জৈন্তাপুরে পানি উন্নয়ন বেড়ীবাঁধ ও জায়গা দখল করে লিক তৈরী

    0
    226

    এলাকাবাসীর আবেদনে সাড়া দিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, আত্মংকের মধ্যে ২ ইউনিয়েনের ১০টি গ্রাম

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৫ফেব্রুয়ারী,জৈন্তাপুর প্রতিনিধিঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে “সারী-গোয়াইন” নামক প্রকল্পের বেড়ী বাঁধ দখল করে প্রভাবশালী চক্র লিক নির্মাণ করছে। এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করলেও সাড়া দিচ্ছে না। ফলে আগত বর্ষায় বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে ১৯৯৫ সনের দূর্ঘটনা মত ঘটনা ঘটবে বলে আশংঙ্কা করছে স্থানিয়রা।

    এলাকাবসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ফেরীঘাট এলাকায় সাবেক বিপর্যস্ত সারী-গোয়াইন নামক প্রকল্পের বেড়ী বাঁধ ঘুরে দেখাযায় একটি প্রভাবশালী চক্র স্থানীয় প্রভাবশালী নেতার ইশারায় পানি উন্নয়ন বেড়ী বাঁধ ও বড়গাং নদীর জেগে উঠা চর দখলের নিমিত্বে একটি লিক রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু এনিয়ে শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসী বাঁধা দিয়ে আসলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এলাকাবাসীর অনুরোধে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ প্রশাসনের লোকজন প্রথমে বাঁধা দিলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এনিয়ে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সকল দপ্তরে আবেদন করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। সরেজমিন পরিদর্শন কালে এলাকাবাসী নাছির উদ্দিন, মোবারক আলী, দেলোয়ার হোসেন, এবাদুর রহমান, আব্দুল মালেক, জাকির হোসেন সহ শতাধিক ব্যক্তি জানান- এই বাঁধ দেওয়ার ফলে নিজপাট ও জৈন্তাপুর ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার জনগোষ্টি নিরাপদে জীবন যাপন করছে। বিগত ১৯৯৫ সনের পাহাড়ী বন্যায় এই বাঁধের যে অংশে লিক রাস্তা তৈরী করা হচ্ছে সেখানে ভেঙ্গে গিয়ে প্রায় কয়েক কোটি টাকার গবাদি পশু, কৃষি জমি, ঘরবাড়ী বন্যার পানিতে ভেসে নিয়ে যায়। সম্প্রতি বন্যার সময় এলাকাবাসী রাত জেগে বাঁধটি পাহারা দিয়ে আসছে। গত বন্যায় এই স্থানে ভাঙ্গনের দেখা দিলে এলাকাবাসী বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষা করে।

    এলাকাবাসী তাদের অভিযোগে বলেন- অতি সম্প্রতি একটি প্রভাবশালী চক্র পানি উন্নয়ন বেড়ী বাঁধের পরিত্যাক্ত ভূমি ও বড়গাং নদীর জেগে উঠা চর দখলের লক্ষে এলাকাবাসীর বাঁধা উপেক্ষা করে একটি বাঁধ নির্মাণ করছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনসহ পানি উন্নয়ন বেড়ীবাঁধ এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে তারা এলাকাবাসীকে জানায় একটি দোকানগৃহ নির্মানের জন্য মাটি ভরাটের কাজ চলছে, কোন বেড়ীবাঁধ কিংবা রাস্তা নয়। এলাকাবাসীর দাবী পানি উন্নয়ন বিভাগ নিয়ম বহিভূক্ত ভাবে প্রভাবশালীদের অবৈধ অর্থের কাছে জিম্মি হয়ে এই রাস্তা নির্মাণ করে দুই ইউনিয়নের লামনীগ্রাম, ভিত্রিখেল, ববরবন্দ, লক্ষীপ্রসাদ, লক্ষীপ্রসাদ হাওর, ভিত্রিখেল কন্যাখাই, গোফরাজান, তেতইরতল, আগফৌদ, লামাবস্তি, বাউরভাগ কান্দি গ্রামের প্রায় ১৫হাজারের বেশি মানুষকে মৃত্যুর মুখে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বেড়ী বাঁধের নিয়েজিত কর্মী আব্দুস সত্তারকে বার বার বলার পরেও সে ঘটনাস্থলে না এসে বলেন আপনারা উপর মহলে যোগাযোগ করেন। এদিকে এলাকাবাসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও তিনি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেননি বলে অভিযোগ করেন বাঁধের ভিতরের বাসিন্ধারা।

    এবিষেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর আব্দুস ছাত্তার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন এখানে কোন রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে না। তারা দোকানগৃহ নির্মানের জন্য মাটি ভরাট করছে।

    এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ খালেদুর রহমান বলেন- এলাকাবাসী আমার বরাবর আবেদন করেছে, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট দরপ্তরকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ প্রদান করছি।

    এবিষয়ে পানি উন্নয়ন সিলেটে বিভাগের সাব এসিষ্ট্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জহিরুল সরকার জানান- বিষয়টি শুনেছি, যতদুর জানতে পারি দোকান গৃহ নির্মাণ করবে বলে এখানে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন বাঁধের পার্শ্বে কিংবা উপরে কোন কিছু নির্মানের অনুমতি নাই তার পরে এলাকাবাসীর কথা বিবেচনা করে আমরা কিছু বলি না। বাঁধ নির্মানের বা রাস্তা নির্মানের বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি শিঘ্রই সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।