ড. কামাল হোসেনের বই ‘বাংলাদেশ : কোয়েস্ট ফর ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস’-এর মোড়ক উন্মোচন

    0
    479
    ড. কামাল হোসেনের বই ‘বাংলাদেশ : কোয়েস্ট ফর ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস’-এর মোড়ক উন্মোচন
    ড. কামাল হোসেনের বই ‘বাংলাদেশ : কোয়েস্ট ফর ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস’-এর মোড়ক উন্মোচন

    খ্যাতনামা আইনবিদ ড. কামাল হোসেনের লেখা বই বাংলাদেশ : কোয়েস্ট ফর ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিংশ শতাব্দীতে বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। যে পর্যায়গুলো অতিক্রম করে সেই স্বাধীনতা এসেছে, সে প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীরা ইতিহাস রচনায় অংশ নিলে তা হূদয়গ্রাহী হয়ে ওঠে। নতুন প্রজন্মের জন্য সেই ইতিহাসের পাঠ ও নির্মোহ বিশ্লেষণ জরুরি।
    রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন মিলনায়তনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেছেন, পৃথিবীতে ১৯৪টি স্বাধীন রাষ্ট্র আছে। রাষ্ট্র স্বাধীন হলেও ন্যায়বিচার সর্বত্র নিশ্চিত করা সহজ না। ন্যায়বিচারের জন্য মানুষের অনুসন্ধান আজও শেষ হয়নি। তিনি বলেন, বিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বাঙালিদের সবচেয়ে বড় অর্জন। বাংলাদেশের মুসলমানরা পাকিস্তান সৃষ্টি করেছিল ধর্মের কারণে আর ভাষার কারণে তারা সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশ।
    ড. কামালের এ বইতে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান প্রধান ঘটনার বর্ণনা রয়েছে। যেমন ছয় দফা কর্মসূচি, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, অসহযোগ আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার অব্যবহিত পরের দুই বছরের বাংলাদেশের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আঞ্চলিক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
    বইটিকে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল বলে আখ্যায়িত করে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, এটি কেবল ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ দেশের স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি। বইটিতে ইতিহাসের নতুন বিষয়ের ইঙ্গিত দেওয়া আছে, যা অনেক অনুসন্ধিৎসু গবেষককে নতুন গবেষণায় উদ্দীপ্ত করবে।

    ড. কামাল তাঁর বইতে ইতিহাসের যে সময়টাকে তুলে ধরেছেন, সে সময়ের রাজনীতির নানা গতি-প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। তাঁর বক্তব্যে অনিবার্যভাবেই উঠে এসেছিল স্বাধিকার ও স্বাধীনতা আন্দোলনের নানা সময়, একাত্তরের উত্তাল মার্চের কথা। তিনি বলেন, ‘সেই মার্চে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করত। নিজেরাই অংশ নিত সমস্ত কর্মকাণ্ডে। এখন সবাই হরতাল পালন করে ভয়ে, কোনো স্বতঃস্ফূর্ততা নেই।’  
    ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যেসব বিষয় নিয়ে কোনো বিতর্ক হওয়া উচিত নয়, সেসব বিষয় নিয়েই আমাদের দেশে বিতর্ক হয়। যেমন স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে অহেতুক তর্ক করা হয়। এটা নিয়ে কোনো দিন বিতর্ক হবে, তা ভাবিনি।’
    কামাল হোসেনের বক্তব্যে উঠে আসে সাম্প্রতিক রাজনীতির প্রসঙ্গও। অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রবীণ এ রাজনীতিক বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সঙ্গে কাজ করেছি, তাদেরকে ভোটও দিয়েছি।’
    বইটি প্রকাশ করা নিয়ে ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইনি সাহায্য বিষয়ের পরিচালক ফস্টিরা পেরেরা মনে করেন, এখনই বই প্রকাশের উপযুক্ত সময়। কেননা, নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইতিহাস নিয়ে যে বিভ্রান্তি আছে, এই বইটির পাঠ তা থেকে তাদের উত্তরণে সাহায্য করবে।
    অনুষ্ঠানে আরও আলোচনা করেন অধ্যাপক কে এম মহসিন, অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ, প্রকাশনা সংস্থা ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের মহিউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।