তাহিরপুরে আসামী কর্তৃক প্রশাসনকে হয়রানীর অভিযোগ

    1
    226

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩মার্চ,মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়াঃসুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর সীমান্তে শাহ আরোফিনের মেলায় চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গণধৌলাইয়ের শিকার হওয়া ৩টি চাঁদাবাজি মামলার আসামী চোরাচালানী ও হেরোইনখোর আজাদ মিয়া জরিমানার ১০হাজার টাকা না দেওয়ার জন্য ল্যাপটপ নাটক করে প্রশাসনকে অহেতুক হয়রানী করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,গত ১৭ই মার্চ রাত ১২টায় শাহ আরোফিন মেলায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের মেওরাখলা গ্রাম থেকে আগত ঔষধ ব্যবসায়ী হানিফ মিয়ার কাছে মেলায় দোকান করার জন্য ২হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে আজাদ মিয়া। তার কথামতো চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আজাদ মিয়া তার ভাই সাজ্জাদকে নিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে মারধর করে জোরপূর্বক ১০হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় ওই ব্যবসায়ী চিৎকার শুরু করলে মেলায় আগত শতশত ব্যবসায়ী ও জনতা এসে আজাদকে হাতেনাতে ধরে গণধৌলাই দেয়। আর সাজ্জাদ মিয়া কোন রকম নিজের প্রাণ রক্ষা করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আজাদকে উত্তেজিত জনতার কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ ক্যাম্পের ভিতরে আটক করে রাখে। এরপর রাত ৩টায় মাজার ও মেলা কমিটির দায়িত্বে থাকা লোকজন,পুলিশ,বিজিবি ও উপস্থিত জনতাকে নিয়ে সালিসের মাধ্যমে চাঁদাবাজ আজাদ মিয়াকে ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় আহত ব্যবসায়ী হানিফ মিয়ার পায়ে ধরে আজাদ মিয়া ক্ষমা চাওয়াসহ তার অপরাধের জন্য ভুল স্বীকার এই জীবনের আর সে এধরণের ভুল করবে না বলে অঙ্গিকার করে এবং দুইহাত জোরকরে সবার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে নাকে খত দিয়ে আইনের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে। কিন্তু জরিমানার টাকা না দেওয়ার জন্য এঘটনার পরদিন আজাদ মিয়া শুরু করে জজ মিয়া থেকে ল্যাপটপ নাটক। সে প্রশাসনকে জানায় গণধৌলায়ের সময় তার ল্যাপটপ হারানো গেছে। আর সেই ল্যাপটপ উদ্ধার করার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মেলার দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ইউএনও,ওসি ও বিজিবির সদস্যরাসহ মেলা কমিটির লোকজনকে নিয়ে আজাদ কর্তৃক চাঁদাবাজি ও গণধৌলাই হওয়ার ঘটনাস্থল তদন্ত করে। কিন্তু ল্যাপটপ হারানোর কোন সত্যতা তারা খোঁজ পায়নি। এব্যাপারে শাহ আরোফিন মাজার কমিটির সভাপতি হাজী জালাল উদ্দিন বলেন,মেলা পন্ড করার অসৎ উদ্দেশ্যে আজাদ মিয়া একটা চক্রান্ত করেছিল কিন্তু অবশেষে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গণধৌলাইয়ের শিকার হয়েছে। উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক দৈনিক ইত্তেফাকের তাহিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি আলম সাব্বির বলেন,প্রশাসন ও আমাদের পক্ষ থেকে মেলায় চাঁদা উঠানো নিষেধ থাকার পরও চাঁদা উত্তোলন করতে গিয়ে আজাদ মিয়া গণধৌলায়ের শিকার হয়ে প্রশাসনের লোকজনকে হয়রানী করাসহ এলাকার সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার শুরু করে দিয়েছে। তাহিরপুর থানার ওসি শহিদুল্লাহ বলেন,আমরা ঘটনাস্থল তদন্ত করে ল্যাপটপ হারানোর কোন প্রমান পাইনি,আজাদকে থানায় জিডি দিতে বলেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন,গণধৌলাইয়ে শিকার হয়ে আজাদ মিয়া জরিমানার টাকা না দেওয়ার জন্যই মূলত রাগে ও ক্ষোভে ল্যাপটপ হারানোর নাম করে প্রশাসনকে অহেতুক হয়রানী করার চেষ্টা করছে বলে মনে হচ্ছে।

    উল্লেখ্য,চাঁদাবাজ আজাদ মিয়া ও সাজ্জাদ মিয়ার বিরুদ্ধে সীমান্ত পথে হেরুইন,ইয়াবা,অস্ত্র ও মদ-গাঁজা পাঁচার করাসহ আদালতে ৩টি চাঁদাবাজি মামলা,থানায় একাধিক মামলা,জিডি এন্টি,ইভটিজিং,শিশু বলৎকার,গৃহবধু ছিনতাইয়ের চেষ্টা ও দালালির ঘটনায় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ছাড়াও বিভিন্ন দফতরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান,কয়লা ব্যবসায়ী,বারকি শ্রমিক ও সাংবাদিকরা একাধিক অভিযোগ দেওয়ার পরও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাদের দাপট দিনদিন বেড়েইে চলেছে। আজাদ ও সাজ্জাদের চাঁদাবাজি ও অত্যাচারের হাত থেকে অসহায় মানুষকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করেছেন তাহিরপুর উপজেলাবাসী।