তাহিরপুরের ইউপি চেয়ারম্যান আপ্তাব এর বিরুদ্ধে অভিযোগ

    0
    323

    সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আপ্তাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। রবিবার (৪,আগষ্ট) বিকালে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বঞ্চিত ৯টি ইউপি সদস্য।

    অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়নমুলক প্রকল্পের কাজ না করেই অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে লুটপাটে ব্যস্ত রয়েছে। পরিষদের নিয়মিত মাসিক মিটিং না করে ৩-৪ মাস পর পর সদস্যদের ডেকে স্বাক্ষর নিয়ে যায়। প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে নানান টালবাহানা শুরু করে।

    ইউপি সদস্য মোস্তফা জানান,ইউনিয়নের দরিদ্র ভিজিডি ধারীর কাছ থেকে প্রতি মাসে ৫০টাকা হারে আদায় করে ইউপি সচিব ও চেয়ারম্যান আত্মসাৎ করছেন। এলজিএসপি’র টাকা ওয়ার্ড কমিটি ও তদারকি কমিটির সুপারিশ ছাড়াই ভুয়া কাগজাত সৃজন করে ভুয়া স্বাক্ষরের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

    দুই জন ঠিকাদারের লাইসেন্স ব্যবহার করে ভুয়া কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে চেয়ারম্যান নিজেই টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন।

    এছাড়াও চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সরকারের দেয়া নানান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করে আত্মসাৎ করেই চলছেন। তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে রাস্তার সরকারী গাছ কাটার মামলা রয়েছে। চেয়ারম্যান রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব সনদ দিয়ে দেশ ব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি করেছিলেন। আমরা জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসছি। কোন প্রকল্প না পেলে ভোটারদের কাছে কি জবাব দেব ? আমরা ন্যায় বিচারের স্বার্থেই জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

    এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলী আহমদ জানান,স্থানীয় সরকার নীতিমালা অমান্য করে চেয়ারম্যান আপ্তাব উদ্দিন নিজের ইচ্ছেমত সচিবকে দিয়ে প্রকল্প প্রণয়ন ও অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। ২০১৬-১৭অর্থ বছরের এলজিএসপি’র ১ম কিস্তির অর্থ ভুয়া টেন্ডার ও কাগজপত্রাদি দাখিল করে আত্মসাৎ করেছেন। প্রতি বছর রিং পাইপ ও স্যানিটেশন বন্টন না করে হতদরিদ্রদের স্বাস্থ্য সম্মত স্যানেটারীর বরাদ্দকৃত ২লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

    ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন জানান,এলজিএসপি প্রকল্পের তৃতীয় কিস্তির সোহালা গ্রামের পাকা কৃষি সেচ নালা স্থাপন না করে বরাদ্দকৃত ১লাখ ২৭হাজার টাকা,স্বাস্থ্য সম্মত স্যানেটারীর বরাদ্দ ৩লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পানি নিস্কাশনের জন্য রিং পাইপ স্থাপন না করে ১লাখ ২৫হাজার টাকাসহ প্রায় সাড়ে ৯লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য অবগত আছেন। এসব অপরাধের প্রতিবাদ করলে আমাদের উপর নেমে আসে নানান নির্যাতন।

    ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেনু মিয়া জানান,২০১৬-১৭অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত বাদাঘাট বাজারের দুটি ড্রেইন,লাউরগড় বাজারের ড্রেইন,বাদাঘাট হাসপাতালের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি,ননাই গ্রামের আরসিসি রাস্তা,বিভিন্ন স্কুলের বেঞ্চ,২টি রাস্তার মাটি ভরাটসহ প্রায় ৯লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ভুয়া বিল ভাউচার দাখিলের মাধ্যমে।

    সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য মনোয়ারা খাতুন জানান,চেয়ারম্যান ও সচিব মিলে আমাদের বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে আমাদের অজান্তে আত্মসাৎ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স ফি,আদায়কৃত ট্যাক্স ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ফি’র কোন কিছুই ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। পরিষদের কোন হিসাব আমাদেরকে অবগত করান নি।

    এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আপ্তাব উদ্দিনের মোবাইল ফোনে (০১৭১৩৬৭৮৬৯৮) বার বার কল দিলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।