টি-২০ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত

    0
    241

    আমারসিলেট24ডটকম,২৯মার্চঃ টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর তৃতীয় ম্যাচে  গতকাল বাংলাদেশকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। সেই সাথে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত।

    অপরদিকে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশি টাইগার মুশফিকরা। চট্টগ্রামে বাছাই পর্বে হংকং-র বিপক্ষে হারের পর জয়ের মুখ দেখেনি বাংলাদেশ। গত কাল শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে হারের ফলে টানা তৃতীয় হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে স্বাগতিক টাইগাররা।

    দুই দলের টি২০ ইতিহাসে একবার সাক্ষাত ঘটেছিল এই বিশ্বকাপের আগে। ২০০৯ সালের টি২০ বিশ্বকাপে ভারত মুশফিকদের হারিয়ে ছিল ২৫ রানে। এবার নিয়ে দ্বিতীয় বার দেখা। দুই বারই ভারত জয়ী। আগামী ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় মিরপুরে গ্রুপের শেষ ম্যাচে অসিদের বিপক্ষে হেরে গেলেও ভারতের চিন্তা নেই। আর মুশফিকরা ঐ দিন বিকেলে মুখোমুখি হবে পাকিস্তানের।

    মুশফিকদের করা ১৩৮ রানের জবাবে ভারত যে খুব ভালভাবে শুরু করেছে তা নয়। কারণ ৩ ওভারে ১৩ রান জমা করা ভারতের ওপেনিং জুটি ভেঙে দেন পেসার আল আমিন। ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে ১ রানে সাঁজ ঘরের পথ দেখান আল আমিন বোল্ড করে। ৫ ওভারে ১ উইকেটে ২৯ রান। আর ৪৩ বলে আসে দলীয় ৫০ রান। ৮.৩ ওভারে স্কোর ১ উইকেটে ৫৮ রান। ৩৬ রানে থাকা রোহিত জিয়া বলে ক্যাচ তুললেন। কিন্তু দুই ফিল্ডার ধাক্কা খেয়ে বল মাটিতে। ক্যাচ মিস! দ্বিতীয় জুটি আর কোনো সুযোগ না দিয়ে ১০ ওভারে সংগ্রহ করে ৭৭ রান।

    ভারতের তখন ৬০ বলে ৬২ প্রয়োজন। ৯ উইকেট অক্ষত থাকা ভারতের জন্য জয়টা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। ১৪ ওভারে ১ উইকেটেই রান ১০৪। রোহিত শর্মা ৩৯ বলে ফিফটি হাঁকিয়েছেন। আর দলীয় ১১৩ রানে রোহিত ৫৬ রান করেই মাশরাফি বলে ক্যাচ দিলেন নাসিরের হাতে। ক্রিজে কোহলির সঙ্গী অধিনায়ক ধোনি। দ্বিতীয় উইকটে ১০০ রানই মূলত ম্যাচটা একতরফা করে ফেলে। ১৮.৩ ওভারে স্কোর ২ উইকেটে ১৪১। কোহলি ৫৭ রানে আর ধোনি ২২ রানে অপরাজিত।

    আফগানদের কাছে ৩২ রানে হংকং-র বিপক্ষে ২ উইকেটে হার আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৮ রানে অলআউটের পর বিসিবি সভাপতি বকাবকি করেছেন ক্রিকেটারদের। এতেই কিনা কে জানে শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট হাতে অন্য বাংলাদেশের চেহারা দেখা গেল শুরুতে। কিন্তু মিডল অর্ডারে সেই ভঙ্গুর দৃশ্যই ছিল পরিলক্ষিত হয়। আর শেষ দিকে নাসির-মাহমুদুল্লাহ ধন্যবাদ পেতে পারেন কিছু রান বাড়িয়ে দেয়াতে।

    ওপেনার তামিম ভুবনেশ্বর কুমারের বলে চার মেরে ইনিংস শুরু করলেন। সঙ্গী এনামুল হকও দেখেশুনেই খেলছেন। কিন্তু আর একটু হলেও তো তামিম আফসোস করতেন। কারণ এনামুল না ডাকলেও অশ্বিনের বলে ৬ রানে থাকা তামিম নন স্ট্রাইক থেকে দৌড় দিলেন। মাঝ ক্রিজে তামিম ফেরার উপায় নেই। কিন্ত ভাগ্য বলে কথা! ফিল্ডার শিখর দেওয়ান স্ট্যাম্পের কয়েক গজ দূর থেকেও বল লাগাতে পারলেন না! বেঁচে গেলেন তামিম।

    তামিম যেন ড্রেসিং রুমে ফেরত যেতে পাগল ছিলেন। তাই অশ্বিনের বলে বার বার ক্যাচ তুলে দিচ্ছিলেন। ২০ রান মাত্র দলের। মাত্র ইনিংস শুরু! তামিম কি বুঝলেন কে জানে! স্লিপে  রাইনার হাতে তালুবন্দি হলেন। এরপর যেন ঝড় বয়ে গেল ব্যাটিং লাইনে। ওয়ানডাউনে নামা শামসুর শূন্য রানে অশ্বিনের বলেই শর্মার হাতে ক্যাচ দিলেন। আর সাকিব তো কথাই নেই। আগের ম্যাচে শূন্য রানে বোল্ড হওয়া সাকিব এবার ১ রানে কুমারের বলে বোল্ড হলেন। কে কতো তাড়াতাড়ি ফিরবে এ যেন তারই প্রতিযোগিতা!

    ক্রিজে চতুর্থ উইকেটে ওপেনার এনামুল হক সঙ্গী হিসাবে পেলেন অধিনায়ক মুশফিককে। এই জুটি তখন ইনিংস মেরামতো চেষ্টায় ব্যস্ত। ১০ ওভারে দলীয় সংগ্রহ ৫৬/৩। এনামুল ২৮ আর মুশফিক ২০ রানে। মনে হচ্ছিল বড় একটি জুটি গড়ে উঠছে। কিন্তু মুশফিক (২৪) সামির বলে কোহলির হাতে ক্যাচ দিলে হতাশায় ছড়িয়ে পড়ে গ্যালারিতে। আগের ম্যাচে বাদ পড়া নাসির এলেন ক্রিজে।

    টপ অর্ডারে কি করে ব্যাটিং করতে হয় তাই শেখাছেন এনামুল। কিন্তু দুর্ভাগ্য এনামুলের। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা হল না। ২ ছয় আর ৫ চার দিয়ে ৩৮ বলে ৪৪ রানে মিশ্রার বলে বোল্ড! ১৩ ওভারে ৫ উইকেট পতন আর রান মাত্র ৮২! এরপর ১৫ ওভারে রান ৯০ আর নাসির ৪ রানে-মাহমুদুল্লাহ ৫। ৬ষ্ঠ জুটি যে এভাবে জ্বলে উঠবে জানা ছিল না। বিশেষ করে মাহমুদুল্লাহ অনেক দিন পর নিজেকে খুঁজে পেলেন। আর নাসিরও তাই। ৬ষ্ঠ উইকেটে ৪৯ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে যায় নাসির ১৬ রানে মিশ্রার বলে ধোনির হাতে স্ট্যাম্পিং হলে। দলীয় রান ১৩১, বল বাকি ৫টি। কিছুই করার ছিল না জিয়ার। বিগ হিট করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন। আর শেষ বলে মাশরাফি বিশাল ছয় স্কোরকে টেনে নেয় ৭ উইকেটে ১৩৮ রানে।