আমারসিলেট24ডটকম,১০জুন,মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াঃ সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তে যাদুকাটা নদীর তীর কেটে চলছে বালি বিক্রির মহোৎসব। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে চলে মধ্য রাত পর্যন্ত। ফলে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে নদী তীরবর্তী প্রায় ২০টি গ্রাম। ইতিমধ্যে কয়েকশ একর চাষাবাদের ভূমি ও সহশ্রাধিক বসতবাড়ি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলিন হয়েগেছে। সর্বস্থ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার। এলাকাবাসী জানায়,যাদুকাটা নদীর উত্তর তীরে অবস্থিত লাউড়গড়, ছড়ারপাড়,বিন্নাকুলি ও দক্ষিণ তীরে অবস্থিত আদর্শগ্রাম,গাগটিয়া,বড়টেক,গাগড়া,মানিগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১০কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে তীর কেটে বালি উত্তোলন। এলাকার স্থানীয় প্রভাবশালীরা প্রতিদিন অবৈধভাবে নদীর তীর কেটে শতশত নৌকা বোঝাই করে লক্ষলক্ষ টাকার বালি বিক্রি করছে।
অভিযোগ উঠেছে,তাহিরপুর থানা প্রভাবশালী এসআই জামাল উদ্দিন তার নিয়োজিত দুই দালালের মাধ্যমে প্রতি নৌকা থেকে ২হাজার টাকা হারে চাঁদা নিচ্ছেন। গাগড়া ও আদর্শগ্রামের একাধিক বাসিন্দারা জানান,তাদের বাড়িঘর রক্ষা করার জন্য যাদুকাটা নদীর তীর কাটা বন্ধের দাবী জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বারবার লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে বালি খোকেরা। আর অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে উৎসায়িত করেন এসআই জামাল উদ্দিন। অনেক সময় তিনি নিয়ে দাড়িয়ে থেকে নদীর পাড় কেটে নৌকা বোঝাই করান। সেই সাথে তিনি এলাকার সাধারণ লোকজনের কাছে বলে বেড়াচ্ছেন-তিনি ১২লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে তাহিরপুর থানায় এসেছেন। গাগটিয়া গ্রামের কয়লা ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন,মোশাহিদ মিয়াসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো অনেকেই বলেন,প্রশাসনের সহযোগীতা না পাওয়ায় কমিটি গঠন করেও নদীর তীর কাটা বন্ধ করার সম্ভব হয়নি।
বালিও পাথর ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান বলেন-নদী পাড় কাটার বিষয়ে প্রতিবাদ করায় মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানী করা হয়েছে। এব্যাপারে মোবাইলে এসআই জামালের কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে লাইন কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে দেন। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইয়ামিন চৌধুরী বলেন,যাদুকাটা নদীর পাড় কাটার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে শীগ্রই এব্যাপারে ব্যবস্থা না নিলে যাদুকাটা নদীর দুইতীরে অবস্থিত প্রায় ২০টি গ্রামের দুই সহশ্রাধিক পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে অচিরেই পথে বসবে। তাই ভাঙ্গনের কবল হতে অসহায় পরিবারগুলোকে রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাহিরপুর উপজেলাবাসী।