টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার ভারতকে হারাল বাংলাদেশ

    0
    502

    টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৭ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এটি টি-টুয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশে প্রথম জয়। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে ৮ বারের ভারতের মোকাবেলা করলেও একবারও জিততে পারেনি টাইগাররা।

    আজ (রোববার) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে বোলিং করে ভারতকে  ১৪৮ রানে আটকে দেয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। জবাবে মুশফিকুর রহিমের ব্যাটে ভর করে ১৯.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

    লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই লিটন দাস (৭) পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। লিটন দাসের উইকেট নেন দিপক চাহার। এরপর অভিষিক্ত নাইম শেখ আর সৌম্য সরকার মিলে দলের হাল ধরেন। এই দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান মিলে টাইগারদের প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন। দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৪৬ রানের জুটি। ইনিংসের ৮ম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৫৪ রানের মাথায় যুজবেন্দ্রা চাহালের প্রথম শিকার হয়ে ফিরে যান নাইম শেখ। আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ২৮ বলে ২৬ রান করেন নাইম।

    রোহিত শর্মার উইকেট উদযাপন করেন শফিউল ইসলাম

    নাইম শেখ আউট হয়ে যাওয়ার পর মুশফিকের সঙ্গে ৬০ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার। তবে ইনিংসের ১৭তম ওভারের শেষ বলে খলিল আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান সৌম্য। আউট হওয়ার আগে ৩৫ বলে ৩৯ রান করেন সৌম্য। এরপর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের পথে ধরে রাখেন মুশফিকুর রহিম। ইনিংসের ১৯তম ওভারে টাইগারদের প্রয়োজন তখনও ২২ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে রিয়াদকে। এরপরের বলে দৌড়ে প্রান্ত বদল করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। শেষ চার বলেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন মুশফিক। শেষ চার বলে খলিল আহমেদকে মারা চারটি বাউন্ডারিতে শেষ ওভারে টাইগারদের প্রয়োজন মাত্র ৪ রান।

    শেষ ওভারে বল করতে আসেন শিভম দুবে। মাহমুদুল্লাহ স্ট্রাইকে থেকে প্রথম বলটি ডট দেন, এরপরের বলে ডাবল নিলে টাইগারদের দরকার তখন চার বলে মাত্র ২ রান। পরের বলে ওয়াইড দিলে স্কোর লেভেল হয়ে যায় এবং ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে ওভার বাউন্ডারি মেরে দলকে জয় এনে দেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

    ৪৩ বলে অপরাজিত ৬০ রান করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মুশফিকুর রহিম

    এর আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ৯ রানে এলবির ফাঁদে পড়ে আউট হন ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মা। এরপর দলীয় ৩৬ রানের মাথায় আমিনুল ইসলামের বলে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ তুলে দেন ১৭ বলে ১৫ রান করা লোকেশ রাহুল। দলীয় ৭০ রানের মাথায় আবারও আঘাত হানেন লেগ স্পিনার আমিনুল। এবার ফিরিয়ে দেন শ্রেয়ার্স আইয়ারকে। ১৩ বলে এক চার আর দুই ছক্কায় ২২ রান করে মোহাম্মদ নাঈমের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

    ম্যাচের ১৫তম ওভারে রানআউট হন ওপেনার শিখর ধাওয়ান। বিদায়ের আগে এই ওপেনার ৪২ বলে করেন ৪১ রান। তার ইনিংসে ছিল তিনটি চার আর একটি ছক্কার মার। দলীয় ৯৫ রানের মাথায় ভারত চতুর্থ উইকেট হারায়। ১০২ রানের মাথায় বিদায় নেন অভিষিক্ত শিভাম দুবে (১)। আফিফ হোসেনের বলে তারই হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই অভিষিক্ত। ২৬ বলে ২৭ রান করা রিশব পান্থকে ফেরান শফিউল ইসলাম। ক্রুনাল পান্ডিয়া ৮ বলে ১৫ এবং ওয়াশিংটন সুন্দর ৫ বলে ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

    বাংলাদেশের হয়ে শফিউল ইসলাম ৪ ওভারে ৩৬ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ২ ওভারে ১৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। ৩ ওভারে আমিনুল ২২ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। সৌম্য সরকার ২ ওভারে ১৬, মোসাদ্দেক ১ ওভারে ৮, মাহমুদউল্লাহ ১ ওভারে ১০ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। আফিফ হোসেন ৩ ওভারে ১১ রান দিয়ে পান একটি উইকেট।

    ৪৩ বলে অপরাজিত ৬০ রান করে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পুরস্কার পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম।পার্সটুডে