তাহিরপুরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি,কৃষকরা দিশেহারা

    0
    254

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০২এপ্রিল,তাহিরপুর(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃসুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় পাজহাড়ী ঢল ও বৃষ্টির পানিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি,কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছে। এ পর্যন্ত ৬টি হাওরের কাচাঁ,আধা পাকা ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এর পরও হাজার হাজার কৃষকের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষায়  বাঁেধ এ পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাউকে দেখা যায়নি।

    বাঁধ রক্ষায় ফাঠল ও দেবে যাওয়া অংশে সংস্কারের কাজ করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সহ হাওর পাড়ে কৃষকগন দিন-রাত। চোখের সমানে বাঁধ ভেঙ্গে পাহাড়ী ঢলে মহালিয়,ধরনারদর হাওর,টাঙ্গুয়ার হাওর,শনির হাওরের নিন্মাঅ ল সহ ছোট ছোট কয়েকটি হাওরে কষ্টের ফলানো সোনার ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে ঝড়ছে কৃষকের চোখের পানি।

    জানা যায়,উপজেলার ছোট বড় ২৩টি হাওরে উৎপাদিত ২শ কোটি টাকার ফসলের উপর নির্ভর করেই জীবন জীবিকা চলে হাওর পাড়ের হাজার হাজার কৃষকের। এই ফসল ফলাতে প্রতি বছরের মত এবারও কৃষকরা এনজিও,ব্যাংক ও মহাজনের কাছ থেকে ছড়া সুদে নেওয়া ঋন নেয়। এবারও ফসল হানীর কারনে পরিশোধ নিয়ে হতাশায় দিন পার করছে হাওর পাড়ের কৃষকরা।

    অভিযোগ রয়েছে-গত ২৮শে ফেব্রুয়ারীর মধ্যে এই উপজেলার ২৩টি হাওরের বেরী বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ করার সরকারি নির্দেশ থাকলেও ৪০ভাগ কাজও শেষ করে নি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার ও পিআইসিগন নিজেদের খেয়াল খুশি মত বাঁধের উপর থাকা গাছ-পালা কেটে পরিস্কার না করে,বাঁধের দুই পাশ থেকে মাটি উত্তোলন করে কোন রকম দায় সারা ভাবে বাঁধ নির্মান করে।

    নিদির্ষ্ট দূরত্ব থেকে মাটি এনে,বস্তায় মাটি ভড়ে,বাঁশ দিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ দেওয়া নিয়ম থাকলেও এখানে তা কেউ শুনে নি। এসব অনিয়মের কারনে গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে বাঁধ গুলো ভেঙ্গে যায়।

    জানা যায়-উপজেলার বোয়ালমারা,শনির হাওর,মাতিয়ান হাওর,লোভার হাওর,বলদার হাওর,লালুয়া গোয়ালা বাঁধ,মেশিন বাড়ির বাঁধ,সহ বিভিন্ন হাওরের বাঁধ দেবে গেছে ও ফাঠল দেখা দেওয়ায কাঁচা,আধা পাকা বোরো জমির ধান বাধঁ ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে যাবার আশংকায় উৎবেগ আর উৎকণ্ঠায় হাওর পাড়ের বাঁধ রক্ষায় রয়েছে কৃষকগন।

    উপজেলার হাওর পাড়ের কৃষকগন জানান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৈরি বালির বাঁধ বাঁধ ভেঙ্গে পানি হাওরে প্রবেশ করে কোটি কোটি টাকার কষ্টের সোনার ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

    গত বছরের মত এবারও একেই অবস্থা। এই ফসল ফলাতে আমরা বিভিন্ন এনজিও,ব্যাংক ও মহাজনের কাছ থেকে ঋন নিয়েছি কিভাবে ঋন পরিশোধ করব ভেবে পাচ্ছি না। সবাই সবার ধান্দা নিয়েই ব্যস্থ আছে আর আমাদের কাম শেষ।
    তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম জানান-হাওরের বাঁধ গুলো খুবেই যুকিপূর্ন অবস্থায় ছিল এবং এখনও আছে। বিভিন্ন হাওর পরিদর্শন করে ও কৃষকদের সাথে কথা বলেছি। এ বছর উপজেলায় ১৮৩০০হেক্টর ধান চাষ করা হয়েছে। বাধঁ ভেঙ্গে ১০হাজার হেক্টর বোরো জমির কাচাঁ-আধা পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

    তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন-এবারও সঠিক ভাবে বাঁধ নির্মাণ না করার কারণে হাওরের প্রতিটি বাঁধ খুবই ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। বাঁধ রক্ষায় আমি সর্বক্ষনেই হাওরে অবস্থান করছি। সময় মত বাঁধ নির্মান হলে এমন সমস্যা হত না। বাঁধ রক্ষায় সবাইকে নিয়ে শেষ রক্ষা বাঁধের কাজে আছি। বাঁধ নির্মান অনিয়মকারীদের কোন ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানিয়েছি।

    জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন-আমি নিজে বিভিন্ন হাওরের বাঁধ রক্ষা জন্য এলাকাবাসী কে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যারা বাঁধ নির্মানে অনিয়ম করছেন তাদের বিরোদ্ধে শাস্তি মুলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

    সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আফছার উদ্দিন জানান,জেলার একাধিক হাওরে পানি প্রবেশ করেছে। এছাড়াও পাহাড়ী ঢলের পানি হাওরের বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবেশ করছে। হাওরের বাঁধ রক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত আছে।