্জসহ ভারত থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বড়ছড়া গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে আজিজুল ইসলাম ও বড়ছড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের লাল মিয়া অবাধে হেরোইন বিক্রি করছে।

    একই গ্রামের ইয়াকুব মিয়া ও তার স্ত্রী জহুরা বেগম শুধু ইয়াবা বিক্রি করছেন। তাদের পার্শ্ববর্তী বুরুঙ্গাছড়া গ্রামের রমিজ মিয়া ও লাকমা-পুটিয়া গ্রামের কালাম মিয়া হেরোইন ও ইয়ারা দুটোই বিক্রি করছে।

    এছাড়াও রয়েছে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের পুরানঘাট গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে বাবুল মিয়া,তার ছোট ভাই অস্ত্র ও ডাকাতির মামলার আসামী বাদল মিয়া। তারা হেরোইন ও ইয়াবার ডিলার। তাদের কাছ থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ে বিক্রি করছে একই ইউনিয়নের মধুয়ারচর গ্রামের ঈমান আলী,বারহাল গ্রামের হাজী তালেব আলীর ছেলে রহম আলী।

    এছাড়াও রয়েছে বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা গ্রামের দুলাল মিয়া। তিনি হেরোইন ও ইয়াবা ডিলার। সময়ে অসময়ে খুচরাও বিক্রি করেন। আর চোরাচালানী আজাদ মিয়ার কামড়াবন্দ গ্রামসহ শিমুলতলা গ্রামের একাধিক স্পটে ওপেন ভারতীয় মদ ও গাঁজা,নাসির উদ্দিন বিড়ি বিক্রি হচ্ছে।

    এসকল মাদকদ্রব্য যাত্রীবাহী মোটর সাইকেলের মাধ্যমে পরিবহণ করছে বড়ছড়া গ্রামের মোটর সাইকেল চালক জমিস মিয়া ও আজাদের ৪জন সহযোগী। এসব মাদক দ্রব্যের মধ্যে ১পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ২শত টাকা,হেরোইনের পুরিয়া ১৫০টাকা, গাঁজার পুরিয়া ৫০টাকা,ভারতীয় অফিসার চয়েজ মদ ১৫০এমএল ২৫০টাকা ও নাসিরউদ্দিন বিড়ি প্রতি প্যাকেট ৫০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

    পুলিশ বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে জুয়ার বোর্ড,মদ,গাঁজা ও হেরোইনের আসর থেকে দু-একজন নেশাখোর ও জুয়ারীদের আটক করলেও মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের গডফাদার চোরাচালানী আজাদ মিয়ার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না। এব্যাপারে লাকমা-পুটিয়া গ্রামের ইয়াবা ও হেরোইন বিক্রেতা কালাম মিয়া বলেন,আজাদ ভাইয়ের নির্দেশে মাঝে মধ্যে এসব বেচাকেনা করি,নিজেরাও খাই।

    এসব নিয়ে কোন ঝামেলা হলে এসআই জামাল স্যার সমাধান করে দেন,কোন সমস্যা হয়না। বড়ছড়ার হেরোইন ও ইয়াবাসেবী মরাং হাজং,দিনার হাজং ও কাবিরুলসহ আরো অনেকেই বলেন,আমরাতো হেরোইন ও ইয়াবা খাই বিক্রি করিনা,আমাদের নাম পত্রিকায় দিলে কি হবে,যারা এসব মাদক বিক্রি করে তাদেরকেই তো পুলিশ কিছু করেনা।

    নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাদাঘাট ও বড়ছড়া এলাকা বাসিন্দারা বলেন,চোরাচালানী আজাদ মিয়া ও এসআই জামালের নেতৃত্বে এলাকায় মদ,গাঁজা,হেরোইন,ইয়াবা বিক্রিসহ মাদকের জমজমাট আসর ও জুয়ারবোর্ড চলছে। তারা এলাকায় ঘোষনা দিয়েছে-তারা আইন তৈরি করে,ডিসি এসপি তাদের কথায় চলে। তাদেরকে কিছু করার ক্ষমতা করো নেই।

    সম্প্রতি বাদাঘাট বাজারের যাত্রী পরিবহণকারী মোটর সাইকেল স্টেশনে আজাদ মিয়া মদ খেয়ে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সামিউলকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন তার অবৈধ কর্মকান্ড নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার কারণে।

    এব্যাপারে আজাদ মিয়া দাপটের সাথে বলেন,আমি যা ইচ্ছা তাই করব পত্রিকায় লিখে কি করতে পারিস দেখি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে মামলায় ফাঁসিয়ে দেব। এসআই জামাল বলেন,টাকার প্রয়োজন সবারই আছে,আমাদের বিরুদ্ধে লেখালেখি না করে আসুন মিলেমিশে কাজ করি। সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার হারুন অর-রশিদ বলেন-এব্যাপারে তথ্য নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।