ডিসিদের প্রতি মাঠ প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি

    0
    220

    “ডিসিদের প্রতি মাঠ প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করার আহ্বান জানালেন রাষ্ট্রপতি আলহাজ্জ মো. আবদুল হামিদ”

    ডেস্ক নিউজঃ  রাষ্ট্রপতি আলহাজ্জ মো. আবদুল হামিদ সব বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের প্রতি মাঠ প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করার আহ্বান জানিয়ে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া বাদ দিয়ে জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

    বুধবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে দেশের সব বিভাগ ও জেলার প্রশাসনিক প্রধানদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া বাদ দিয়ে জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিন।’

    রাষ্ট্রপতি তাদের সত্যিকারের ‘জনসেবক’ হিসেবে দেশ ও জনগণের সেবা করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘জনগণ যাতে সরকারি সেবা নিতে গিয়ে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় তাও নিশ্চিত করতে হবে।’

    দুর্নীতি সমাজ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি ডিসিদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল পর্যায়ে জনগণকে সচেতন করে তোলার আহ্বান জানান।

    রাষ্ট্রপতি ডিসিদের তাদের কোনো কর্মকাণ্ডে সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে না পড়ে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দেন।

    উন্নয়ন ও প্রশাসনিক বিষয়ে নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং পরবর্তী এক বছরের জন্য কাজে অগ্রাধিকার ও দিক-নির্দেশনা প্রণয়নের লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের এ বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

    রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বাংলাদেশকে ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে মাঠপর্যায়ে প্রশাসকদের জঙ্গি তৎপরতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার নির্দেশ দেন।

    কৃষি, শিক্ষা, যোগাযোগ ও অবকাঠামো খাতে সরকারের বিভিন্ন মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জনগণের প্রতিটি টাকার যাতে সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।’

    রাষ্ট্রপতি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে পরিচালিত সরকারের সব কার্যক্রম বাস্তবায়নে ডিসিদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার জন্য জেলা প্রশাসকদের পরামর্শ দেন। তিনি গ্রামপর্যায়ে জনকল্যাণমুখী ও টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাইজড করতে জেলা প্রশাসকদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন।

    তিনি মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি কর্মকাণ্ডের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে জেলা প্রশাসকদের মেধা ও দক্ষতা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

    রাষ্ট্রপতি হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ২০৩০ সালের মধ্যেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সব অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে সরকারি কর্মকর্তাসহ দেশবাসীর ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করেন।

    রাষ্ট্রপতি ডিসিদের অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, পরিবেশ ও যুব উন্নয়নসহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইস্যুতে ডিসিদের বেশ কিছু দিক-নির্দেশনাও দেন।

    মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুজ্জামান, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোখলেসুর রহমান সরকার ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা করেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকবৃন্দ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।সূত্র:বাসস।