টাইগারদের বিপক্ষে ধরাশায়ী হল আফগানী থাবা

    0
    217

    আমারসিলেট24ডটকম,১৬মার্চঃ সদ্যসমাপ্ত এশিয়া কাপে তারা বাংলাদেশকে হারিয়েছিল ৩২ রানে। এরপর থেকে আফগানিস্তানের স্বপ্ন জাগে, টি-২০ বিশ্বকাপে তারা আবার হারিয়ে দেবে বাংলাদেশকে। আর এর জন্য নিজেদের যোগ্যতা যে বাংলাদেশ দলের কোনো কোনো বিভাগের চেয়ে এগিয়ে, সংবাদ সম্মেলনে সেটা বলতেও দ্বিধা করেনি আফগানরা। তবে আজ  রোববার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টি-২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে  ধরাশায়ী হল আফগান থাবা।

    কি ব্যাটিং, কি বোলিং কিংবা ফিল্ডিং- সব ক্ষেত্রে তাদের পাড়ার ক্রিকেটারে নামিয়ে আনে  দেশি টাইগাররা। ফলে নিজেদের ইনিংসের তিন ওভার বাকি থাকতেই ১৭.৩ ওভারে অলআউট আফগানরা, রান ওঠে সাকল্যে ৭২। আবার বোলিংয়ের সময় তারা কোনো চাপেই ফেলতে পারেনি বাংলাদেশকে। ১২ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগাররা। এনামুলের ছক্কায় বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৭৮। বাংলাদেশ জিতে যায় ৯ উইকেটে।দুর্দান্ত এই জয়ের মধ্য দিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপে শুভ সূচনা হলো বাংলাদেশের।

    মূলত আফগান ব্যাটিংয়ের পরই বাংলাদেশের জয়ের সুবাস পাওয়া যেতে থাকে। তামিম ও এনামুলের উদ্বোধনী জুটি দলকে সেদিকে অনেকটাই এগিয়ে নেয়। তারা ৭.৪ ওভারে দলকে নিয়ে যায় ৪৫ রানে। এ সময় ব্যক্তিগত ২১ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম। এরপর এনামুলের সঙ্গী হন সাকিব। এই জুটি জয়ের জন্য বাকি কাজটা শেষ করেন অতি স্বচ্ছন্দে।বাংলাদেশের পক্ষে তামিম করেন ২১ রান (২৭), এনামুল ৪৪ (৩৩) ও সাকিব ১০ রান (১২)।বোলিং ও ব্যাটিং দুই বিভাগেই নৈপুণ্য দেখিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন সাকিব আল হাসান।

    এর আগে বেলা তিনটায় টসে জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক আফগানিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। মাশরাফি বোলিং উদ্বোধন করতে এসে  প্রথম বলেই আঘাত হানেন আফগান শিবিরে!  মাশরাফির বল মিড অফে তুলে মারলেন আফগান ওপেনার সেজাদ। বল গিয়ে জমা পড়ে ফিল্ডার মাহমুদুল্লাহর হাতে।  সেই  যে মড়ক শুরু, তারপর একে একে আফগানদের উইকেট শেষ হয়ে গেল ইনিংসের তিন ওভার বাকি থাকতেই, ১৭.১ ওভারে।

    আর তাতে বাংলাদেশকে আবার হারানোর আফগান স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় অনেকটা। এশিয়া কাপে তামিম-সাকিব-মাশরাফিহীন বাংলাদেশকে ৩২ রানে হারানো, আর এই তিন তারকাসহ বাংলাদেশকে মোকাবেলা করা কতটা  যে কঠিন, তা টি-২০ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে হারে হারে টের পেয়েছে ক্রিকেট জগতে নবীন দল আফগানিস্তান।

    প্রথম উইকেটের পতনের পর আফগানিস্তানের দ্বিতীয় জুটি পঞ্চম ওভার পর্যন্ত টিকে যায়। এর পরই সাকিব-ঝড়ে উড়ে যাওয়ার উপক্রম আফগানদের। ৫.১ ওভারে ওয়ান ডাউনে নামা গুলবদিন ১৭ রানের মাথায় সাকিবের ডেলিভারি বাতাসে ভাসিয়ে দিলেন। ফিল্ডার সাব্বির হাতে নিয়েও মিস করলেন। কিন্তু এর পরের বলে আবারও সাকিবের ডেলিভারি বাতাসে ভাসিয়ে দিলেন একই জায়গা দিয়ে। এবারও ফিল্ডার সাব্বির। তবে আর মিস হলো না। ৩৬ রানে ২ উইকেট। সাকিব পরের বলেই (৫.৩ ওভার) নাজিব তারাকাইকে (৭) নাসিরের ক্যাচ বানালেন। এ সময় সাকিবের সামনে হ্যাটট্রিকের হাতছানি। ক্রিজে এলেন নওরোজ মঙ্গল। তিনি কোনো রকমে ঠেকিয়ে গেলেন সাকিবের বল। তবে ব্যক্তিগত রানের খাতা খোলার আগেই তাকে সরাসরি থ্রোতে রান আউট করেন সাব্বির। ৩৬ রানে ৪ উইকেট! সাকিব ২ ওভারে ৬ রানে ২ উইকেট। আর মাশরাফি ১টি।

    স্পিনে রাজ্জাকই বা শিকার ধরতে পেছনে থাকবেন কেন! অধিনায়ক নবী এলেন ইনিংস মেরামত করতে। কিন্তু রাজ্জাকের ভেল্কিতে নবী এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফিরে যান ব্যক্তিগত ৩ রানে। ৯.৩ ওভারে ৪৯ রানে ৫ টপ ব্যাটসম্যান সাজঘরে!

    সপ্তম উইকেট জুটিতে শফিকউল্লাহ আর সামিউল্লাহ যখন ক্রিজে সেট হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তখনই আবার আঘাত হানেন রাজ্জাক। ১ রান করা সামিউল্লাহকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। আর ১৬ রান করা শফিকউল্লাহ ফিরে যান মুশফিকের গ্লাভসে জমা হয়ে মাহমুদুল্লার বলে।

    ৮ উইকেট পতন মাত্র ৬৯ রানে। শেষ দিকে ফরহাদ রেজা দলীয় ৭১ রানে দওলতকে ক্যাচ বানালেন। আর সাকিব সাপোর জাদরানকে (১) বোল্ড করলে ৭২ রানে অলআউট আফগানিস্তান।