তাহিরপুরে বন্যা এলাকায় চাহিদার তুলনায় ত্রান নেই

    0
    323

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ীর ঢলের পানিতে বন্দি হয়ে পরেছে হাজার হাজার মানুষ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে পানি বন্ধি পরিবার গুলোতে। পানি বন্দি হওয়ায় মানুষজন বাড়ি থেকে বের হতেও পারছে না। এদিকে বসত বাড়ি হাওরের বড় বড় ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙ্গে যাচ্ছে। গৃহহারা মানুষগুলো আশপাশের বিদ্যালয় কাম বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে।
    তাহিরপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিলন কান্তি তালুকদার জানান,উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে ৩টি,শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নে ৩টি,বালিজুড়ি ইউনিয়নে ১টি ও বাদাঘাট ইউনিয়নের সাহালা গ্রামে ১টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
    উপজেলার হাওরপাড়ের বিভিন্ন গ্রামগুলোতে দেখা যায়,হাওরের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে তাদের বসত বাড়ি ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন হবার পথে। তারা পরিবার পরিজন নিয়ে নোয়ানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে কথা হয় ৬৫বছরের বৃদ্ধ রশিদ মিয়ার সাথে। তিনি বলেন,বানের পানিতে তার বসতভিটা ভেঙ্গে পড়েছে। এ অবস্থায় তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে নোয়ানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ত্রান পাচ্ছেন না।
    একই কথা জানালেন নোয়ানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া শামীম মিয়া ও নাহিদ হাসান কা ন। ওখানে আশ্রয় নেয়া সবাই উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের নোয়ানগর গ্রামের বাসিন্দা।
    নোয়ানগর গ্রামের পার্শ¦বর্তী গ্রাম মারালা গ্রামের সাইকুল ইসলাম ও আনু মিয়া মগ অনেকের বসতভিটা ঢেউয়ের কবলে ভেঙ্গে পড়ায় তারা সবাই প্রতিবেশী ও নিকটাত্মীয়দের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।
    শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিয়া হোসেন বলেন,সরকারীভাবে বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও কোন প্রকারের ত্রাণসামগ্রী বন্যাশ্রয় কেন্দ্র এসে পৌঁছেনি। বন্যশ্রয় কেন্দ্রের মধ্যে আশ্রিতরা খাদ্যের জন্য অপেক্ষা করছে।
    এছাড়াওরাজধরপুর,পৈন্ডুপ,আনোয়ারপুর,লোহাচুরা,দক্ষিণকূল,নয়াহাট,বারুঙ্কা,মাটিয়ান,পিরিজপুর,শরীফপুর,চিকসা,জামালগড়,গাজীপুর,বড়দল,কাউকান্দি,চানপুর,মাহরাম,নোয়াহাট,পাতারগাঁও,ধরুন্দ,ইউনুছপুর,লক্ষ্মীপুর,গোলকপুর,মন্দিয়াতা,শিবরামপুর,বালিজুরী,বড়খলা,গোবিন্দশ্রী,রতনশ্রী,চতুর্ভূজ,ভাটি তাহিরপুর,সাহেবনগর,উজানতাহিরপুর,ভবানীপুর,সন্তোষপুর,জাঞ্জাইল,ইকরামপুর,লামাগাঁও,দুমাল,মাহতাবপুর,মাহমুদপুর,রামজীবনপুর,গোপালপুর,লক্ষ্মীপুর বন্যা কবলিত গ্রাম গুলোতে অবস্থানকারী মানুষজন ত্রানেরজন্য অপেক্ষায় আছে। এদিকে কিছু কিছু গ্রামে ব্যক্তিগত ভাবে অর্থ ও শুকনো খাবার বিতরন করছেন স্থানীয় ব্যক্তিগন।
    তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন,বন্যার পানি ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বন্যাশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণসামগ্রী নেই বললেই চলে। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন,তাহিরপুরের মানুষ বারবার ফসল হারিয়ে দিশেহারা এবং সাম্প্রতিক বন্যায় মানুষের বসতভিটা,রাস্তাঘাট ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সকলেই দিশেহারা।