টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা। ‘যুদ্ধাপরাধীর বিচার এ দেশের মাটিতে হবেই’ : প্রধানমন্ত্রী

    0
    503
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি শিশুরাই আগামী দিনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে। এ জন্য জাতিসংঘ শিশু সনদ বাস্তবায়নের ১০ বছর আগেই বঙ্গবন্ধু শিশু আইন করেছিলেন। জাতির পিতার মতো প্রত্যেকটি শিশুকে ভোগ নয়, ত্যাগের আদর্শে জীবন গঠন করতে হবে।’
    বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু কিশোর দিবস উপলক্ষে আজ রোববার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
    সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় মন্ত্রী, সাংসদ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকাল ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে করে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান। সেখান থেকে সরাসরি তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে যান। তিনি প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে এবং পরে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করেন। মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।
    বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের মসজিদ চত্বরে শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত শিশু-কিশোর সমাবেশে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সুমহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তোমাদের মতো শিশুদের যারা হত্যা করেছিল, নারী ধর্ষণ করেছিল, বাড়িঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, সেসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার এ দেশের মাটিতে হবেই। আমরা জাতির কাছে ওয়াদা করেছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব, সেই প্রক্রিয়া চলছে।’
    প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
    এরপর প্রধানমন্ত্রী সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের পাবলিক প্লাজায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র আয়োজিত গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন। বেলা দুইটায় তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
    বঙ্গবন্ধুর কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন অসামান্য ও গৌরবের। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৮ সালের আইয়ুব খানের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনসহ পাকিস্তানি সামরিক শাসনবিরোধী সব আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু। সত্তরের নির্বাচনে বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার পক্ষে অকুণ্ঠ সমর্থন জানায়।
    ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ করে, বঙ্গবন্ধুকে তাঁর বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পর একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি বিজয় ছিনিয়ে আনে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সদ্যস্বাধীন স্বদেশভূমিতে ফিরে আসেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিজ বাসভবনে ক্ষমতালোভী ঘাতকদের হাতে সপরিবারে নিহত হন তিনি।
    বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটি ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় নানা আয়োজনে আজ দিনটি পালিত হচ্ছে। 
    PM at Tungipara
    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা