জৈন্তাপুর বাঁশকল সরিয়ে নিতে ৭সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল

    0
    265

    রেজওয়ান করিম সাব্বিরঃ সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের মহাসড়কের চাংঙ্গীল নামক স্থানে উপজেলা নির্বাহী তত্ত্বাবধানে বাঁশকল বসিয়ে আমদানীকৃত(এলসি) পাথর থেকে চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদে গত ৮এপ্রিল জৈন্তাপুর ট্রাক চালক আঞ্চলিক কমিটির শ্রমিকরা বাসঁকলটি ভেঙ্গে ফেলে এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময় ট্রাক চালক শ্রমিকরা সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক হতে বাঁশকল ও নির্বাহীর অফিসার খালেদুর রহমানের অপসারনের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল করে।

    অপরদিকে ৮এপ্রিল হতে ১৩এপ্রিল পর্যন্ত ট্রাক অবরোধ করে কর্মবিরতী পালন করে। শ্রমিকদের ন্যায দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সাথে আন্দোলনে একাত্ত্বতা প্রকাশ করে আন্দোলনে যোগদেয় জৈন্তিয়া ট্রাক মালিক সমিতি, জাফলং ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়ন, জাফলং ট্রাক মালিক সমিতি, জৈন্তাপুর ষ্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতি, জাফলং ষ্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতি, তামাবিল কায়লা, পাথর ও চুনাপাথর আমদানী কারক গ্র“প এবং বৃহত্তর সিলেট জেলা ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়ন। অবরোধ চলাকালে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাথর নিতে আসা প্রায় ৮হাজার ট্রাকগাড়ী আটকা পড়ে।

    এদিকে ব্যবসায়ীদের এঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য আন্দোলনরত শ্রমিক সংগঠনের পক্ষে একটি প্রতিনিধি দল ৯ এপ্রিল বিভাগীয় কমিশনার জামাল উদ্দিনের সাথে দেখা করে বিষয় অবিহিত করে। বিভাগীয় কমিশনার শ্রমিকদের আন্দোলনের রহস্য অনুসন্ধানে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (জেনারেল) আল-আমিন কে প্রধান করে ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

    বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে ৯এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (জেনারেল) আল-আমিন এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাসান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ড.সুভাস চন্দ্র বসু সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাত ১২টায় জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের স্বাক্ষতৎকার গ্রহন করেন এবং শ্রমিকদের শান্ত থাকার আহবান জানান। পরবর্তীতে ১২এপ্রিল আন্দোলনরত শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি দল ২য় দফায় বিভাগীয় কমিশনারের সাথে দেখা করে।

    বিভাগীয় কমিশনার তদন্তের আলোকে বাঁশকলটি সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনারের সাথে আন্দোলনকারী সংগঠনের সভাপতি ও জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক লিয়াকত আলী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা সাংবাদিকদের জানান- বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসককে বাঁশকলটি খাঁস কালেকশনের উৎস মূখে হস্থান্তরের জন্য অবহিত করেছেন মর্মে জানান।

    বিভাগীয় কমিশনার পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ঘটনার মূলরহস্য অনুসন্ধানের জন্য ২য় দফায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (সিলেট) এ.জেড.এম নুরুল হককে প্রধান করে ৭সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি গত ২৭ এপ্রিল ০৫.৬৩.৯১৩০.০০২.২০১৩-১৫-২০ স্বারকে জেলা প্রশাসক বরাবরে শ্রীপুর পাথর কোয়ারীর রয়েলিটি আদায়ের সৃষ্ট জটিলতা নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।

    তদন্ত প্রতিবেদনের মতামত ও সুপারিশটি হলঃ ১। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে স্থাপিত বাঁশকলটি তুলে দিয়ে শ্রীপুর আদর্শগ্রাম ও রাংপানি এই তিনটি স্থানে মাহাসড়কের পার্শ্ববর্তী সংযোগ সড়কের পৃথক তিনটি বাঁশকল স্থাপন করে রয়েলিটি আদায় কার্যক্রম চলমান রাখা যেতে পারে।

    ২। সেক্ষেত্রে ইতিমধ্যে সংগ্রহিত কিছু পাথর বাঁশ কালেকশনের বাহিরে মজুদকৃত অবস্থায় রয়ে যাবে। স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের সহায়তায় এসব পাথর পরিমাপ করে পৃথক ভাবে রয়েলটি আদায়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।

    সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলনকারী শ্রমিক সংগঠনের পক্ষে সিলেট জেলা ট্রাক চালক শ্রমিক ইউনিয়নের জৈন্তাপুর আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আব্দুন নুর, সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, জাফলং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ উদ্দিন লিপু সহ অন্যান্যরা জানান জেলা প্রশাসক মহোদয় তদন্তের আলোকে প্রয়োজনীয় গ্রহন করবেন।

    তারা আরও বলেন- বাঁশকলটি খাঁস কালেকশনের উৎস মূখে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

    এবিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুর রহিম (০১৭১২-০৩৬৬৮১) জানান তিনি ট্রেনিংয়ে রয়েছেন। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে (০১৭৩০৩৩১০৩৭) একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।