জৈন্তাপুরে পান-সুপারী ও জুম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে খাসিয়ারা

    0
    564

    পান জুম,বাগান ও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শংঙ্কা

    রেজওয়ান করিম সাব্বির,জৈন্তাপুর(সিলেট)প্রতিনিধি: সিলেটের জৈন্তাপুরে পান সুপারী চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে জৈন্তাপুরের খাসিয়া পরিবার। নিজেদের জীবন ও পান-সুপারী বাগান নিয়ে শংঙ্কা দিন দিন বেড়ই চলছে।
    সরেজমিন ঘুরে সিলেটরে জৈন্তাপুর উপজেলা নিজপাট ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের অন্তগত সীমান্তবর্তী ১২৯২-১২৯৩ আন্তর্জাতিক পিলার সংলগ্ন ভিতরগোল গ্রামের ১৩টি খাসিয়া পরিবার গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নিকট হতে প্রায় ৬৫ একর ভূমি বন্দোবস্ত নিয়ে প্রায় ২০ বৎসর যাবত নিবিড় পরিচর্ষার মাধ্যমে পান-সুপারী, কমলা, কাঠাল সহ বিভিন্ন সাইট্রাস ফলের বাগান সৃজন করে আসছে। সম্প্রতি বাগান গুলো এবং নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শংঙ্কাং রয়েছে নিরিহ পরিবার গুলো। বাগানের মালিক অনুক খাসিয়া এবং অবসর প্রাপ্ত লামনীগ্রাম আদর্শ মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রবিন শিক্ষক প্রদীপ নাইয়াং এর সাথে আলাপকালে তারা জানান- আমরা শান্তি প্রিয় জনসাধারণ কাহারো সাথে ঝগড়া বিবাদ বা ফ্যাসাদ করতে রাজী নই।

    সরকারের নিকট হতে পতিত পাহাড়ী টিলা রকমের ৬৫ একর ভূমি বন্দোবস্ত নিয়ে প্রায় ২০ বৎসর যাবৎ নিবিড় পরিচর্ষার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বাগান সৃজন করেছি। সম্প্রতি এসব বাগান হতে যে ফলন পাচ্ছি তাতে বিনোয়োগের অর্থ উত্তোলন করতে আরও অন্তত ১৫ বৎসর সময় লাগবে। নিজের পরিবার পরিজন নিয়ে কোন মতে দিনানিপাত করছি। সব সময় মনকে সান্তনা দেই এই ভেবে নিজেরও বাগান আছে। এই বাগানের উপর নির্ভর করে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন যাপন করতে পারব। সম্প্রতি আমাদের এই বাগান গুলো একটি মহলের নজর কাড়ে তারা বিভিন্ন ভাবে বাগান গুলো ধ্বংস করে আমাদের বিতাড়িত করতে চেষ্টা করছে।

    গেল বৎসরের অক্টোবর মাসে আমাদের স্বর্গীয় মলয় খাসিয়ার বাগানে দৃবৃত্তরা প্রবেশ করে প্রায় ৫ শতাধিক পান গাছ কেটে ফেল। তৎকালিন সময়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর হতে খাসিয়া পরিবার গুলো নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন দিন দিন জুম চাষের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। এহেন কারনে জৈন্তাপুর উপজেলা হতে ভারত, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার ও কিংবা দেশের অন্যান্য স্থানে চলে যাচ্ছে এই সম্প্রদায়ের লোকজনেরা। বর্তমানে তাদের সৃজিত বাগান হতে বিভিন্ন মৌসুমে দুবৃত্তরা সুপারী, কাঠাল, আনারস সহ গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীন দেশে এরকম হতে থাকলে শান্তি প্রিয় খাসিয়ারা বাগান সৃজনে দুরহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। বর্তমানে রোগ বালাইর সাথে যুদ্ধ করে যেখানে এক একটি বাগান সৃজিত হওয়ার পর দৃবৃত্ত্বদের থাবায় আমাদের সবকিছু ধংশ হয়ে যায়। তার কারনে খাসিয়রা দিন দিন জুম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে।

    জুম চাষে সরকারী সুযোগ সুবিধা, আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতা, নিরাপত্তার বিষয়টি ভাল ভাবে দেখা হলে অন্তত নিজের চাহিদা পুরনের পাশা-পাশি জৈন্তাপুরের জুম চাষ দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারবে এবং পতিত অনাবাদি জমিতে নতুন নতুন বাগান সৃজন হবে। তাদের এক একটি বাগানে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রায় ২০ হতে ২৫ জন করে শ্রমিক কর্মসংস্থান রয়েছে। তারা মাসে সর্বনিম্ন ১০-১৫ হাজার টাকা করে উপাজন সক্ষম হচ্ছে। তারা নিরাপত্তার বৃদ্ধি এবং বাগান রক্ষার জন্য সংশ্নিষ্ট বর্ডারগার্ড বাহিনী বিজিবি এবং পুলিশ বাহিনীর সহযোগতা কামনা করেন।