জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট দোকান খুলেই চলছে তীর খেলা

    0
    289

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২০মে, রেজওয়ান করিম সাব্বিরঃ জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার দোকান ঘর ভাড়া নিয়েই চলছে ভারতীয় তীর খেলা। জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন এলাকায় ভারতীয় মরন নেশার খেলা ‘‘তীর খেলা’’। চিহিৃত মহল হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। তীর খেলাকে বেচেঁ নিয়ে ধবংশের পথে পা বাড়ীয়েছে রিস্কা, পাথর, বালু, ড্রাইভার, শ্রমিক ও প্রশাসনের কিছু সংখ্যাক কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল, কলেজের শিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তা সহ বেকার যুবকরা। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহ উপজেলা প্রশাসন নির্ভিকার।

    জানাযায় ২০ থেকে ২৫বছর পূর্বে ভারতীয় ধনকুবেরা (মড়য়ারীরা) এ রকম মরন খেলা আবিস্কার করে তাহারা এর নাম রাখে ভারতীয় আ লিক ভাষায় তীর খেলা। স্থানীয় ভাবে খেলাটিকে বলা হয় “টুকা খেলা, নাম্বার খেলা, বোটকা খেলা, ভাগ্য পরীক্ষা খেলা, ডিজিটাল নাম্বর খেলা নামে পরিচিত। খেলার নিয়ম হল ০-হতে ৯৯ পর্যন্ত ১শত টি নাম্বারের মধ্যে ১টি নাম্বার জনতার, বাকী ৯৯টি নম্বার আয়োজক বা মাড়য়ারীর। খেলার নিয়ম হল ১শতটি নম্বার থেকে ১টি নাম্বার লঠারীর মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। নাম্বার টির বিপরীতে যিনি টাকা বাজী ধরেছেন তিনি প্রতি ১টাকায় বিপরীতে ৭৫টাকা এবং এন্ডিং নাম্বরারের বিপরীতে ১টাকায় ৮৫টাকা জিতবেন। তীর খেলার শেষ সময় প্রতিদিন বিকাল ৪টায়, সপ্তাহে ৬দিন খেলাটি পরিচালিত হয়। ফলাফল ঘোষনা করা হয় প্রতিদিন বিকাল ৫টায়। খেলাটি ভারত সরকারের রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন সহ প্রতি রবিবার ছাড়া বাকী সকল দিবসে অনুষ্ঠিত হয়।
    জৈন্তা-গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় প্রতিদিন রিস্কা, পাথর, বালু, ড্রাইভার শ্রমিক ও প্রশাসনের কিছু সংখ্যাক কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্কুল, কলেজের শিক্ষক, এমন কি ব্যাংক কর্মকর্তা, যুবক, বৃদ্ধা ও মহিলাসহ হাজার হাজার লোক খেলায় অংশ গ্রহন করে। প্রতিদিন গড়ে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় প্রায় ৫কোটি টাকার উর্দ্বে তীর খেলা হয়ে থাকে। বিপরীতে পেমেন্ট দেওয়া হয় প্রায় ২০০-৩০০ টাকার যাহার প্রেমেন্ট মূল্য দাঁড়ায় (১৫,০০০-২২,৫০০) টাকা। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জৈন্তাপুর উপজেলার প্রশাসনের সম্মুখ সহ, উপজেলার রেষ্টেুরেন্ট, চা-দোকান, মা-মার্কেট, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, জাফলং গামী যাত্রীছাউনী, উপজেলার মা-মার্কেট (যেখানে তীর খেলার ৩টি দোকানগড়ে উঠেছে), জৈন্তাপুর স্কুলগেইট, যশপুর, কমলাবাড়ী, ফলবাগান গেইট, ৪নংবাংলাবাজার, শ্রীপুর, চাঙ্গীল, আসামপাড়া, গুচ্চগ্রাম, মাহুতহাটি, মাস্তিংহাটি, সারীঘাট, দরবস্ত, চতুল বাজার অপরদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলা নলজুরী, তামবিল, মামার দোকান, বল্লাঘাট, জাফলং বাজার, রাধানগর, সংগ্রাম পুঞ্জিসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাসমান অবস্থায় এই খেলার নম্বার ঠোকেন বিক্রয় হয়।
    এদিকে জৈন্তাপুর উপজেলা উল্লেখযোগ্য স্থান হচ্ছে- মা-মার্কেট, জৈন্তাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, জাফলং গামী যাত্রীছাউনী, মাস্তিংহাটি, মাহুতহাটি, জৈন্তাপুর থানার সম্মুখ। গোয়াইনঘাট উপজেলার তামাবিল, মামার দোকান, জাফলং বাজার ও বল্লাঘাট এলাকা। জৈন্তাপুর এলাকায় খেলাটি পরিচালনা করছেন সিলেট-তামাবিল বাস মালিক সমতির সদস্য মাস্তিংহাটি গ্রামের আব্দুছ সোবহান ড্রাইভার, একই গ্রামের রাসেল, হাশিম, জামাল, সোহেল, বিলাল, জুয়েল, মাহুতহাটি গ্রামের কয়েছ, রুমিন, মনির, আব্দুল মালিক, রেনু মিয়া, লায়েছ, রিপন, ফুলবাড়ী গ্রামের হানিফ, হোসেন, শাহ আলম। এদের সকলের মধ্যে গ্যাং লিডার হিসাবে তীর খেলাটি পরিচালনা করছেন দরবস্ত এলাকার জুলফিকর আলী উরফে লেফ মিয়া প্রমুখ। তিনি লেফ তোষক ব্যবসার আড়ালে অত্র উপজেলায় এই খেলাটি পরিচালনা করে আসছেন। অত্র উপজেলা তার মালিকানাধীন ৫০টি নাম্বার বই বিক্রয় হয়ে আসছে।
    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ শতাধিক ব্যক্তিরা জানান- নাম্বার বইয়ের মালিকরা হোটেলে বসে নিরাপদে খেলার নাম্বার কাটেন। তাদের লিডারদের কারনে কোন কিছু বলতে পারছেনা হোটেল মালিকরা। জৈন্তা-গোয়াইনঘাট এলাকাবাসীর দাবী ভারতীয় “তীর খেলা” লঠারির বিক্রেতাদের নিকট থেকে আইন প্রয়োগকারী দলের সদস্য, স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের উৎকোচের বিনিময়ে এলাকার প্রকাশ্যে তীর খেলার দোকান স্থাপন ও টোকেন বিক্রয়ের সুযোগ করে দিয়েছেন। অপরদিকে মরন খেলার হাত থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের বেশ কয়েকটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন, কিছু সংখ্যক সরকার ও বিরুদী দলীয় নেতাকর্মীরা খেলাটি বন্দ করার জন্য প্রতিহত করার ঘোষনা দেয়, পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য কামনা করে।