জৈন্তাপুরে উদ্বোধনের আগেই ব্রীজের মূল পিলারে ফাটল !

    0
    321

    প্রতিমন্ত্রীর নিজ ইউনিয়নে চিকারখাল ব্রীজ এর গার্ড ওয়াল ও ভেসে গেছে পানিতে 

     

    জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধিঃ স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর(এলজিইডি) জৈন্তাপুর সিলেটের বাস্তবায়নে ২কোটি ৩৭লক্ষ টাকা ব্যয়ে আইআরআইডিপি-২ প্রকল্পের আওতায় মুক্তাপুর (জৈন্তাপুর ইউপি হেডকোয়ার্টার) ঢুলটিরপাড় ২নং লক্ষীপুর বাজার জিসি সড়কের ১৪৪০মিটার চেইনেজ চিকারখালের উপর ৫৪.০০ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করে ২০১৭ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। কিছু দিনের মধ্যে ব্রীজটি জনসাধারন চলাচলের জন্য উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। কিন্তু ব্রীজ উদ্বোধনের আগে বৃষ্টির পানিতে ব্রীজটির গার্ড ওয়াল ভেঁসে যায় এবং মূল ব্রীজের কয়েকটি ফাইলিং পিলারের ফাটল বের হয়ে আসে।

    জৈন্তাপুর উপজেলা সদরের সাথে সরসরি যোগাযোগের মাধ্যম তৈরীর লক্ষ্যে খারুবিল টু জৈন্তাপুর ইউনিয়ন ও জৈন্তাপুর বাজার সড়কের চিকার খাল নদীর উপর নব-নির্মিত চিকার খাল ব্রীজ চালুর আগেই পাইল (পিলার) ফাটল দেখা দিয়েছে। কাঁদা মিশ্রিত নিম্ন মানের বালু-পাথর এর সাথে সিমেন্ট ও নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার কারনে ব্রীজটি জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করার আগেই পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে।

    এলাকাবাসী শতাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপকালে যানাযায়- ব্রীজের ফাইলিং কাজ করার সময় স্থানীয় এলজিইডি সটিক তদারকী না করার এবং সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করাতে আজ এমনই ঘটনা ঘটেছে। পূর্বের ব্রীজটি নিচের পাইলিং না হওয়াতে ভেঙ্গে পড়েছিল। আমরা দীর্ঘদিন ব্রীজের জন্য নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছিল। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের ঐকান্ত্রিক চেষ্টায় আমরা ব্রীজটি পেয়েছিলাম কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জৈন্তাপুর সিলেটের খাম খেয়ালীপনার করনে আবারও ব্রীজটি নদীতে বিলিন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    সরজমিনে পরিদর্শন কালে উপস্থিত বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সাথে আলাপকালে তারা আর জানান নিয়ম অনুযায়ী স্থানীয় উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ঢালাই কাজের পূর্বে সার্বক্ষনিক উপস্থিতি থাকার কথা থাকলেও কাজ করার সময় কোন ইঞ্জিনিয়ারের উপস্থিতিতি তারা দেখতে পাইনি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের মর্জি মত ব্রীজের ফাইলিং ৮০ফিট এর স্থলে কোন কোন পিলারে ৩৫-৪০ ফুট গভীররে ফাইলিং করে ঢালাই এর কাজ সম্পন্ন করে। ঢালাই কাজে কাঁদা মিশ্রীত বালু, মি¤œ মানের পাথর ও মরা পাথর এবং সিঙ্গেল পাথর ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

    এলাকাবাসী বিষয়টি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার অফিসে একাধিক বার মোবাইল ফোনে জানালে বিষয় নিয়ে কোন কর্ণপাত করেনি স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর জৈন্তাপুর। বৃষ্টি শুরুতেই সৃষ্ট পানিতে ব্রীজটির গার্ড ওয়াল ধোঁয়ে নিয়ে যায় এবং মাটি সরে গিয়ে পাইলিং পিলারের ফাঁটল বেরিয়ে আসে। এলাকাবাসীর দাবী পূর্ণবর্ষা নামার পর ২কোটি ৩৭লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চিকারখাল ব্রীজ নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে।

    এলাকাবাসীরা দাবী মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয় দ্রুত সরজমিন পরিদর্শন করে তদন্ত পূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান। স্থানীয় এলাকাবাসী আরও জানান দীর্ঘ দিন কাজের সুবাধে জৈন্তাপুর অফিসের সহকারী প্রকৌশলী তারভীর আহমদ নানা দূর্নিতির কারনে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান তার উপর ন্যাস্থ থাকায় বিশেষ করে সটিক ভাবে তদারকি করতে পারেন না। সুযোগ কাজে লাগীয়ে সহকারী প্রকৌশলী তানবীর আহমদ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিনত হচ্ছে।

    এখানে উল্লেখ্য সারী নদীর উৎসমূখে শুক সারী নামে পর্যটন উন্নয়ন করর্পোরেশনের প্রায় ২০লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি জলঘাট উদ্বোধনের ছয় মাসের মাথায় ভেঙ্গে পড়ে। এনিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নয় ছয়ের মাধ্যমে পার পেয়ে যান। সম্প্রতি চিকারখাল ব্রীজের এমন অবস্থা দেখে সচেতন মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

    টিকাদারী প্রতিষ্ঠান “নূরুল হক এন্ড তৈয়বুর রহমান জেবি” মোবাইল ফোনে প্রতিবেদককে জানান- পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে প্রতিবেদককে জানান- স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জৈন্তাপুর নির্দেশনা মোতাবেক পুরো কাজ হয়েছে। পাইলিং কাজের সময় পশ্চিমপার্শ্বে কয়েকটি পিলার ৩৫হতে ৪০ফিটের মধ্যে ঢালাই কাজ করা হয়েছে।

    ফাইলিং যা গভীরে গিয়েছে ততটুকুর বিল আমাকে দেওয়া হবে। পূর্ব পাশের মেইন ব্রীজের ফাইলিং এর উপর মূল ব্রীজের ভারসাম্য রক্ষার জন্য ক্যাপ স্থাপনের স্থানে ফাটলের বিষয়টি শুনেছি। নদীতে পানি থাকায় আমি ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। এছাড়া ব্রীজেন অন্যান্য কাজ যথা নিয়মে হয়েছে।

    এবিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী তানভীর আহমদ বলেন- সঠিক নিয়মে কাজ হয়েছে। এবিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। পানির ¯্রােত বেশি হওয়ায় গার্ডার ভেঙ্গে যায় এটি ব্রীজের কোনরুপ ক্ষতি হবে না। এছাড়া ফাইলিং পিলার ফাটলের বিষয়ে স্যারের সাথে কখা বলেন।

    এবিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জৈন্তাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন- ৩০ থেকে ৩৫ ফুটের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন প্রতিটি ফাইলিং কাজ ৮০ফুট সম্পন্ন করে ঢালাই কাজ করা হয়েছে। ক্যাপে ফাটলের বিষয় তার জানা ছিল না। বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন এটি প্লাষ্টারিং করলে সমাধান হয়ে যাবে। তবে এবিষয়ে লেখা লেখি করে লাভ নেই।